Home / লাইফস্টাইল / জীবনকে সহজ করে নেওয়ার ১০টি উপায় জেনে নিন
lifestyle
ফাইল ছবি : চাঁদপুর টাইমস

জীবনকে সহজ করে নেওয়ার ১০টি উপায় জেনে নিন

আমরা মাঝে মধ্যেই জীবন নিয়ে হতাশায় পরে যাই। অল্প কাজে অথবা অতিরিক্ত চিন্তায় হাঁপিয়ে পরি। এই ক্লান্তি ও হতাশা আমাদের সব ধরনের উন্নতিতে বার বার বাধা দিতে চায়। অনেক সময় মনোবল কমিয়ে আনে। কিন্তু এসব নিয়ে চিন্তা করা ছাড়া কখনও কি আমরা ভেবেছি যে, কোন ভাবে এই সমস্যা গুলোকে কমিয়ে জীবনকে সহজ করে নেওয়ার কোন উপায় আছে কিনা? আসলে আমরা তা কখনো করিনা। আজ তাহলে কিছু বিশেষ উপায় জেনে নেওয়া যাক যা আমাদের জীবনকে সহজ করে নেওয়ার মানসিক শক্তি দান করবে।

১) শান্ত থাকুন যখন কেউ আপনার সাথে উচ্চ স্বরে কথা বলে

একসাথে আমরা প্রতিনিয়ত অনেকের সাথে ওঠা বসা করি, কাজ করি। এক্ষেত্রে আমাদের সব সময় সবার সাথে মনমানসিকতা নাও মিলতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে মনোমালিন্যও হতে পারে। আপনার রাগও আসতে পারে, যা অতি স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে গৌতম বুদ্ধের একটি উক্তি আমরা মাথায় রাখতে পারি,

“Holding on to anger is like grasping a hot coal with the intent of throwing it at someone else, you are the one who gets burned.”

অর্থাৎ আপনি রাগটা পুষে রাখলে সেই রাগ অন্যের অপর প্রকাশের মাধ্যমে আপনি যতটা না অন্যের ক্ষতি করবেন তার চেয়ে বেশি ক্ষতি আপনার নিজের হবে। কারণ রাগ হচ্ছে একধরনের মানসিক ব্যাধি। এটি সেই ব্যাধি যা হচ্ছে সিগারেট এর মত। এক দুই দিনে কিছু করবে না, কিন্তু ভেতরে ভেতরে আপনাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাবে।

কেউ যদি আপনার সাথে উচ্চস্বরে কথা বলে তখন তার কথার পাল্টা জবাব না দিয়ে নিজেকে সংযত রাখাটাই হচ্ছে আপনার ধৈর্যের প্রমাণ। এটি এক ধরনের মানসিক যুদ্ধ যা আপনাকে অন্যের তার্কিক আক্রমণ থেকে রক্ষা করবে। সেই সাথে আপনার মানসিক শান্তি রক্ষা করবে।

কারো সাথে তর্কে যাওয়ার আগে আমরা এটা মাথায় রাখতে পারি যে, আমাদে কাছে ২টি উপায় আছে, একটি হল তর্কে যোগ দেওয়া বা নিজের রাগকে বাড়ার সুযোগ দেওয়া যেটি ইতোমধ্যেই অনেক উত্তপ্ত অবস্থায় আছে অথবা দ্বিতীয়টি হচ্ছে এই অস্থায়ী ঝামেলাকে বাদ দেওয়া। আপনার কাছে যখন দুটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ রয়েছে তাহলে আপনি কেনই বা অন্যের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে সেই সুযোগটিকে হারাবেন।

তাহলে এই সঠিক সিদ্ধান্তটা বা শান্ত থাকলে আপনি সহজেই একটি ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকতে পারেন।

২) আপনার চিন্তা গুলো লিখে রাখুন যখন আপনি অনেক চিন্তিত বা উদ্বিগ্ন

আমাদের প্রত্যেকেরই কিছু পরিকল্পনা থাকে। দিনের শুরুর পরিকল্পনা থেকে অনেক সময় জীবনের শেষ পর্যন্ত কি করব এমন বৃহৎ পরিকল্পনাও থাকে। কিন্তু এ পরিকল্পনা তো আর একদিনে হয়ে ওঠে না। অনেকদিনের চিন্তা, কল্পনা, অভিজ্ঞতা থেকে মানুষ দীর্ঘমেয়াদী বৃহৎ পরিকল্পনা করে। এই কল্পনা শুধু নিজের থেকে নাও আসতে পারে। অনেক সময় আমরা অন্যের দেখেও অনেক কিছু শিখি, তাদের জীবন থেকে শিক্ষা নিয়েও অনেক সিদ্ধান্ত নেই।

কখনো কখনো দেখা যায় যে আমরা কোন বিষয় নিয়ে অনেক চিন্তিত, অনেক ভাবছি। এতে করে দেখা যায় একই বিষয় বার বার ভাবতে ভাবতে বা অন্যান্য বিষয় নিয়ে ভাবতে ভাবতে আমাদের মাথা থেকে অনেক গুরুত্ত্বপূর্ণ বিষয় বের হয়ে যায়। উদ্বিগ্ন সময়ে আমরা অনেক গুরুত্ত্বপূর্ণ কিছু খেয়াল করতে পারি যা পরে মনে নাও থাকতে পারে।

এক্ষেত্রে আমাদের সর্বপ্রথম যা করা দরকার তা হল লিখে রাখা। আমাদের ছোট বড় যে কোন ধরনের কল্পনাই আমাদের লিখে রাখা দরকার। কারণ এটি আমাদের কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে সাহায্য করে। আমাদের কি কি করতে হবে আমাদের বার বার মনে করায় দেয়।

সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়ার ডোমিনিকান ইউনিভারসিটি একটি প্রতিবেদনে দেখিয়েছে যে, তারা যারা তাদের লক্ষ্য ও স্বপ্ন লিখে রাখে তাদের সফলতার হার যারা লিখে রাখে না তাদের চেয়ে ৪২% বেশি!

এজন্য আমাদের লক্ষ্যসহ যে কেনো কিছু যে কোন সময়ে চিন্তা করা কোন গুরুত্ত্বপূর্ণ বিষয় আমাদের সাথে সাথেই লিখে রাখার অভ্যাস করা দরকার। এটি আমাদের জীবনের লক্ষ্যকে আরো পরিকল্পিত করে তুলবে।

৩) তার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলুন যদি মনে হয় সে আপনাকে মিথ্যা বলছে

আজকালকার সময়ে মানুষ বিভিন্ন কারণে অকারণে মিথ্যার আশ্রয় নেয়। নিজের স্বার্থ অর্জনের জন্যে বা অন্য যেকোন কারণে মানুষ মিথ্যা বলে। এই মিথ্যার শিকার আমরা যে কেউই হতে পারি। কর্মক্ষেত্রে বা স্কুল কলেজে যাদের সাথে আমাদের ওঠা বসা বা কাজকর্ম তারা যে সব সময়ই আমাদের সাথে সত্য কথা বলবে এমন নাও হতে পারে, নিজেদের স্বার্থের কারণে আমাদের সাথে প্রতারণা করার চেষ্টা করতে পারে। এতে আমাদের মাঝে অনেক ক্ষেত্রেই সন্দেহ থেকে যায়। যাদের নিয়ে আমাদের ওঠা বসা তাদের নিয়ে সন্দেহ থাকলে জীবন অনেকটা কঠিনই হয়ে দাঁড়ায়।

এক্ষেত্রে আমাদের যদি কাউকে নিয়ে সন্দেহ হয়েও থাকে, তাহলে তা আমরা পরীক্ষা করে দেখতে পারি।
যাকে নিয়ে সন্দেহ কথা বলার সময় তার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বললে তার কথার সত্যতা ধরা যায়। একজন মিথ্যাবাদীর চোখই তার সত্যতার প্রমাণ। এতে করে আমরাও সাবধান হয়ে যেতে পারি। আমাদের জীবনের জটিলতা কমিয়ে আনতে পারি।

৪) সবার নাম মনে রাখুন যদি আপনি সকলের মাঝে জনপ্রিয় হতে চান

জনপ্রিয়তা একই সাথে এমন একটি দৃশ্যমান বা অদৃশ্যমান বিষয় যা কম বেশি আমরা সবাই চাই। আমাদের অনেকের মাঝেই নেতৃত্ব দেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। আর নেতৃত্ব দেওয়ার জন্যে গুরুত্ত্বপূর্ণ বিষয় হল জনপ্রিয়তা। কর্মক্ষেত্রে বা অন্য যে কোন জায়গায় মানু্ষের দৃষ্টি কেউ তখনই আকর্ষণ করতে পারবে যখন সে তাকে তার নিজের নাম ধরে ডাকবে। এতে করে সেই মানুষটির আপনার প্রতি আগ্রহ জন্মাবে। সে আপনাকে আপনার কাজে সহযোগিতা করবে। আপনাকে শ্রদ্ধা করবে। এভাবে যদি আপনি সবার সাথে চলতে পারেন তাহলে সবার মাঝেই আপনি জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারেন।

একজন মানুষ সাধারণত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে তার ব্যক্তিত্বের কারণে। এই সুন্দর ব্যক্তিত্বের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল যাদের সাথে কাজ করেন তাদের নাম মনে রাখা। এতে নাম মনে রাখলে তারা আপনাকে গুরুত্ত্বপূর্ণ ও পরিচিত ভেবেই কাজ করবে।

তাহলে আপনার জনপ্রিয়তা বাড়ার সাথে সাথে আপনার অন্যের সাথে যোগাযোগের ক্ষমতাও বাড়বে। সকলের সাথে সম্পর্ক সহজ রাখার এটি একটি সহজ উপায়।

৫) আক্রমণকারীর পাশে গিয়ে বসুন যদি তার সাথে সংঘর্ষ এড়াতে চান

ঝগড়া-বিবাদ-মনোমালিন্য এইসব প্রতিনিয়ত লেগেই আছে আমাদের কারো না কারো সাথে যদিও বা আমরা চাই সবার সাথেই সুসম্পর্ক বজায় রাখতে। কিন্তু এক্ষেত্রে কখনো যদি এর ব্যতিক্রম হয়ে যায় তখন আমাদের কি করা উচিত? ব্যাপারটা কখনো ঠিকমত নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে সেটি আমাদের দিনটি সহ জীবনযাত্রাও কঠিন করতে পারে।

কখনো যদি আমাদের এমন মনে হয় যে পরিস্থিতি আমাদের নাগালের বাহিরে চলে যাচ্ছে বা বিবাদটা বেড়ে যাচ্ছে তখন আপনি ঝামেলা বাড়াতে না চাইলে সেই ব্যাক্তির পাশে গিয়ে বসতে পারেন যার সাথে আপনার ঝামেলা হচ্ছে। এতে সেই সময় সেই ব্যক্তির মানসিক পরিস্থিতির পরিবর্তন আসতে পারে। তার রাগ বা ক্ষোভ কমাতে এটি অনেক সহায়ক হবে। এতটুকু সে বুঝতে পারবে যে আপনি তার সাথে বিবাদে যেতে চাচ্ছেন না বা সমোঝোতা চাচ্ছেন। আপনার এই একটি পদক্ষেপই আপনার সম্পূর্ণ পরিস্থিতি পরিবর্তন করে আপনার মনকে নরম করে ফেলতে পারে। আপনাদের মাঝে সম্পর্ক ভাল করার সুযোগও আপনি পেতে পারেন।

কিন্তু আপনি যদি এভাবে সমোঝোতায় না গিয়ে পাল্টা কিছু করেন এতে করে আপনাকে নিয়েই বাজে ধারণা হবে এবং পরিস্থিতিও খারাপ হয়ে যাবে।

৬) কিছু কিছু বিকল্প সিদ্ধান্ত চিন্তায় রাখুন যখন আপনার সঠিক সমাধান জানা নেই

আমাদের জীবন কখন কোন দিকে যাবে এটা অনেকটাই নির্ভর করে আমরা কি সিদ্ধান্ত নিচ্ছি তার ওপর। জীবনের জন্যে বড় বড় সিদ্ধান্তের পাশাপাশি আমাদের ছোট ছোট বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কখনো কখনো সেই সিদ্ধান্ত নিতে হয় আমাদের পরিস্থিতি অনুযায়ী।

সব সময় পরিস্থিতি আমাদের হাতের মধ্যে থাকে না, আবার এমন কাজ হাতে পরে যায় বা বিপদে পরে যাই যে সেগুলোর সঠিক সমাধান আমাদের আন্দাজ করতে বা বুঝতে সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।

এমন ক্ষেত্রে আমরা কি করতে পারি? আমাদের সব সময়ই পরিস্থিতি আর আমাদের সুবিধা অনুযায়ী আমাদের কিছু বিকল্প ভেবে রাখতে হবে। প্রকৃত বিচক্ষণ তারাই যারা তাদের প্রতিটি পরিস্থিতি ও সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারে এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এতে আমাদের অনেক সময় ভুল সিদ্ধান্তের কারণে আমাদের সময়ও বেশি নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু বিকল্প কিছু মাথায় থাকলে আমাদের সেই সময়টুকু বেঁচে যায়। ব্যাপারটাকে আমরা ” Think twice & do wise ” এভাবে দেখতে পারি। এভাবে ভেবে রাখলে আমাদের জীবনে জটিলতার সম্ভবনা কম থাকবে।

৭) স্থান অনুযায়ী সঠিক ভঙ্গি জরুরী, এতে আপনার আত্নবিশ্বাস অনেক বেড়ে যাবে

একজন মানুষের পরিচয়, ব্যবহার, স্মার্টনেস এইসব কিছু অনুধাবন করতে শুরু করে মানুষ সেই মানুষের অঙ্গভঙ্গি দেখে। বিশেষ করে বিভিন্ন অফিসিয়াল ক্ষেত্রে, শিক্ষাসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় নিজেদের সুন্দর করে উপস্থাপন করার প্রয়োজন পরে।

এইসব জায়গায় প্রতিটি মানুষই চায় নিজেদেরকে অন্যদের কাছে পরিপাটি, আকর্ষণীয়, স্মার্ট ভাবে উপস্থাপন করতে। আর আমরা যদি সেইভাবে নিজেদের উপস্থাপন করতে পারি তাহলে অন্যদের কাছে তো বটেই সেই সাথে নিজের কাছেও নিজের আত্নবিশ্বাস বেড়ে যায়। কাজটি তখন আমরা আরো পরিপক্কতা, দক্ষতা ও আত্নবিশ্বাসের সাথে করতে পারি। আর এই অভিজ্ঞতা আমরা পরবর্তীতে নিজেদেরকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে সাহায্য করে। ব্যাপারটিকে একটা উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যায়, আপনাকে যদি কোন প্রেজেন্টেশন বা উপস্থাপনা করতে দেওয়া হয় তাহলে আপনি প্রথমবার যদি নিজেকে ঠিকভাবে উপস্থাপন করতে না পারেন তাহলে আপনার সব জানা থাকলেও আপনার আত্নবিশ্বাস কমে যাবে।

কিন্তু আপনি যদি উপস্থাপনার শুরুতেই আপনার অঙ্গভঙ্গি ঠিক রাখেন আপনার মাথায় থাকবে যে আপনি ঠিকভাবে আগাচ্ছেন। এতে আপনার পরবর্তী ধাপ সঠিকভাবে সম্পূর্ণ করতেও আমাদের আর ভয় লাগবে না, আত্নবিশ্বাস বেড়ে যাবে।

৮) কিছু মানুষ তৈরি করুন যারা আপনার প্রয়োজনে সাহায্যে এগিয়ে আসবে সব সময়

“There is no man but can live without the help of others.”

– এই উক্তিটি জানে না, এমন কেউ আমাদের মাঝে নেই। ছোট থেকে শুনে আসা এ উক্তিটি যদি আমরা যথার্থভাবে বুঝতে পারি তাহলে তা আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ জীবনের গুরুত্ত্বপূর্ণ একটি মৌলিক সূত্রকে তৈরী করতে সাহায্য করবে।

আমাদের জীবনে বন্ধু বা এমন সম্পর্কের কারো প্রয়োজন অনেক, যারা রক্তের সম্পর্কের বাহিরেও সব সময় আমাদের পাশে এসে দাঁড়াবে, সাহায্য করবে। হ্যাঁ অনেকের হয়তোবা অনেক বন্ধুই রয়েছেন কিন্তু এমন কয়জনই বা আছে যারা নিঃস্বার্থভাবে যে কোন সময়ে আপনার সাহায্যে এগিয়ে আসবে? বাস্তব জীবনে আমাদের এমন কাউকেই বেশি প্রয়োজন পরে। হাজার হাজার বন্ধু বানিয়ে তারা যদি প্রয়োজনে আপনার পাশে এসে দাঁড়ানোর সাহস না দেখাতে পারে তাহলে সেই সম্পর্কই ব্যর্থ। কিন্তু আপনি যদি একজনই প্রকৃত বন্ধু খুঁজে নিতে পারেন তাহলে আপনার সেই বন্ধুই আপনাকে বার বার বিপদ থেকে উদ্ধার করতে চলে আসবে আর বিনিময়ে আপনাকে কিছুই করতে হবে না। বন্ধুর সাথে ব্যাপারটা যেন কখনো,

“A friend in need & a friend in deed.” -এমন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখলে এই মানুষগুলোও আপনার জীবন সহজ রাখতে সাহায্য করবে।

৯) কারো সাথে প্রথম দেখায় তার সম্পর্কিত কিছু মনে রাখুন এতে তার সাথে বন্ধুত্ব সহায়ক হবে

নিত্যদিনের প্রয়োজনে একজন সত্যিকারের বন্ধু বানাতে আমরা সবাই চাই। এখন আমাদের মধ্যে অনেকেই বেশি খোলামেলা, সহজে সকলের সাথে মিশতে পারে না। তাদের মধ্যে জড়তা থাকে। এক্ষেত্রে আমরা বন্ধু বানাতে চাইলেও কিভাবে বানাতে পারি?

কাউকে বন্ধু বানাতে চাইলে প্রথম দেখায় সে আপনার ভাল বন্ধু এমনকি বন্ধুই না হতে পারে। তাই আপনার যখন তার সাথে প্রথম দেখা হবে তখন তার বিষয়ে কোন গুরুত্ববপূর্ণ বা মজার বিষয় বা এমন কিছু যা আপনার ভাল লেগেছিল তা মনে রাখবেন। পরবর্তীতে যদি সে বুঝতে পারে বা খেয়াল রাখে যে আপনার তার এই ব্যাপারগুলো মনে আছে, এটি তার ভাল লাগবে। সেও তখন তার দিক থেকে একধাপ এগিয়ে আসবে। এমনকি এমন কিছু যা আপনাদের মধ্যে মিল রয়েছে তাও আপনি তাকে জানাতে পারেন।

“Friendship is born at that moment when one person says to another: “What! You too? I thought I was the only one.” – C.S. Lewis

আসলে সত্যি কথা তাই যে, বন্ধুত্ব শুরু তখনই যখন আপনি ঠিক আপনার মনের মত আরেকজনকে খুঁজে পাবেন। এই বিষয়গুলোও আপনি তার সামনে তুলে ধরতে পারেন বা নিজেই মনে রাখতে পারেন।

১০) কিছু মানুষের সাথে অপ্রয়োজনেও যোগাযোগ রাখবেন, তাদের কাছে আপনার মূল্যায়ন অনেক বেশি

আজকাল আমরা একটা জিনিস খুব ভালভাবেই মানিয়ে চলি আর তা হল ” নেটওয়ার্কিং “। হ্যাঁ সময়ের প্রয়োজনের সাথে সাথে আমাদেরও নিজস্ব দক্ষতা বাড়াতে অন্যদের সাথে যোগাযোগ রাখতে হয়। আমরা সকলেই এমনটা করি কেননা তারা আমাদের প্রয়োজনের আসেন।

কিন্তু কিছু মানুষ আছেন আমাদের জীবনে যাদের সাথে হয়তোবা আমাদের সরাসরি গুরুত্বপূর্ণ কোন প্রয়োজন থাকে না। তাই হয়তোবা সময়ের ব্যস্ততার কারণে আমাদের তাদের সাথে যোগাযোগই থাকে না। কিন্তু সেই মানুষদের আমাদের কখনওই ভুলে যাওয়া উচিত না যারা প্রয়োজন ছাড়াও আমাদের মনে রাখে, আমাদের না ডাকা সত্ত্বেও আমাদের পাশে থাকে, যাদের কাছে সব সময়ই আমাদের উপস্থিতির মূল্য থাকে। এই মানুষগুলো সব সময় বিপদে- আপদে, আপনার সুখে-দুখে আপনার পাশে থাকবে। আর এই মানুষগুলো হতে পারে যে কেউই। হতে পারে আপনার কাছের বন্ধু, আবার হতে পারে এমন কেউ যাকে আপনি কোন এককালে সাহায্য করেছেন যার বিনিময়ে তার কাছে আপনার মূল্যবোধ বেড়ে গিয়েছে।

দিন শেষে, ব্যস্ততার আড়ালে এই মানুষগুলোই আপনার পাশে থাকে আর এরাই আপনার জীবনযাপন সহজভাবে করতে সাহায্য করে।

সত্যিকার অর্থে দৈনন্দিন জীবনে এমন কোন বস্তুময় জিনিস নাই যা আপনাদের আমাদের জীবনকে সহজ করে দিতে পারে। জীবন এমনই। ছোট বড় বন্ধুর পথে ঘেরা। এই জীবনকে সহজ করতে সত্যিকার অর্থে আপনার যা দরকাদ তা হল শক্তি। আপনার মানসিক শক্তি। আপনার বোধগম্যতা, কোন কিছুকে মানিয়ে ও চালিয়ে নেওয়ার দিক এবং আপনার দৃষ্টিভঙ্গি। উপরোক্ত কিছু বিষয় খেয়াল রাখলে সেগুলো আপনার মানসিক শক্তি বজায় রাখতে সাহায্য করবে।

Leave a Reply