Home / তথ্য প্রযুক্তি / জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নজরদারিতে ফেসবুক ইউটিউব টুইটার
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নজরদারিতে ফেসবুক ইউটিউব টুইটার

জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নজরদারিতে ফেসবুক ইউটিউব টুইটার

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, ভিডিও শেয়ারিং পোর্টাল ইউটিউব, মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারসহ বিভিন্ন ধরনের ব্লগ ও ওয়েবসাইট মনিটরিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কেনা হচ্ছে সাইবার সিকিউরিটি টুলস। ফেসবুকের কাছ থেকেও পাওয়া গেছে ইতিবাচক সাড়া। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, কেউ যাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে বিতর্কিত পোস্ট, ঘৃণাসূচক বক্তব্য প্রচার ও কদর্য ভিডিওবার্তা প্রচার করে সামাজিক অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে না পারে সেজন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে টুইটারে মিথ্যা ক্ষুদ্র-ব্লগ লিখে সরকারবিরোধী অপপ্রচার যাতে কেউ চালাতে না পারে সেদিকেও নজরদারি করা হবে। এছাড়া বিভিন্ন ব্লগ ও এ ধরনের ওয়েবসাইট যাতে কেউ কোনও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালাতে না পারে, বিনা কারণে উস্কানি দিতে না পারে; সেগুলোও মনিটরের আওতায় আসবে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রার্থীরা এবার অনেকেই নির্বাচনি প্রচার মাধ্যম হিসেবে সামাজিকে যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করবেন। অনলাইনে নিজের ও দলের ইতিবাচক প্রচারণা চালাবেন। সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা- এই সুযোগটাই কাজে লাগাতে পারে অনিষ্টকারীরা। তারা সরকার ও প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বাজে পোস্ট দিতে পারে, কুৎসা রটাতে পারে; যা ভোটারদের কাছে দলের ও প্রার্থীর ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পারে। সরকারের উন্নয়নের তথ্যর বদলে বিকৃত তথ্য প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তিও তৈরি করার চেষ্টা করা হতে পারে। এসব বিষয় সামনে রেখে সরকার এবার সতর্ক পদক্ষেপ নিয়েছে। ফলে মনিটরিংয়ের বিষয়টি সামনে আসছে।

এ বিষয়ে সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘এবার এই ধরনের উদ্যোগ নিতেই হতো। কারণ অনলাইন দুনিয়াকে খারাপভাবে ব্যবহারের নজির রয়েছে। আমরা সেই ঝুঁকি নিতে চাই না।’ এরইমধ্যে ফেসবুকের অপব্যবহার শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও জানান, ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে। এখন চাইলেই ফেসবুক থেকে তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য পাওয়া সম্ভব। ফেসবুক আগের যেকোনও সময়ের চেয়ে দ্রুত সহযোগিতার হাত বাড়াতে প্রস্তুত।

জানা যায়, মন্ত্রী গত ফেব্রুয়ারি মাসে স্পেনের বার্সেলোনায় অনুষ্ঠিত মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সম্প্রতি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে এসে মন্ত্রীর সঙ্গেও বৈঠক করে। সেই বৈঠকের সুফল সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘আগে ফেসবুকের কাছে তথ্য চাইলে অনেক সময় লাগতো সেই তথ্য দিতে। অনেক সময় দিতো না। এখন যেটা হয়েছে, আমরা তথ্য চাইলে সঙ্গে সঙ্গে সেই তথ্য ফেসবুক দেবে। আসল কথা হলো, ফেসবুকের সঙ্গে ন্যূনতম কমিউনিকেশনটা আছে।’

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানান, দেশে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে ফোকাল পয়েন্ট নির্বাচন করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আইসিটি বিভাগ, বিটিআরসিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান। সেই ফোকাল পয়েন্ট ফেসবুকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য ও সাড়া পাওয়া সম্ভব।

জানা গেছে, ফেসবুক বাংলাদেশকে কিছু প্রস্তাবনা পাঠিয়ে জানিয়েছে- তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে চায়। এর একটা হলো ব্লাড ডোনেশন বা রক্তদান কর্মসূচি। এরকম আরও কিছু কাজ ফেসবুক বাংলাদেশের সঙ্গে করবে।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘এটা নির্বাচনের বছর। আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জের সময়। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, অপপ্রচার যাতে ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়াতে না পারে সেই বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগের এই মাধ্যমটি আমাদের সহযোগিতা করবে। আমরা কোনও মিথ্যা তথ্য সরাতে বললে তারা সরিয়ে দেবে, অপকর্মে জড়িত আইডি ব্লক করা, আইপি চিহ্নিত করার মতো পদক্ষেপগুলো এখন তাৎক্ষণিকভাবে নেওয়া সম্ভব হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘‘ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছেন, তোমরা ‘ইন্সট্যান্টলি’ কিছু সরাতে বললে আমরা তা ‘ইন্সট্যান্টলি’ সরিয়ে দেব। আগে ফেসবুকের সঙ্গে যোগাযোগটাই ছিল না। এখন এটা নিশ্চিত করা গেছে।’’

মন্ত্রী বলেন, ‘এছাড়া আমরা সাইবার নিরাপত্তার জন্য কিছু সিকিউরিটি টুলস সংগ্রহ করছি। এগুলো দিয়ে ইউটিউব, টুইটারসহ আরও যা কিছু আছে তা মনিটর করা হবে। কেউ যাতে এসব মাধ্যম দিয়ে অনিষ্ট করতে না পারে তা চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে এই টুলস। অনলাইনে মাঝে মাঝে উসকানিমূলক কিছু তথ্য ছড়ানো হয়, ব্লগ লেখা হয়। এবার সাইবার সিকিউরিটি টুলস দিয়ে এসব নজরদারি করা হবে।’

Leave a Reply