Home / সারাদেশ / ধানে জাতীয় পতাকা, শাক দিয়ে মানচিত্র ও স্মৃতিসৌধ
পতাকা

ধানে জাতীয় পতাকা, শাক দিয়ে মানচিত্র ও স্মৃতিসৌধ

কৃষি বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হলেও তাঁদের রয়েছে শিল্পীর মন ও নিখাদ দেশপ্রেম। তাই স্বাধীনতার মাসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রদর্শনী প্লটে তাঁরা ধানের গাছ দিয়ে জাতীয় পতাকা আর সবজি দিয়ে এঁকেছেন মানচিত্র ও স্মৃতিসৌধ। তাঁদের সহায়তা করেছেন শিক্ষকেরাও। ফসলের মাঠে এমন চোখ জুড়ানো ছবি দেখা যাবে শেরপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (এটিআই) গেলে।

এমন ছবি এঁকেছেন প্রতিষ্ঠানটির একদল শিক্ষার্থী ও শিক্ষক।

ফসলের মাঠের এই ছবি জনসাধারণের প্রদর্শনের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে গত শুক্রবার উদ্বোধন করেছেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.আতিউর রহমান আতিক। ব্যতিক্রমী এই দৃশ্য দেখতে এটিআইয়ে ভিড় করছেন অনেকেই।

পতাকা
গতকাল শনিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, শেরপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (এটিআই) প্রায় ৪৩ একর জমির বিশাল এলাকায় ধান ও সবজির প্রদর্শনী প্লট রয়েছে। এর মধ্যে সবার দৃষ্টি কাড়ছে ধান খেতে তৈরি বিশাল এক পতাকার অবয়ব। ধান খেতের মাঝখানে তৈরি করা হয়েছে ১৬০ ফুট দৈর্ঘ্য, ৯৬ ফুট প্রস্থ ও ৩২ ফুট ব্যাসার্ধের বৃত্ত নিয়ে এক জাতীয় পতাকা। পতাকার সবুজ অংশ বঙ্গবন্ধু-১০০ ও হাইব্রিড এবং মাঝখানে বৃত্তের লাল অংশ দুলালী সুন্দরী ধানের চারা দিয়ে সাজানো হয়েছে। পাশেই আরেকটি প্লটে লাল শাক, পাট শাক ও পালং শাকের চারা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশের মানচিত্র ও জাতীয় স্মৃতিসৌধ।

জানা গেছে এটিআইয়ের সপ্তম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী অম্বিকা সেনগুপ্ত প্রাপ্তি, মো, নূর হোসেন, পঞ্চম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী মো. রেজোয়ানসহ কয়েক জন দৃষ্টি নন্দন এই কাজটি করে। কথা হয় তাঁদের সঙ্গে। তাঁরা জানান, শিক্ষকদের সহযোগিতায় এমন সুন্দর একটা কাজ করতে পেরে তাঁরা খুব খুশি। অনেকেই এই কাজ দেখে খুশি হচ্ছেন এবং তাদের প্রশংসা করছেন। এই কাজের মাধ্যমে পরবর্তী ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও মহান স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে পারবে।

এ নিয়ে জেলার অন্যতম কবি আব্দুল আলীম বলেন, ‘এমন সুন্দর কাজটি দেখে সত্যিই খুশি হয়েছি। আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বেশির ভাগ মানুষ যেখানে স্মার্টফোনে ব্যস্ত সময় পার করছে, তখন এই শিক্ষার্থীদের উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।’

এ উদ্যোগের প্রশংসা করে জাতীয় সংসদের হুইপ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক বলেন, ‘আমাদের ছেলে মেয়েদের মুক্তিযুদ্ধের সত্যি ইতিহাস জানতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় পতাকা ও মানচিত্রের ইতিহাসকে জানাতে এমন উদ্যোগ নেওয়ায় আমি তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

এ নিয়ে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. সাইফুল আজম খান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে এমন উদ্যোগ নেওয়া। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তুলে ধরতে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জেলায় এটাই ব্যতিক্রমী ও প্রথম উদ্যোগ। কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মতো অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।’

টাইমস ডেস্ক/ ২৬ মার্চ ২০২৩