Home / জাতীয় / জনসমাগম এড়িয়ে চলার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

জনসমাগম এড়িয়ে চলার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সবাইকে জনসমাগম এড়িয়ে চলার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব এ তথ্য জানান। এ সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

গতকাল রোববার স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে একজন নারী ও দুজন পুরুষ। এর মধ্যে দুজন ইতালিফেরত। এদের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে।

করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার প্রেক্ষাপটে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আজ বিকেল ৪টায় মিটিং আছে। গতকাল যৌথ কমিটির লম্বা মিটিং হয়েছে। সেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন বাস্তবায়ন কমিটিকে সিদ্ধান্ত দিয়ে দেয়া হয়েছে। তারা ৪টায় মিটিং করে বিস্তারিত আপনাদের বলবেন।’

এরপর পাশে থাকা স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। চীনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সময় থেকেই আমরা প্রস্তুতি শুরু করেছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা হলো এটা যেহেতু একটা ছোঁয়াচে রোগ, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় তিন স্তরের কর্মকৌশল নেয়া হয়েছে। যাতে না আসে, সেজন্য প্রথম ব্যবস্থা নিয়েছে। যদি আসে তাহলে কীভাবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করব। তৃতীয় স্তর হলো যদি প্রাদুর্ভাব হয় তাহলে আমরা কীভাবে ম্যানেজ করব।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের মাধ্যমে আপনাদের প্রতি ওনার অনুরোধ হলো, আমরা যেন আতঙ্কিত না হই। এটা একটা ভাইরাস। আমাদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটা ছোঁয়াচে অবশ্যই।’

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আরও বলেন, ‘প্রটোকল অনুযায়ী ব্যবস্থা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা হয়েছে, ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা হয়েছে। শুধু যে নির্দেশনা সেটা হচ্ছে আমরা বড় গ্যাদারিং (জনসমাগম) এড়িয়ে চলব, যতটুকু সম্ভব। সেটাই নির্দেশনা।’

করোনাভাইরাসে আক্রান্তরা বিমানবন্দরে শনাক্ত হয়নি- এ বিষয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব বলেন, ‘এ ভাইরাসের প্রকৃতিটা একটু জানা দরকার। ভাইরাস যদি থাকে তবে সঙ্গে সঙ্গে জ্বর আসবে না, ধরা পড়বে না বা উপসর্গ দেখা দেবে না। ১৪ দিন পর্যন্ত এটা উপসর্গ দেখা নাও দিতে পারে। যখন উনি দেশে এসেছেন কোনো উপসর্গ ছিল না। এটা শনাক্ত করার কোনো ব্যবস্থা নেই।’

সচিব বলেন, ‘স্ক্যানিংয়ে তার জ্বর ধরা পড়বে না, এমনকি যদি ব্ল্যাড টেস্টও করা হয় রিপোর্ট নেগেটিভ আসবে। তাই যে কেউ চলে আসতে পারবে। আমরা ব্যবস্থা করেছি যে, তাদের (বিদেশফেরত যাত্রী) একটি লোকেটর ফরম দিয়ে দেয়া হয়েছে। সেখানে সে কোথায় থাকবে কীভাবে থাকবে সেটা লেখা থাকবে। যদি কোনো উপসর্গ দেখা দেয় সে যোগাযোগ করবে। এর ভিত্তিতে মোবাইল ট্র্যাকিং করি, কোন দেশ থেকে আসল, কোথায় আছে। তারাও যোগাযোগ করে হটলাইনে যে, আমার জ্বর আসছে, কাশি হচ্ছে। এভাবে আমরা ১০০ জনের মতো লোককে টেস্ট করেছি। এর মধ্যে বিদেশ থেকে আসা দুজনের শরীরে ধরা পড়েছে।’

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হবে কিনা- এ বিষয়ে স্বাস্থ্যসেবা সচিব বলেন, ‘এভাবে আতঙ্ক ছড়ানোর কোনো যুক্তি ও ভিত্তি নেই।’

এ সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রীও গতকাল মিটিংয়ে ছিলেন। অলরেডি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়ে দেয়া হয়েছে। যাতে তারা এই জিনিসগুলো লুক আফটার করে। যথাযথ ব্যবস্থা নেয়।’

মাস্কের দাম বেড়ে গেছে- এ বিষয়ে খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, ‘প্রফেসর আব্দুল্লাহর বক্তব্য দেখেন। মাস্ক পরার কোনো প্রয়োজন নেই। এটা তো বাতাসে যায় না, ছোট হলেও ওয়েটটা বেশি। এটার টাচে আসতে হবে।’

ঢাকা ব্যুরো চীফ,৯ মার্চ ২০২০