Home / সারাদেশ / নারায়ণগঞ্জ থেকে চলবে না ছোট লঞ্চ
লঞ্চ

নারায়ণগঞ্জ থেকে চলবে না ছোট লঞ্চ

শীতলক্ষ্যা নদীতে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চডুবির ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ থেকে চলাচলকারী ছোট লঞ্চগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ আখ্যা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে মালিকপক্ষ দ্রুততম সময়ে লঞ্চ চালু করার দাবি জানালে নৌ-মন্ত্রণালয়ে বৈঠকের জন্য তাদের ডাকা হয়।

৩ এপ্রিল রোববার দুপুর সোয়া ২টায় নৌ মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তারা। তবে বৈঠকেও লঞ্চ চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থা নারায়ণগঞ্জ জোনের প্রেসিডেন্ট মো. বদিউজ্জামান বাদল।

তিনি বলেন,রোববার নৌ-মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। আমাদেরকে সিদ্ধান্ত জানিয়ে বলা হয়েছে, নারায়ণগঞ্জে সানকিং ডেকের লঞ্চ চলাচল করতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের এই লঞ্চগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার অনুরোধ করেছিলাম। এছাড়াও আপার ডেকের লঞ্চ আমাদের দেওয়ার কথা বলেছি। এর জবাবে সচিব আমাদের বলেছেন, ‘আপনারা লঞ্চ ম্যানেজ করে নিয়ে আসেন। আর নয়তো লঞ্চ বানিয়ে নিন।’

মিটিংয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যানও উপস্থিত ছিলেন।

বন্ধ করে দেওয়া লঞ্চগুলো পরবর্তী সময়ে চলাচলের কোনও সম্ভাবনা রয়েছে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে বদিউজ্জামান বাদল বলেন, মিটিংয়ে সানকিং ডেকের লঞ্চের বিষয়ে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এগুলো আর চলাচলে আর কোনও সম্ভাবনা দেখছি না।

এর আগে, ২০ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীতে কার্গো জাহাজ রূপসী-৯ এর ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চ এম.এল আফসার উদ্দিন ডুবে ১০ জনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার পর থেকে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি এড়াতে নারায়ণগঞ্জ থেকে পাঁচ রুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয় বিআইডব্লিউটিএ। এই ঘটনার চার দিন পরে নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ নৌপথে এসটি শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত নামে সি-ট্রাক চালু করা হয়। এর একদিন পরে নারায়ণগঞ্জ-চাঁদপুর নৌপথে ঢাকা থেকে আগত ‘এমভি নিউ আরিফ’ নামে দোতলা লঞ্চ চালু করা হয়। তবে নারায়ণগঞ্জের ছোট লঞ্চগুলো অনিরাপদ বলে চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

এরআগে ২৯ মার্চ, নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী নারায়ণগঞ্জের বন্দরে এক অনুষ্ঠানে বলেন, প্রতি বছরই নৌ-যান চালকদের সঙ্গে আমরা আলোচনা ও বৈঠক করি। বারবার পরামর্শ দেওয়ার পরেও তারা আমাদের নির্দেশনা অমান্য করায় দুর্ঘটনা ঘটছে।

ছোট লঞ্চ বন্ধের সুপারিশের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা সুপারিশ করেছিলাম ছোট ছোট লঞ্চগুলো ধারাবাহিকভাবে তুলে দেবো। কারণ এগুলো (লঞ্চ) এখন এই জায়গায় নিরাপদ নয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সেটা আমরা যথাসময়ে করতে পারিনি। এর জন্য আমাদের খেসারত দিতে হলো। ভবিষ্যতে এই বিধিনিষেধগুলো যেন সঠিককভাবে মানা হয় সেজন্য অধিদফতরকে নির্দেশনা দিয়েছি। নৌ-পথে দুর্ঘটনা হচ্ছে বা ভবিষ্যতে আরও হতে পারে। কিন্তু আমরা চাই না, অবহেলার কারণে আর কোনও প্রাণহানি হোক।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, জনগণের কথা চিন্তা করেই পদক্ষেপ নিচ্ছি। ছোট লঞ্চ যখন বন্ধ হয়েছে তখন তাৎক্ষণিকভাবে সি-ট্রাক দিয়েছি। আমরা বড় লঞ্চের ব্যবস্থাও করেছি। আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় লঞ্চ টার্মিনাল থেকে সাতটি রুটে প্রতিদিন ৭০টি যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করে। সাতটি নৌপথ হলো নারায়ণগঞ্জ-হোমনা উত্তর থানা, নারায়ণগঞ্জ-মতলব থানা, নারায়ণগঞ্জ-চাঁদপুর, নারায়ণগঞ্জ-শরীয়তপুর, নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ-তালতলা ও নারায়ণগঞ্জ-বাঞ্ছারামপুর। তবে তালতলা ও বাঞ্ছারামপুর নৌপথে নাব্যতার কারণে লঞ্চ চলাচল বন্ধ আছে। এসব নৌপথে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন।

বিআইডব্লিউটিএর নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক মাসুদ কামাল বলেন, লঞ্চ বন্ধের পর যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে সি-ট্রাক সেবা চালু হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএর নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের উপ-পরিচালক (নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক) বাবু লাল বৈদ্য বলেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর উদ্যোগে শুক্রবার থেকে নারায়ণগঞ্জ-চাঁদপুর নৌপথে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ছোট লঞ্চগুলো চলাচল বন্ধ রয়েছে। এই লঞ্চগুলো ঝুঁকিপূর্ণ। তাই অনুমতি দেওয়া হয়নি।

এদিকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নারায়ণগঞ্জের লঞ্চ চালুর দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থা নারায়ণগঞ্জ জোনের নে