Home / সারাদেশ / চুরির অপবাদে যুবককে নির্যাতন: অভিযুক্ত ইউপি সদস্য, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেপ্তার
চুরির
স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম।

চুরির অপবাদে যুবককে নির্যাতন: অভিযুক্ত ইউপি সদস্য, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেপ্তার

কুমিল্লার বরুড়া উপজেলায় চুরির অপবাদে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হান্নান নামে এক যুবককে (২৮) রশি দিয়ে গাছের সাথে উল্টো ঝুলিয়ে মধ্যযোগীয় কায়দায় নির্যাতন করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। উপজেলার ভাউকসার ইউনিয়নের চোত্তাপুকুরিয়া গ্রামে গতকাল শনিবার সকাল ১০টার দিকে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। রাতেই নির্যাতনে জড়িত অভিযোগে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য ও স্থানীয় ওই ইউপির সদস্য জহিরুল ইসলামকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নির্যাতনের শিকার ওই যুবক একই এলাকার আবদুল জব্বারের ছেলে। নির্যাতনের ৫৯ সেকেন্ডের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে এ নিয়ে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

চুরির
জহিরুল ইসলাম ভাউকসার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ সদস্য। রোববার সকালে তাঁকে কুমিল্লার আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠান।
ভাইরাল হওয়া নির্যাতনের ভিডিওতে দেখা যায়, একটি চুরির ঘটনার বিচারের নামে আবদুল হান্নান নামের এক যুবককে দুই পা বেঁধে মাথা নিচের দিকে রেখে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তাকে প্রকাশ্যে জনসমক্ষে লাঠি দিয়ে প্রহার করছেন ইউপি মেম্বার জহিরুল ইসলাম। এসময় হান্নান বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করলেও তাকে রক্ষায় কেউ এগিয়ে আসেননি।

স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার রাতে চোত্তাপুকুরিয়া গ্রামের এক দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকার লোকজন আবদুল হান্নানকে সন্দেহ করেন। পরে বিষয়টি ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলামকে জানানো হয়। শনিবার সকাল ১০টায় জহিরুল হাজির হয়ে আবদুল হান্নানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এতে হান্নান চুরি করার বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে ইউপি সদস্য নিজেই হান্নানের পা দুটি বেঁধে গাছের ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দেন।

প্রত্যক্ষক্ষদর্শী মোজাম্মেল হক নামের এক ব্যক্তি জানান, হান্নান যদি অপরাধ করে থাকে, তাহলে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা যেতো। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ থাকলেও ইউপি সদস্য আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন, অমানবিক নির্যাতন করেছেন।

বরুড়া থানার ওসি ফিরোজ হোসেন বলেন, এ ঘটনা নির্যাতনের শিকার আব্দুল হান্নান বাদি হয়ে ইউপি সদস্য ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জহিরুল ইসলামসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। তবে, হান্নান থানায় মামলা করার আগেই আমরা ওই ইউপি সদস্যকে আটক করি। বাকী আসামিদের আটকের চেষ্টা করছি আমরা।

বরুড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাবরিনা আফরিন মুস্তাফা জানান, নির্যাতনের ব্যাপারে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া নির্বাচিত একজন জনপ্রতিনিধির (ইউপি সদস্য) এমন কর্মকান্ডের বিষয়ে আমরা স্থানীয় সরকার বিভাগকে অবগত করবো।

প্রতিবেদক: জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল, ২৭ আগস্ট ২০২৩