Home / উপজেলা সংবাদ / চান্দ্রা-মুন্সিরহাট ওয়াপদা বেঁড়িবাধের রাস্তা মরণফাঁদ

চান্দ্রা-মুন্সিরহাট ওয়াপদা বেঁড়িবাধের রাস্তা মরণফাঁদ

দেলোয়ার হোসাইন | আপডেট: ০১:০৩ অপরাহ্ণ, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫, বৃহস্পতিবার

চাঁদপুর ও ফরিদগঞ্জউপজেলার গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল চান্দ্রা-মুন্সিরহাট-কামতা-গল্লাক বাজার ব্যবসায়ীসহ প্রায় অর্ধলক্ষ যাত্রীর চলাচলের প্রধান মাধ্যম ওয়াপদা বেড়িবাঁধ রাস্তা।

চাঁদপুর সদরের ইচলী লঞ্চঘাট ও বাগাদী চৌরাস্তা থেকে ফরিদগঞ্জ উপজেলার চান্দ্রা-মুন্সিরহাট হয়ে গল্লাক বাজার পর্যন্ত এসব অঞ্চলের জনসাধারণদের জেলা শহর ও ঢাকার সাথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম চান্দ্রা-মুন্সিরহাট ওয়াপদার পরিচিত এ রাস্তাটি।

স্বল্প ধারণক্ষমতা ও প্রয়োজনের চেয়ে কিছুটা সরু রাস্তাটি দিয়ে টোরামুন্সিরহাট থেকে গল্লাক বাজার পর্যন্ত প্রায় ২৮টি ইটভাটার প্রয়োজনীয় কাঁচামাল পরিবহণকারী লরি ট্রাক ও ইট-বালি পরিবহণকারী দানব ট্রাক্টরের অতিরিক্ত চলাচলের কারণে রাস্তটি এখন মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই অনেকেই এখন ভিন্ন রাস্তা দিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া ও সময় ব্যয় করে জেলাশহর কিংবা ঢাকায় যাতায়াত করছে।

একাধিকবার রাস্তাটি দিয়ে যাতায়াত করে যাত্রীসাধারণদের মনের ক্ষোভ ও বক্তব্যে জানা যায়, বাঁধের ওপর নির্মিত রাস্তাটির দায়িত্ব কি পানি উন্নয়ন বোর্ড, না-কি সড়ক ও জনপদ বিভাগের তা অনেকেই জানেন না। কিন্তু যাত্রীরা যাতায়াতকালে ভোগান্তির শিকার হয়ে বেশিরভাগ সময়েই সরকার ও স্থানীয় সাংসদকে দায়ী করছেন।

রাস্তাটিতে ক্ষণে ক্ষণে লোক দেখানো নামমাত্র মেরামত নিয়েও অভিযোগের অন্ত নেই। বিগত তত্ত্ববধায়ক সরকারের আমলে বাঁধের দু’পাশ কিছুটা চওড়া করলেও নতুন করে পাকাকরণের ক্ষেত্রে চওড়া করা হয়নি। এতে করে বড় ধরনের যানবাহন চলাচল ও বর্ষাকালে বৃষ্টির প্রভাবে বাঁধের দু’পাশ আবারও সংকীর্ণ হয়ে গেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পর থেকে এ রাস্তাটি মেরামতের জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়নি কিংবা বরাদ্দ হলেও উল্লেখযোগ্য মেরামতেরও কোনো চিত্র দেখা যায়নি।

চাঁদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বেড়িবাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন তার ওপর নির্মিত রাস্তাটি স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিইডি) অধীনে ছিলো। ২০০৫ সালে এটিকে এলজিইডি থেকে সড়ক ও জনপদ বিভাগে হস্তান্তর করা হয়। তাই রাস্তাটি এখনো সংকীর্ণ রয়ে গেছে।

স্থানীয়দের দাবি, মাঝে মাঝে রাস্তায় সৃষ্ট হওয়া বড় গর্তে বালি ও ইট দিয়ে পরিপূর্ণ করা হয়, কিছুদিন পর আবার গর্ত থেকে ইট ও বালি সরে গিয়ে পুনরায় গর্তের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় ও ভুক্তভোগী যাত্রীরা এ ধরনের কাজকে ‘লোক দেখানো’ বলে মন্তব্য করেন।

রাস্তায় চলাচলকারী একাধিক সিএনজি চালকদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, এমনিতেই ভোগান্তির শেষ নেই, তারপরও মাঝে মাঝে পুরোনো এসব গর্তে কথিত স্বেচ্ছাসেবীরা রাস্তার পাশ থেকে মাটি এনে ভরাট করে চালকদের নিকট থেকে চাঁদা উত্তোলন করে। বৃষ্টি এলেই সে মাটি কর্দমাক্ত হয়ে আরো বেশি ভোগন্তির সৃষ্টি করে। সাময়িক সুবিধা হলেও ভোগান্তি সৃষ্টি করে এমন কাজে চাঁদা না দিতে চাইলে চালকদেরকে লাঞ্ছিত করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চাঁদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহেদ হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, “চাঁদপুর সদরের ইচলী চৌরাস্তা থেকে ফরিদগঞ্জ উপজেলার গল্লাক বাজার পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটারের এ রাস্তাটি ২০০৫ সালে এলজিইডি থেকে সড়ক ও জনপদ বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু বড় ধরনের কোনো বরাদ্দ না থাকায় রাস্তাটিকে ভালোভাবে সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। তবে বর্ষা শেষে নভেম্বরের দিকে একতাবাজার থেকে গল্লাক বাজার পর্যন্ত সংস্কার করা হবে।”

এ কর্মকর্তা আরো জানান “টোরামুন্সিরহাট থেকে গল্লাক বাজার পর্যন্ত প্রায় ২৮টি ইটভাটা (ব্রিকফিল্ড) রয়েছে। যদি প্রতিটি ইটভাটার জন্যে ব্যবহৃত ট্রাক্টরের সংখ্যা ৩টি করেও ধরা হয়, তাহলে দেখা যায় অনেক ট্রাক্টর এ রোডে চলাচল করে, এতে করে রাস্তার ব্যাপক পরিমাণ ক্ষতি হয়। আমরা মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে বরাদ্দ চেয়েছি, আশা করি বড় ধরনের বাজেট পেলে রাস্তাটি আরো চওড়া করে সংস্কার করা সম্ভব হবে।”

চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/ এমআরআর/২০১৫