Home / উপজেলা সংবাদ / হাজীগঞ্জ / চাঁদপুর-৫ আসনে মনোনয়ন সংগ্রহ করলেন আওয়ামী লীগের ১১ জন
আসনে

চাঁদপুর-৫ আসনে মনোনয়ন সংগ্রহ করলেন আওয়ামী লীগের ১১ জন

চাঁদপুর- ৫ হাজীগঞ্জ শাহরাস্তি আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেন ১২ জন নেতা। তারা হলেন, বর্তমান সাংসদ মহান মুক্তিযুদ্ধের ১নং সেক্টর কমান্ডার মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম,জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও জাতীয় পাওয়ার সেলের ডিজি ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হোসাইন, নারী সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এড.নুরজাহান বেগম মুক্তা, হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী মো.মাঈনুদ্দিন,কেন্দ্রিয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য অধ্যাপক এ.কে.এম ফজলুল হক,এফবিসিসিআই সদস্য বিস্কুট শফিকুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রব মিয়ার ছেলে খালেদুর রব মিঠু, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট শিল্পপতি ইঞ্জি.সফিকুর রহমান, দুদকের সাবেক মহাপরিচালক ও এনএসআই’র সাবেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.)এমএইচ সালাউদ্দিন,জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক মো.মনির হোসেন মজুমদার , ঢাকা কলাবাগান ক্লাবের সাবেক সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজ, শাহরাস্তি উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এম আউয়াল মজুমদার।

চাঁদপুর- ৫ হাজীগঞ্জ শাহরাস্তি দুই উপজেলা নিয়ে ২৬৪ নং জাতীয় সংসদের আসন নির্ধারন।  আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে সবচেয়ে বেশি প্রার্থী দেখা যায়। কেন্দ্রীয় ভাবে সিদ্ধান্ত আসলে জাতীয়তা বাদী দল বিএনপি, জাতীয় পাটি, ইসলামী ফ্রন্টসহ দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা আরো বৃদ্ধি পাবে।

জানাযায়, স্বাধীনতার পর হিসাব করতে গেলে টানা বিএনপির প্রার্থী  হিসাবে ক্ষমতায় ছিলেন সাবেক চার বারের এমপি মরহুম এম এ মতিন।  আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ও পরবর্তী ২০০৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বর্তমানে সংসদ সদস্য হিসাবে রয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের ১নং সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি।

 আওয়ামী লীগ সরকারের টানা প্রায় ১৫ বছরের ক্ষমতায় চলমান উন্নয়নে হাজীগঞ্জ শাহারাস্তি ডাকাতিয়া নদীর উপর প্রায় ৮ টি বৃহত্তর সেতু নির্মাণ,  প্রায় হাজার কিলোমিটারের উপরে পাকা রাস্তা করণ, কয়েক  শতাধিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার পাকা ভবণ নির্মাণ, শতভাগ বিদ্যুতায়ন, ভাতাসহ নানা কর্মসৃচি বাস্তবায়ন করে আবারো এ উন্নয়নের দাবি নিয়ে আবারো প্রার্থী হতে চান মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি।

তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী মাঠে দেখা গেলেও এবারের আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে এখন পর্যন্ত তাদের অনেকেই রাজনৈতিক মাঠে নেই।

 সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধের ১নং সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি আওয়ামী লীগ থেকে ১৯৯৬, ২০০৯, ২০১৪ ও সর্বশেষ ২০১৮ সালে নৌকা প্রতীকে হাজীগঞ্জ – শাহারাস্তি আসনের প্রায় ৫ লক্ষ ভোটারের ভোটে এমপির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার নেতৃত্বে দলীয় নেতাকর্মীদের চেয়ে  সাধারন মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরুণসহ ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। নিজ দল আওয়ামী লীগের তৃনমূল নেতৃবৃন্দ বিকল্প কোন সমতুল্য নেতা খুজে না পাওয়ায় আগামি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আবারো মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপির হাতেই নৌকার মনোনয়ন দেখতে চায়।

গত একাদশ সংসদ নির্বাচনে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধের ১নং সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপির বাহিরে মনোনয়ন চেয়েছেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ইঞ্জি. মোহাম্মদ হোসাইন, চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর জেলার সংরক্ষিত সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড. নূরজাহান বেগম মুক্তা, দুদকের সাবেক মহাপরিচালক ও এনএসআই’র সাবেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এমএইচ সালাউদ্দিন,  জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট শিল্পপতি ইঞ্জি. সফিকুর রহমান, কেন্দ্রিয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য অধ্যাপক এ.কে.এম ফজলুল হক, কেন্দ্রিয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ড. এস এম মোস্তফা কামাল খান, কেন্দ্রিয় যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক নাসরিন জাহান শেফালি, কেন্দ্রিয় কৃষক লীগ নেতা সফিকুল আলম ফিরোজ, হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ হেলাল উদ্দিন মিয়াজী, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রব মিয়ার বড় ছেলে খালেদুর রব মিঠুসহ অনেক নেতাই মাঠে ছিলেন।

এদের মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে মাঠে রয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ইঞ্জি. মোহাম্মদ হোসাইন। তিনি গত এক যুগ ধরে হাজীগঞ্জ শাহারাস্তি দুই উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে যোগদান এবং দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে হায় হ্যালো সম্পর্ক অব্যাহত রেখেছেন। তিনি শতভাগ বিশ্বাস করেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নমূলক কাজে আগামি দিনে মনোনয়নের মাধ্যমে দেশ ও জাতীর কল্যানে কাজ করার সুযোগ দিবেন।

বিএনপি থেকে (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) নির্বাচনী এলাকায় ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থিতা নিয়ে পূর্বের নির্বাচনে কৌতূহল থাকলেও এবার তা নেই বললেই চলে। কারন এ আসন থেকে পাঁচ বারের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মতিনের মৃত্যুতে  কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও  চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ২০১৮ সালে ধানের শীষ প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বিকারী লায়ন ইঞ্জি. মমিনুল হক মাঠে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। তিনি বিগত সময় থেকে বিএনপির তৃণমূল নেতৃবৃন্দ ও কর্মী সমর্থকদের সাথে নিয়ে বিভিন্ন মামলা হামলায় নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।  বর্তমানে বিএনপির হাই কমান্ডের নির্দশনা অনুযায়ী আগাম কোন বার্তা দিতে নারাজ লায়ন ইঞ্জি. মমিনুল হক।

জাতীয় পাটি থেকে বরাবরই কেন্দ্রীয় কমিটির প্রাদেশিক বিষয়ক সম্পাদক খোরশেদ আলম খুসু নির্বাচনে মত প্রকাশ করে আসছেন। তিনি ১৯৯১ সাল থেকে হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদের সাথে ছিলেন। ২০১৪ সালে এ আসনে মনোনয়ন পাওয়ার পর তার ঘর বাড়ী দূর্বৃত্তরা ভাংচুর চালায়। তিনি ঢাকা থেকে মনোনয়ন নিয়ে এলাকায় আসবেন এবং জাতীয় পাটির নিরব ভোটারদের জাগ্রত করবেন।

এদিকে ইসলামীক ফ্রন্ট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আল্লামা বাহাদুর শাহ মোজ্জাদ্দেদী ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে মহাজোট থেকে মনোনয়ন পেয়েও ধরে রাখতে পারলেন না। ততকালীন হাজীগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি শুকুর আলম শুভর নেতৃত্বে উপজেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের তোফের মুখে মনোনয়ন পত্র ফিরে দেন। সেই থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি টানা নৌকার মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য পদ ধরে রেখেছেন।

চাঁদপুরের ৫ টি আসনের মধ্যে হাজীগঞ্জ শাহারাস্তি আসনটি জেলার মধ্যবর্তী হওয়ায় অনেক গুরুত্ববহন করে আসছে। সেই হিসাবে আওয়ামী লীগের মধ্যে কিছুটা ফাটল থাকলেও জাতীয়  নির্বাচনে বরাবরের মতই নেতাকর্মীরা নৌকার বিজয়ের লক্ষে নেমে পড়ে। আর বিএনপির কেন্দ্রীয়  দিকনির্দেশনা পেলে পরবর্তী যে কোন পদক্ষেপে তারাও শেষ পর্যন্ত পেছনে থাকবে না।

প্রতিবেদক: জহিরুল ইসলাম জয়,২২ নভেম্বর ২০২৩