Home / চাঁদপুর / চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে ৪ মাসে প্রায় আড়াই হাজার রোগীকে চিকিৎসাসেবা প্রদান
সরকারি

চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে ৪ মাসে প্রায় আড়াই হাজার রোগীকে চিকিৎসাসেবা প্রদান

আড়াই,শ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ৫ জন চিকিৎসক ও নার্সদের আন্তরিকতা এবং অক্লান্ত পরিশ্রমে চিকিৎসাসেবা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন শত শত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। আগে যেখানে ডেঙ্গু আক্রান্ত খারাপ রোগীদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হতো। বর্তমানে সেসব রোগীদেরকে ঢাকায় না পাঠিয়ে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালেই চিকিৎসাসেবা দিয়ে সুস্থ করে তোলা হচ্ছে। এতে রোগীরাও ডেঙ্গু জ্বর থেকে মুক্ত হয়ে সুস্থতা নিয়ে হাসি মুখে বাড়ি ফিরছেন। ডেঙ্গু রোগীদের এমন সু-চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন হাসপাতালের মিডেসিন বিভাগের মোট ৫ জন চিকিৎসক ও নার্সরা। এই পাঁচ জন চিকিৎসক হলেন, চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক (মেডিসিন) ডাঃ সালেহ আহমেদ, হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডাঃ সোহেল আহমেদ, সহকারী রেজিস্টার (মেডিসিন) ডাঃ পীযূষ সাহা, ডাঃ জি এম ফারুক ও ডাঃ সাইফুল ইসলাম। এছাড়া মেডিসিন ও সার্জারি বিভাগে তিনটি শিপটে দায়িত্ব পালন করে আসছেন হাসপাতালে কর্মরত বিভিন্ন নার্সরা। 

গত ৪ মাস ধরে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসাসেবায় এই ৫ জন চিকিৎসক অক্লান্ত পরিশ্রম করে আসছেন। ডেঙ্গু রোগীদের বাহিরেও  হাসপাতালে ভর্তি থাকা অন্যান্য রোগীদেরকেও নিয়মিত  চিকিৎসাসেবা প্রদান করে থাকেন তারা। 

খবর নিয়ে জানাযায়, জুলাই মাস থেকে সর্বপ্রথম চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সন্ধান ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে। তারপর থেকে হাসপাতালের পুরুষ এবং মহিলা ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ইউনিট স্থাপন করা হয়। ওইসব ইউনিটে ডেঙ্গু রোগীদেরকে মশাড়ি টানিয়ে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়। 

চাঁদপুরে ডেঙ্গু রোগীর প্রকোপ বৃদ্ধির প্রথম থেকে এ পর্যন্ত গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৩০ জন ডেঙ্গু রোগীকে সুস্থ হওয়ার পর ছুটি দেয়া হয় বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। আবার একই সংখ্যক ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়ে থাকেন সরকারি এই হাসপাতালটিতে। গত ৪ মাসে প্রায় আড়াই হাজার ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন বলে জানা গেছে। 

খবর নিয়ে জানা যায়, ৭ অক্টোবর শনিবার দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালের পুরুষ এবং মহিলা ওয়ার্ডে মোট ৫০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। এতে পুরুষ ওয়ার্ডে ৩১ জন এবং মহিলা ওয়ার্ডে ১৯ জন। এছাড়া গত ৩ দিনে পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডে সর্বমোট ১১৬ জন ডেঙ্গু  রোগী ভর্তি ছিলো। এরমধ্যে পুরুষ ওয়ার্ডে ৭৯ জন, মহিলা ওয়ার্ডে ৩৭ জন। তিন দিনে পুরুষ ওয়ার্ড থেকে ছুটি নিয়েছে ১৪ জন। মহিলা ওয়ার্ড থেকে ছুটি নিয়েছে ১৮ জন। বর্তমানে পুরুষ এবং মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে অর্ধশত ডেঙ্গু রোগী। আর এসব ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদেরকে অক্লান্ত পরিশ্রম ও আন্তরিকতার সাথে নিয়মিত চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ্যিত ৫ জন চিকিৎসক। 

চিকিৎসকরা জানান, বিগত  বছর গুলোর তুলনায় বর্তমানে সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদেরকে অনেক উন্নত মানের চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়ে থাকে। গত ৪ মাসে দুই হাজারেরও বেশি সংখ্যক ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাসেবায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তারা বলেন, আগে যেখানে 

ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার, ডেঙ্গু শক সিনড্রোম, এক্সপ্যান্ডেড ডেঙ্গু ফিভার, এ ধরনের রোগীদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হতো। এখন এসব খারাপ রোগীদেরকে সদর হাসপাতালে ভর্তি রেখেই চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়। ডেঙ্গুর প্রকোপের প্রথম থেকে এ পর্যন্ত আমরা আমাদের যথাসাধ্য মতো রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদান করে আসছি। 

এবিষয়ে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ এ কে এম মাহাবুবুর রহমান বলেন, হাসপাতালে গত কয়েক মাসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। জুলাই মাস থেকে যখন ধীরে ধীরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে তারপর থেকেই আমরা হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ড এবং মহিলা ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ইউনিট স্থাপন করেছি। সেখানে নির্দিষ্ট বেডের বাইরেও ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীদেরকে মশারি টাঙিয়ে নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। একই সাথে মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক এবং নার্সদের আন্তারিকতা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্যদিয়ে এসব রোগীদের নিয়মিত চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়ে থাকে। 

প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি,৮ অক্টোবর ২০২৩