Home / চাঁদপুর / চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে বাড়ছে শিশু রোগীর সংখ্যা
সরকারি

চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে বাড়ছে শিশু রোগীর সংখ্যা

প্রচণ্ড গরম আবহাওয়ায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে আড়াই’শ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে বাড়ছে শিশু রোগীদের সংখ্যা ।

গত ৩ দিনে প্রায় দেড় শতাধিক শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে। এসব রোগীদের মধ্যে জ্বর, ঠান্ডা জনিত শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বেশি বলে জানা গেছে। একদিনেই হাসপাতালে ৬০ জন শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে। পুরো শিশু ওয়ার্ডে নির্দিষ্ট বেডের চেয়ে শিশু রোগীর সংখ্যা চার গুন বেশি বিছানা সংকটে হিমশিম খাচ্ছে রোগী ও রোগীর লোকজন সহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

১১ সেপ্টেম্বর রোববার দুপুরে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে সরজমিনে গিয়ে দেখাযায় হাসপাতালের শিশু বিভাগে প্রচুর রোগী ভর্তি রয়েছে। বিছানা সংকটে হাসপাতালের করিডোর এবং বারান্দার মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন রোগীরা। যেখানে শিশু ওয়র্ডে  বিছানা সংকট রয়েছে সেখানে ভর্তি রোগীর সংখ্যা প্রায় দেড় শতাধিক। 

খবর নিয়ে জানাযায়, গত ৮ সেপ্টেম্বর থেকে  ১১ সেপ্টেম্বর দুপুর ২ টা পর্যন্ত গত ৪ দিনে শিশু ওয়ার্ডে সর্বমোট ১৫৮ জন শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে গত ৮ সেপ্টেম্বর সারাদিনে সর্বমোট ৩৯ জন শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে। ওইদিন মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিলো ১০৪জন। ৯ সেপ্টেম্বর সারাদিন ভর্তি হয়েছে ২৪ জন। মোট ভর্তি সংখ্যা ১০৫ জন। ১০ সেপ্টেম্বর সারাদিনে ভর্তি হয়েছে ৬০ জন। ওইদিন মোট ভর্তি রোগী সংখ্যা ছিলো ১১১জন। এবং ১১ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টা পর্যন্ত মোট ৩৫ জন শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে। 

এছাড়া গত এক সপ্তাহ পূর্বে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে এর চেয়ে আরো বেশি রোগী ছিলো বলে জানা গেছে। তারা পর্যায়ক্রমে চিকিৎসাসেবা নিয়ে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। শনিবার এবং রোববার দিনেও বেশ কিছু রোগী সুস্থ হয়ে ছুটি নিয়েছে। 

বর্তমানে রোববার দিন পর্যন্ত হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে  সর্বমোট ১১১ জন শিশু রোগী ভর্তি রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই বিভাগে কর্তব্যরত নার্সরা। এসব শিশু রোগীদের মধ্যে একমাস বয়স থেকে শুরু করে ৫ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যা বেশি। তারা গরম আবহাওয়ায় ঘমানোর কারনে জ্বর এবং ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।  

খবর নিয়ে জানা যায় চাঁদপুর জেলা শহরে গত কয়েক দিনে হঠাৎ প্রচন্ড গরম আবহাওয়ার কারনে বয়োবৃদ্ধসহ শিশুরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে তিন দিনে হাসপাতালে প্রায় দেড় শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছেন। 

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে রোগীদের চাপে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের কোথাও ঠাঁই নেই। শিশু ওয়ার্ডের সবকটি বিছানা পরিপূর্ন হয়ে মেঝেতে ও রোগীদের জন্য বিছানা পাতা হয়েছে। এসব  রোগীরা জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, খিচুনী এবং নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

এছাড়া ও অনেক শিশু রোগীকে অভিভাবকরা হাসপাতালে নিয়ে এসে ডাক্তার দেখিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা নিয়ে চলে যান। একই ভাবে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন বয়স্ক রোগীরাও। 

এ বিষয়ে হাসপাতালের সহকারী রেজিস্টার (শিশু) ডাক্তার মাহাবুব আলী খানসহ শিশু বিশেষজ্ঞ কয়েকজন চিকিৎসক জানান প্রচন্ড গরমে শিশুরা ঘামানোর কারণে তারা জ্বর, সর্দি এবং ঠান্ডা জনিত রোগে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তারা আরো জানান, প্রচন্ড গরমে তাদের শরীর ঘামিয়ে ভাইরাল ইনফেকশন ও ভাইরাল দূষণের কারণে শিশুরা গরমে ঘামানোর কারণে বেশি সমস্যায় পড়ছে। এ কারণেই তারা জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। তাই গত ক দিনে হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি দেখা দিয়েছে। 

এ ব্যাপারে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আর এম ও) ডাঃ সুজাউদদৌলা রুবেল এবং ডাঃ মোঃ আসিবুল আহসান চৌধুরীর সাথে আলাপকালে তারা বলেন, প্রচন্ড গরম আবহাওয়ার কারনে বয়োবৃদ্ধ এবং শিশুরা হঠাৎ, জ্বর, সর্দি, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়ছেন। তাই গত বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতালে শিশু রোগীদের প্রচুর চাপ দেখা দিয়েছে। 

প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি,১২ সেপ্টেম্বর ২০২২