চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি হয়ে ও নিজের যুবক বয়সের শিক্ষকতার জীবন ভুলতে পারেননি মোঃ নাসিম উদ্দিন। পুলিশি জীবনে পা রেখেও তিনি কর্মময় জীবনে সব সময় বুকে করে আগলে রাখেন কলম ও ডায়রি। যদিও এগুলো তিনি বিভিন্ন আসামীদের নাম ঠিকানা লিখার কাজে ব্যবহার করে থাকেন।
ওসি মোঃ নাসিম উদ্দিন তিনি ১৯৯০ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড থানাধীন শীতলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে দীর্ঘ ৬ বছর শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষক হিসেব পাঠ দান করেছেন।১৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার তার থেকে নেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানা যায়।
তিনি জানান,১৯৬৮ সালের ৩ জুলাই চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের সুফিয়া মাদ্রাসার ডাকঘরস্থ মিঠানালা গ্রামের এক সভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তিনি জন্মগ্রহন করেন। তার বাবার নাম হাদিস আহমেদ এবং মাতার নাম আমেনা খাতুন। ছেলেবেলা থেকেই শিক্ষক ও শিক্ষা দুটির ওপরেই ছিলো মোঃ নাসীম উদ্দিনের ভীষণ টান।তাই তো তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর এবং একই বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধীনস্থ বঙ্গবন্ধু ‘ল’ টেম্পল হইতে এল এল বি ডিগ্রী লাভ করেছেন। আর যুবক বয়স থেকে পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি করতেন শিক্ষকতা।
মোঃ নাসিম উদ্দিন আরো জানান, দেশ সেবায় তিনি পরবর্তীতে শিক্ষকতা ছেড়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক হসেবে চাকরি পেয়ে পুলিশি ট্রেনিংয়ে যোগদান করেন।পরে ট্রেনিং শেষ করে সিলেট কতুয়ালি থানায় কর্ম জীবনে ব্যস্ত সময় পার করেন। পরে সেখান থেকে বদলি হন ঢাকার ডিএমপি’তে।এর পর কর্ম দক্ষতায় প্রমোশন পেয়ে ২০১০ সালে খাগরাছরির মানিক ছড়ি থানায় ওসি হিসেবে যোগ দেন।
এরপর সেখান থেকে স্বপদে বদলিজনিত কারনে কুমিল্লার মেঘনা থানা, পরে নোয়াখালীর চাটখিল থানা ও পরবর্তীতে ওই জেলার সোনাইমুরি থানা হয়ে ২০১৮ সালে ডিসেম্বরের ৭ তারিখ তিনি চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি হিসেবে যোগদান করেন। এই চাঁদপুর সদর মডেল থানায় তিনি এসেই এই অঞ্চলের মাদক,সন্ত্রাস,জঙ্গিবাদ,ইভটিজিং,নারী ও শিশু নির্যাতন,চুরি ছিনতাই প্রতিরোধে দক্ষতার সহিত কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি চাঁদপুরে অপরাধমূলক কার্যক্রম বন্ধ করতে পরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রমও পরিচালনা করছেন।
ওসি নাসিম উদ্দিনের মতে,মানুষকে বড় অপরাধের আগেই সতর্ক করে সামাজিক জীবনে ফেরানোর সুযোগ দেওয়া দরকার। তাই তিনি স্থানীয় মাদকসেবী ও মাদক কারবারিদের জেলা পুলিশের সহযোগিতায় আত্মসমর্পন করার অনুরোধ জানিয়ে যাচ্ছেন বারবার। তার এমন উদ্যোগে অনেক মাদক সেবী ও মাদক কারবারি এরইমধ্যে আত্মসমর্পন করে সামাজিক জীবনেও ফিরে এসেছেন।
এজন্যে অবশ্য সুধী মহলে তিনি এখন পর্যন্ত বেশ সুনাম কুড়োচ্ছেন। তিনি তরুনদের জানাতে চান, নিজের মধ্যে দেশ প্রেমকে জাগ্রত করতে পারলেই সব রকম অপরাধ কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা সম্ভব। দাম্পত্য জীবনে স্ত্রী ও ২ কন্যা রয়েছে তার। তিনি এভাবেই যেন সকলের ভালোবাসায় সুনামের সহিত তার কর্মদক্ষতাকে এগিয়ে নিতে পারেন।এজন্যে সকলের কাছে দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেছেন।
প্রসঙ্গত,বিগত ২০০৬ সালের জঙ্গীদের গডফাদার বাংলা ভাইয়ের বিরুদ্ধে ৬৩ জেলায় বোমা বিষ্ফোরনে যে মমলা হয়েছিলো। নাসীম উদ্দিন তখন বাংলা ভাইয়ের বিরুদ্ধে ঢাকার ডিএমপি’তে কর্মরত থাকাকালীন ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তার ও দায়িত্ব পালন করেছেন।
করেসপন্ডেট
১৭ ফেব্রুয়ারি,২০১৯