করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সারা দেশে বেশ কিছু কারাবন্দীদের মুক্তির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তারই অংশ হিসেবে চাঁদপুর জেলা কারাগার থেকেও বিভিন্ন পর্যায়ের সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তির জন্য ১৪০ কারাবন্দীর তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। যা এরইমধ্যে কারা অধিদফতরে পাঠিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। ফলে তালিকা অনুযায়ী ১৪০ কারাবন্দী মুক্তির অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন।
২৬ এপ্রিল রোববার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাঁদপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া।
করোনা সংক্রমণ এড়াতে চাঁদপুর জেলা কারাগার থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য সাজাপ্রাপ্ত ১৪০ জন বন্দীর নাম ঢাকা কারা অধিদফতরে পাঠানো হয়েছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এই তালিকা পাঠানো হয়। কারা অধিদফতর থেকে এই তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই শেষে অনুমতি সাপেক্ষে তাদের মুক্তির ব্যবস্থা করা হবে।
প্রায় দেড় হাজার আসামি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন চাঁদপুর জেলা কারাগারে পুরুষ বন্দীদের জন্য আট কক্ষ বিশিষ্ট দুইটি চারতলা ভবন এবং চার কক্ষ বিশিষ্ট একটি দুইতলা ভবন রয়েছে।
অন্যদিকে নারী বন্দীদের জন্য চার কক্ষ বিশিষ্ট একটি দুইতলা ভবন রয়েছে। যার মধ্যে দুইটি সাধারণ ওয়ার্ড ও ছয়টি কনডেম সেল রয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে ৪০-৫০ জন বন্দীকে রাখা যায়। সবমিলিয়ে ফাঁসির আসামিদের জন্য এখানে ১০টি কনডেম সেল রয়েছে। তবে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত চাঁদপুর জেলা কারাগারে সাজাপ্রাপ্ত ও আন্ডার ট্রায়ালে মোট বন্দী রয়েছে ৭৪৩ জন। এর মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত ২২৯ জন, বিচারাধীন ৫১১ জন এবং ফাঁসির আসামি তিনজন।
করোনা প্রতিরোধে কারাগারের প্রস্তুতি সম্পর্কে জেল সুপার মো. মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, কারাগারে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সতর্কতামূলক নানা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রতিদিনই নতুন বন্দীদের কারাগারে প্রবেশের সময় হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে হাতমুখ ধোয়ানো হয়। পাশাপাশি পরীক্ষা করা হয় শরীরের তাপমাত্রা। প্রয়োজনে নতুন বন্দীদের ১৪ দিন আলাদা ওয়ার্ডে রাখি। প্রতিদিন সকাল বিকেল দুইবার পুরো কারাগার এলাকায় জীবাণুনাশক স্প্রে ছিটানো হয়। এছাড়া কারগারে দুইটি আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এ ব্যপারে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জামাল হোসেন জানান, করোনা পরিস্থিতিতে জেলা কারাগার ঝুঁকিমুক্ত রাখতে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। আর কারা অধিদফতরে প্রেরণকৃত তালিকা যাচাই-বাছাই চলছে।
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, ২৬ এপ্রিল ২০২০