Home / উপজেলা সংবাদ / চাঁদপুরে ১৩ বছরের স্কুলছাত্রের বিরুদ্ধে ধর্ষণ-সন্ত্রাস মামলা!
Obijog

চাঁদপুরে ১৩ বছরের স্কুলছাত্রের বিরুদ্ধে ধর্ষণ-সন্ত্রাস মামলা!

চাঁদপুর সদর মেঘনা নদীর চর এলাকা রাজরাজেশ্বরে ১৩ বছরের স্কুলছাত্রের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগে দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। পরিবারের দাবি দুটিই মামলাই মিথ্যা ও হয়রানিমূলক এবং একটিতে মিথ্যা অভিযোগ প্রমাণিত হয়ে জামিন পাওয়ায় একই বাদী প্রতিপক্ষ হিসেবে অপরটি দায়ের করেছে।

স্কুলছাত্রটির নাম ফয়সাল সে স্থানীয় ওমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র ও রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের বেপারী কান্দীর সেকুল বেপারীর ছেলে। তবে ফয়সাল স্কুলছাত্র হলেও আলোচিত মামলা দুটিতে তাকে রাজমেস্ত্রীর যুগালী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

জানা যায়, স্কুলছাত্র ফয়সালের সাথে ওই স্কুলরই ৬ষ্ঠ শ্রেণির মীম আক্তারের সাথে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থেকে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। মীম তার নানীর বাড়িতে থাকে এবং বিষয়টিতে তার নানা-নানী ভালোভাবে মেনে নিতে পারেননি। সে ক্ষোভেই ছেলেটির বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তার পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে।

প্রথম মামলার বিবরণে জানা যায়, ছাত্র ফয়সাল ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর রোববার বিকাল ৫টায় গোয়ল নগর এলাকায় বেপারী বাড়ীর পাশ দিয়ে যাওয়ার পথে ঢালি কান্দী গ্রামের আমজাদ হোসেন বেপারীর মেয়ে সাবেক বাতেন পাটোয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী (বর্তমান ৬ষ্ঠ শ্রেণি) মীম আক্তার (১২) অংক করে দেওয়ার কথা বলে তাকে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে।

ছেলেটির পরিবার জানায়, বাদীপক্ষ প্রথমে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাদের ছেলেকে ফাঁসাতে চেষ্টা করে এবং মামলার আগে পঞ্চায়েতের মাধ্যমে মিমাংসা করার কথা বলে। আমরা সে পঞ্চায়েতে হাজির হওয়ার প্রস্তুতি নিতেই তারা পঞ্চায়েত না বসিয়ে মেয়েটির নানী আবদুল আজিজ সর্দারের স্ত্রী আয়শা বেগম(৫০) বাদী হয়ে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ৯ এর ১ ধারায় মামলা ঠুঁকে দেয়।

মামলার তদন্তে মডেল থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) মামলাটির অধিকাংশ অভিযোগ সঠিক নয় মর্মে তদন্ত রিপোর্ট দেয় । কিন্তু সে তদন্ত রিপোর্ট না দেখেই আমাদের ছেলের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করে গ্রেফতার করে।

পরে এ মামলা পেরে না ওঠায় মেয়েটির নানী আয়শা বেগম নতুন করে সন্ত্রাসী হামলা করে বসত ঘর লুটপাটের অভিযোগ এনে আমাদের ছেলের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি আরেকটি মামলা করে।

ঘটনার সাজানোর মোল হোতারা হলেন মেয়ের নানী আয়সা বেগম (৫০) বাচ্চু চোকদার (৪৫) ও মজিত সর্দরের ছেলে ছিদ্দিক সরদার ।

এ ব্যাপারে মামলায় ‘সাজানো’ ভিকটিম মীম আক্তারে সাথে আলাপকালে জানা যায়, ‘আমার সাথে ফয়সাল বেপারীর প্রেমের সর্ম্পক ছিলো তার সাথে দেখা করতে গেলে আমী ফয়সাল কে অংক করার কথা বলী । তারপর আমাদের দুই জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় । ওইদিন আমার সাথে ফয়সালের কোন অসামাজিক কিছুই হয়নি ।

তবে গত ২৪ জানুয়ারী তাদের বাড়িতে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মেয়েটি তার অস্বীকার করে।

‘মিথ্যা মামলায়’ অভিযুক্ত ফয়সাল বেপারীর কাছে জানতে চাইলে সে জানায় ‘আমি বর্তমানে ওমর আলী হাই স্কুলে ৭ম শ্রেণিতে পড়তেছি । আমার নামে যে অপবাদ দিয়েছে তার আমি কিছুই জানি না।’

ছেলেটির বাবা ‘মিথ্যা মামলায় আমার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে, বিষয়টির মধ্যেস্থতাকারী ছিদ্দিক সর্দার আমার কাছ থেকে মিমাংসার শর্তে ১ লাখ টাকা চেয়েছে। আমি তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নতুন মামলায় আমার অবুঝ ছেলেকে ফাঁসানো হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে মেয়ের নানী আয়শা বেগম ও নানা বাচ্চু চোকদারকে বক্তব্যের জান্য পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনা সর্ম্পকে স্থানীয়দের মধ্যে লতিফা বেগম, হাসনেয়ারা বেগম, মুদি দোকাদার নিজাম উদ্দিন, সমাজসেবক মো. নোয়া ঢালী, হারুণ ঢালীসহ কয়েকজনের সাথ জানতে চাইলে তারাও প্রতিবেদককে এসব ঘটনার মিথ্যা ও শত্রুতার জেরে করা হয়েছে।

এছাড়া তারা জানিয়েছে ফয়সাল বেপারী ওমর আলি হাই স্কুলের ৭ম শ্রেণির ছাত্র ও মীম আক্তার ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।

 

মো. জাবেদ হোসেন, ক্রাইম রিপোর্টার

: আপডেট ১:০০ এএম, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, মঙ্গলবার

ডিএইচ