Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরে হাজীগঞ্জে জ্বলন্ত চুলায় স্ত্রীর মুখ চেপে ধরলেন স্বামী
চাঁদপুরে হাজীগঞ্জে জ্বলন্ত চুলায় স্ত্রীর মুখ চেপে ধরলেন স্বামী

চাঁদপুরে হাজীগঞ্জে জ্বলন্ত চুলায় স্ত্রীর মুখ চেপে ধরলেন স্বামী

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে মেহেদী রঙ না শুকাতেই স্বামীর দেয়া আগুনে দগ্ধ হয়েছেন মুন্নী (১৮)। দিনমজুর পিতার মেয়ে মুন্নীর ‘অপরাধ’ যৌতুকের টাকা না দেয়ার! স্বামীর দেয়া আগুনে শরীরের ৭০ শতাংশ দগ্ধ হওয়া মুন্নী এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন উইনিটে কাতরাচ্ছেন।

জানা গেছে, যৌতুকের ১ লাখ টাকা দিতে না পারায় গত ২৩ মার্চ (সোমবার) বিকেলে নববধূ মুন্নীর মুখ চাপা দিয়ে জ্বলন্ত গ্যাসের চুলায় চেপে ধরেন তার স্বামী সোহাগ (২৫)। এতে তার শরীর আগুন ধরে যায় এবং প্রায় ৭০ শতাংশ পুড়ে যায়।

এলাকাবাসীরা জানান, হাজীগঞ্জ উপজেলার মনিনাগ গ্রামের হালদার বাড়ির আব্দুল লতিফের মেয়ে মুন্নীর (১৮) পার্শ্ববর্তী রায়চোঁ গ্রামের দুলালের ছেলে সোহাগের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের মেহেদীর রঙ শুকানোর আগেই যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দেয় শ্বশুর বাড়ির লোকজন। যৌতুক দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এক পর্যায়ে স্বামী সোহাগ গ্যাসের চুলার আগুনে মুন্নীর শরীর জলসে দেয়।

ওই ঘটনার পর মুন্নীকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করেন তার বাবা-মা। পরে ডাক্তাররা ঢাকায় রেফার করেন। কিন্তু আর্থিক অনটনে তার চিকিৎসা করাতে না পেরে নিরুপায় বাবা-মা মুন্নীকে বাড়িতেই রেখে দেন। পরে গত ৪ এপ্রিল বুধবার গভীর রাতে স্থানীয়রা খবর পেয়ে বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানান।

হাজীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়ূয়া জানান, মুন্নির এ অবস্থার খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ ও বেসরকারি হাসপাতাল সমিতির উদ্যোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর ব্যব্স্থা করি।

স্থানীয় সাংসদ মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি নূরজাহান বেগম মুক্তা মুন্নীর চিকিৎসার ভার গ্রহণ করেছেন।

বর্তমানে দগ্ধ মুন্নী ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন। হতভাগ্য মুন্নী চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ১০ নং ওয়ার্ড মনিনাগ গ্রামের হালদার বাড়ির দিনমজুর আব্দুল লতিফের মেয়ে। আর তার স্বামী সোহাগ (২৫) উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের রায়চোঁ-নোয়াহাট গ্রামের ভুইয়া বাড়ির দুলালের ছেলে। তারা হাজীগঞ্জ বাজারে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।

ঢামেক হাসপাতালে মুন্নীর মা লাইলি বেগম বলেন, তিন মাস আগে পারিবারিকভাবে সোহাগের সঙ্গে মুন্নীর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় কিছু টাকা জামাইকে (সোহাগ) দিয়েছিলাম। কিন্তু বিয়ের দুই মাস না যেতেই এক লাখ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ-সৃষ্টি করে। টাকা দিতে না পারায় ২৩ মার্চ আমাদের ভাড়া বাসায় মুন্নীর মুখে চাপা দিয়ে গ্যাসের চুলার উপর ধরে রাখে। এ সময় মেয়ের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে সোহাককে গণপিটুনি দেয়। এরপর তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় স্থানীয়রা।