স্মার্ট ক্যাশ বাংলাদেশ লি. নামে মোবাইল ব্যাংকিং অনলাইন কোম্পানী চাঁদপুরে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। এ বিষয়ে এখন চাঁদপুরের এজেন্টরা অনেকটা অসহায় হয়ে দিনযাপন করছে।
এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোম্পানীর মালিক পক্ষের প্রতারণায় গ্রাহক এবং মার্কেটিং প্রতিনিধিদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি ও তুমুল সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে গেছে, গত প্রায় ৪ মাস পূর্বে কোম্পানীর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক একেএম ফজলে রাব্বি শুভ, চেয়ারম্যান মোঃ হুমায়ুন কবির, পরিচালক মোঃ আমিরুল হোসাইন উদ্যোগ নিয়ে ঢাকা গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্সের ৮ তালায় ৮১/৮২নং অফিস কক্ষে এইচআর মাল্টিমিডিয়ার ব্যানারে স্মার্টক্যাশ বাংলাদেশ লি. মোবাইল ব্যাংকিং অনলাইন কোম্পানীর নামে একটি কোম্পানী চালু করে। চালুর পর থেকে অতিউৎসাহ ও নিয়োগপ্রাপ্তদের লোভনীয় বেতনের অফারে চাঁদপুরে সারাদেশের ন্যায় মার্কেটিং ম্যানেজার পদে কিছু উদ্যমী যুবক নিয়োগ দেয়। নিয়োগের পর থেকে দেদারছে চলতে থাকে কোম্পানীর কার্যক্রম। প্রতি মাসে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার লেনদেন চলতে থাকে।
চাঁদপুরের বিভিন্ন জায়গায় স্মার্ট ক্যাশ ব্যানার সাটিয়ে মার্কেটিং ম্যানেজাররা গ্রাহকদেরকে লেনদেনের মাধ্যমে সেবা দিয়ে আসছিলেন। এর মধ্যে চাঁদপুরে প্রায় শতাধিক গ্রাহকের ১০ লক্ষাধিক টাকা কোম্পানি হাতিয়ে নেওয়ায় তারা এখন অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছে।
দেখা যায়, চাঁদপুর আদালত প্রাঙ্গনের সামনে, বিটি রোড মাথায়, ছায়াবাণী মোড়ের সামনে, সরকারি জেনারেল হাসাতালের সামনে, মহামায়া, দাসাদী, ফরিদগঞ্জ কালীরবাজার, হাইমচর, মুন্সিরহাট, কাজির বাজার, গল্লাক, চান্দ্রা, দেবপুর, হাজীগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল স্মার্ট ক্যাশের গ্রাহকরা। শহরের বিভিন্ন স্থানে রঙিন ব্যানারে লোভনীয় অফারের মধ্যে কোম্পানী কর্তৃক লেখা ছিল ‘একটি সিমে ৮টি কোম্পানীর মোবাইল ব্যাংকিং সেবা’। সেবাগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল বিকাশ, ডাচ বাংলা, ইউ ক্যাশ, এম ক্যাশ, শিউর ক্যাশ, মাই ক্যাশ, আইএআইসি ক্যাশ। কোম্পানী কর্তৃক চাঁদপুরে নিয়োগপ্রাপ্ত জেলা মার্কেটিং ম্যানেজার জাহাঙ্গীর খান, সদর থানার সেলস ম্যানেজার বিল্লাল পাটওয়ারী ও রাজু গাজীর মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে কোম্পানীর সার্ভার থেকে ভার্চুয়াল স্মার্ট ক্যাশ লোড বিক্রি করা হতো।
এভাবে তাদের কার্যক্রম চলমান থাকার পর গত ১২ মে মঙ্গলবার হঠাৎ করে চাঁদপুরসহ সমগ্র বাংলাদেশের গ্রাহকদের কাছে বিক্রিত স্মার্ট ক্যাশের লোড অনলাইনের মাধ্যমে কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম ফজলে রাব্বি তা শুভ নিজের আয়ত্বে নিয়ে যায়। এ সময় গ্রাহকরা তাদের একাউন্টে কোনো ব্যালেন্স না থাকায় তারা হায়-হুতাশ করতে থাকে।
একপর্যায়ে গ্রাহক ও মার্কেটিং ম্যানেজারদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। এতে করে কোম্পানীর জাহাঙ্গীর আলম যখন বুঝতে পেরেছে যে, কোম্পানীটি একটি ভুয়া অনলাইন কোম্পানী তখন কোম্পানীর সাথে তার লেনদেনের সকল দলিলপত্রাদি নিয়ে আদালতে একটি মামলা করে বলে জানা যায়।
মার্কেটিং ম্যানেজার সূত্রে আরো জানা যায়, স্মার্ট ক্যাশ নামে এ ভুয়া প্রতিষ্ঠানের এমডি ফজলে রাব্বি শুভ রাজনৈতিক নেতাদের সাইনবোর্ডে কোম্পানীটিকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে সে কোটি কোটি টাকা নিয়ে আত্মগোপন করায় কোম্পানীর সকল গ্রাহক হতাশায় ভুগছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের ক’জন গ্রাহক জানায়, তাদের কাছে লেনদেনের সকলপ্রকার স্লিপ, ব্যাংক স্লিপসহ অন্যান্য প্রমাণাদি রয়েছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের সচেতন ক’জন ব্যবসায়ীরা জানান, যে কোনো কোম্পানীর সাথে সম্পৃক্ত হয়ে সতর্কতা অবলম্বন করে কাজ করা উচিত।
চাঁদপুর টাইমস : এমআরআর/২০১৫
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur