Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরে সমকাল জাতীয় স্কুল বিজ্ঞান বিতর্ক উৎসব সম্পন্ন
চাঁদপুরে সমকাল জাতীয় স্কুল বিজ্ঞান বিতর্ক উৎসব সম্পন্ন

চাঁদপুরে সমকাল জাতীয় স্কুল বিজ্ঞান বিতর্ক উৎসব সম্পন্ন

‘বিতর্ক মানেই যুক্তি, বিজ্ঞানে মুক্তি’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে চাঁদপুরে উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে সমকাল-বিএফএফ জাতীয় স্কুল বিজ্ঞান বিতর্ক উৎসব- ২০১৯ সম্পন্ন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার(১১ এপ্রিল) সকাল ৯টায় থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চাঁদপুর প্রেসক্লাবে জেলার ৮ স্কুলের বিতার্কিকদের প্রাণবন্ত যুক্তিতর্ক এবং উপস্থিতিতে এই উৎসব সম্পন্ন হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় বিতর্ক উৎসবের প্রথম পর্বের প্রধান অতিথি হিসেবে এর উদ্বোধন করেন, চাঁদপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. মঈনুল হাসান।

বিকেলে সমাপনি পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ দলের হাতে পুরস্কার তুলে দেন স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডা. সৈয়দা বদরুন্নাহার চৌধুরী।

এই প্রাণবন্ত বিতর্কে চাঁদপুর শহরের বাবুরহাট স্কুল এন্ড কলেজ হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়কে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। সেরা বক্তা হিসেবে নির্বাচিত হন চ্যাম্পিয়ন দলের দলনেতা সানজিদা আক্তার নিলা। বিতর্কে অংশ নেয়া স্কুলগুলো হচ্ছে- বাবুরহাট স্কুল এন্ড কলেজ, চাঁদপুর মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, লেডী দেহলভী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, লেডী প্রতিমা মিত্র উচ্চ বিদ্যালয়, পুরাণবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নূরিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এবং গণি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়।

উদ্বোধন পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. মঈনুল হাসান বলেন, বিতর্ক একজন মানুষকে সার্বিকভাবে পরিপূর্ণ করে তুলে। বিতর্কের মাধ্যমে ঝংধরা মগজকে সচল করতে পারে এবং মগজের ক্লান্তি দূর হয়। বিতর্ক শিক্ষার্থীদের সহিষ্ণুতা-সহনশীলতার শিক্ষা দেয়। আর বিজ্ঞান ভিক্তিক এই বিতর্ক প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের জন্যে বিজ্ঞানমনষ্ক করে তুলতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। সমকাল এই কাজটি করায় আমি তাদের স্বাগত এবং ধন্যবাদ জানাই।

তিনি বলেন, বিজ্ঞানই শক্তি। এই বিতর্ক বিজ্ঞানকে সমৃদ্ধ করবে এবং জাতির কল্যানে সহায়ক হবে। আজকের এই বিতর্ক অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান চর্চায় আরো উৎসাহী হবে। তিনি স্কুল পর্যায়ে বিজ্ঞানভিত্তিক এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করার কথা জানান। কারণ একজন শিক্ষার্থী বিতর্কে অংশ নিলে তাকে অনেক প্রস্তুত হয়ে আসতে হয়। তার তথ্য-উপাথ্য যুক্ত থাকতে হয়। তাই প্রতিটি স্কুলে বিতর্ক প্রতিযোগিতার আহ্বান জানান তিনি।

উদ্বোধকের বক্তব্যে, স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডা. সৈয়দা বদরুন্নাহার চৌধুরী বলেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা এই বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেয়েছি। জাতির পিতা যে স্বপ্ন নিয়ে আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন সেই স্বপ্ন পূরণে তোমার যারা নতুন প্রজন্ম রয়েছ তাদের এগিয়ে আসতে হবে। তোমরা নিজেদের যোগ্য নাগরীক করে গড়ে তুলেতে হবে। তিনি বলেন, আজকের পৃথিবী বিজ্ঞান ছাড়া কল্পনা করা যায় না। তাই নতুন প্রজন্মকে বিজ্ঞান মনষ্ক করে গড়ে তুলতে হবে। সমকালের এই বিজ্ঞান বিতর্ক উৎসব আর সাফল্য অর্জন করুক।

উদ্বোধনী ও সমাপনি অনুষ্ঠানে সুহৃদ সমকাল চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি ডা. পীযূষ কান্তি বড়–য়ার সভাপতিত্বে ও চাঁদপুর বিতর্ক একাডেমীর শিক্ষক রাসেল হাসানের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, জেলা শিশু বিষয়খ কর্মকর্তা মো. কাউছার আহমেদ, চাঁদপুর সরকারি কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বাহার, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির জেলা শাখার সভাপতি ড. কাজী হাসেম, পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজের সহকারি অধ্যাপক হাবিবুর রহমান পাটওয়ারী।

বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন, চাঁদপুর সরকারি কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বাহার, চাঁদপুর বিতর্ক একাডেমীর অধ্যক্ষ ডা. পীযূষ কান্তি বড়–য়া, বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদের সহ-সভাপতি মুক্তা পিযূষ, পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজের সহকারি অধ্যাপক হাবিবুর রহমান পাটওয়ারী। মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন, বিতর্ক একাডেমীর শিক্ষক রাসেল হাসান। বিতর্ক উৎসসের সমন্বয়কারি ছিলেন, সমকালের চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন সুহৃদ সমাবেশের সহ-সভাপতি আবু সায়েম, সাধারণ সম্পাদক মো. খায়রুল আহছান সুফিয়ান, সহৃদ খায়রুল আলম।

এর আগে সমবেতস্বরে জাতীয় সংঙ্গীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে এই বিতর্ক উৎসবের শুভ সূচনা করা হয়। পরে সুহৃদ সমকাল চাঁদপুর জেলা শাখার প্রয়াত সাবেক সভাপতি পীযূষ কান্তি রায় চৌধুরীর স্বরণে ১মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়। এসময় প্রয়াত পীযূষ কান্তি রায় চৌধুরীর স্ত্রী মীরা রায় চৌধুরী।

অন্যান্যে মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক প্রতিনিধি, অভিভাবকসহ সাংবাদিক ও সুধিজন।

প্রতিবেদক:আশিক বিন রহিম
১১ এপ্রিল,২০১৯