Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরে মেঘনা বাঁধ রক্ষায় অবৈধ বালি ব্যবসা বন্ধে মানববন্ধন
চাঁদপুরে মেঘনা বাঁধ রক্ষায় অবৈধ বালি ব্যবসা বন্ধে মানববন্ধন

চাঁদপুরে মেঘনা বাঁধ রক্ষায় অবৈধ বালি ব্যবসা বন্ধে মানববন্ধন

চাঁদপুরে মেঘনা পাড়ে অবৈধ বালির ব্যবসা বন্ধে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী। বুধবার(১৭ এপ্রিল) দুুপুরে চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড রামদাসদী গ্রামে নদী ভাঙ্গন রোধে কয়েক শতাধিক নারী-পুরুষ মানববন্ধনে অংশগ্রহন করেন।

লতিফ খান, আলম খান, আব্দুল হক, গোলাপ খা ও সুমন খাসহ ভূক্তভোগিরা বলেন, টাঙ্গাইলের আহছান উল্লাহ মাস্টার নামে জনৈক ব্যক্তি লিকলেইম কোম্পানীর নাম করে এই স্থানে ফসলী জমি ও পুকুর ভরাট করে বালু স্তুপ তৈরি করছে। যার কারনে শহর রক্ষা বাঁধকে হুমকির মুখে ফেলেছে। শুধু তাই নয়, বালুর স্তুপ এতটাই উঁচু হয়েছে যে, পরিবেশ বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। আশে পাশের বাড়ির লোকজন এই বালুর কারণে বসবাস করতে পারছে না। হুমকির মুখে পড়ছে ফসলী জমিগুলো।

এলাকাবাসী আরো জানান, বালুর স্তুপের কারণে শহর রক্ষা বাঁধের অনেক সিসি ব্লক দেবে গেছে। আমরা চাই এখান থেকে এই অবৈধ বালুর ব্যভসা যেন দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হয়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গহণের জন্য জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পরিবেশ অধিদপ্তর, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে আমরা লিখিত আবেদন করেছি।

লিকলেইন কোম্পানীর ম্যানেজার নবীন খান জানান, এই কাজটির জন্য তাদের অনুমতি রয়েছে। আর সেই অনুমতির কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। আমরা ২/১ দিনের মধ্যে সেই কাগজপত্র চাঁদপুরের প্রশাসনকে দেখাতে পারব। এ বিষয়ে কেয়ারটেকার মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, আমি এখানে কয়েক যাবত এসেছি। আমার কাজ এখানে শুধু দেখা শুনা করা। কি কারনে বালু জমা রাখা হচ্ছে এবং বালু কোথায় যাবে, তা আমার জানা নেই।

লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নে রামদাসদী গ্রামে মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থর পরিদর্শনে আসেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জল হোসেন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ওয়াহিদুর রহমান ভূঁইয়াসহ প্রশসনের অন্যান্যরা।

এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জল হোসেন বলেন, বৈধ কাগজপত্র না দেখানো পর্যন্ত লিকলেইম কোম্পানীর এখানে কাজ বন্ধ থাকবে। যতক্ষণ পর্যন্ত লিকলেইম কোম্পানীর কর্তৃপক্ষ কাগজপত্র দেখাতে না পারবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কাজ বন্ধ থাকবে। ২০১০ সালের বালু রক্ষায় আইন আছে।

তিনি আরো জানান, লিকলেইম কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। তারা আগামী ২/১ দিনের মধ্যে তাদের কাগজপত্র প্রশাসনকে দেখাবে। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এমন কোন কাজ এখানে করা যাবে না। বাতাসে বালু উড়ে এখানে ক্ষতি হচ্ছে। তবে লিকলেইম কোম্পানী তাদের কাগজপত্র দেখালে আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নিবে আমরা তাই করব।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ওয়াহিদুর রহমান ভূঁইয়া জানান, পুরাণবাজার ইব্রাহিমপুর ও সাখুয়ার এটি প্রজেক্ট। ২০১২ সালে ৫ হাজার ৮শ’ ৩০ মিটার প্রজেক্টের কাজ প্রথম ধাপে সমাপ্ত হয়। নদী ভাঙ্গা গড়ার খেলা আমরা রিপেয়ারিং করি। যারা এখানে বালু ভরাটের কাজ করছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব। ২০১৫ সালে ৫ হাজার ৮শ’ ৩০ থেকে ৬ হাজার ১শ’ মিটার কাজ শেষ হয়। জনগণ তার সুফল ভোগ করছে। যদি এই প্রজেক্টের কাজ না হত তাহলে নদী ভাঙ্গনের ফলে মূল বেরী বাঁধ ধ্বংস হয়ে যেত।

প্রতিবেদক:শরীফুল ইসলাম
১৭ এপ্রিল,২০১৯