Home / চাঁদপুর / নিরাপদ রুট হিসেবে অতি সহজে চাঁদপুরে মাদকের প্রসার ঘটছে
চাঁদপুরে মাদকের প্রসার ঘটছে, যোগাযোগ সুবিধা ও নিরাপদ রুট

নিরাপদ রুট হিসেবে অতি সহজে চাঁদপুরে মাদকের প্রসার ঘটছে

যোগাযোগ সুবিধা ও নিরাপদ রুট হিসেবে চাঁদপুরের দক্ষিণে মাদকের ব্যবসার প্রসারও ঘটছে ব্যাপকভাবে। কক্সবাজার-টেকনাফ ও কুমিল্লা সীমান্ত এলাকা থেকে অতি সহজে চাঁদপুরে বিভিন্ন মাধ্যমে মাদক প্রবেশ করছে।

বিশেষ করে চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরি রুটে অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে থাকে। মাদক ব্যবসায়ীরা এ রুটের হরিণা ফেরিঘাটকে অনেকটা নিরাপদ হিসেবে ব্যবহার করছে।

আর এখান থেকে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় মাদক পাচার করে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী চক্রটি।

বিগত সময়ের তুলনায় বর্তমানে ওই অঞ্চলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও পুলিশ প্রায়ই অভিযান পরিচলনা করলেও কোনোভাবে বন্ধ করা যাচ্ছে না মাদকের পাচার ও ব্যবসা।

মাদক ও অর্থের ভাগাভাগি নিয়ে নিজেদের মধ্যে এর আগে মারামারির ঘটনাও ঘটেছে। বর্তমানে এরা কৌশল পরিবর্তন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে মাদক পাচার ও ব্যবসা করে যাচ্ছে।

চাঁদপুর সদর উপজেলার চান্দ্রা ও হানারচর ইউনিয়ন দুটি মাদক ব্যবসার প্রধান স্থান হিসেবে ব্যাপক পরিচিত। প্রতিদিন ওই এলাকা মাদকের ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীদের পদচারণায় জমজমাট থাকে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ইতোমধ্যে চান্দ্রা এলাকাসহ অন্যান্য স্থানে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীকে আটকও করেছে। তারপরও বন্ধ হয়নি মাদক ব্যবসা। মাদকের ডিলাররা রুট পরিবর্তন করে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। ডিলারদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে অর্ধশতাধিক ভ্রাম্যমাণ মাদক বিক্রেতা।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, চান্দ্রা ইউনিয়নের চৌরাস্তার মাদক সম্রাট রুবেল, কালাচান গাজী, নেছার ও চান্দ্রা বাজার এলাকার কবির, মাদক সম্রাজ্ঞী নার্গিসের ভাই সোহেল, শামীম, লেংটা বাবলুসহ কয়েকজন ইয়াবা, গাঁজা বিক্রি করে আসছে। আর এসব মাদকের ভাসমান হকার ও ডিলারের কাছ থেকে প্রতিদিন চান্দ্রা বাজার এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি রাজনৈতিক ছদ্মাবরণে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

দেখা যায়, চান্দ্রা বাজার ও বিভিন্ন সড়কের পাশে হকাররা দাঁড়িয়ে থেকে বহিরাগত মাদকাসক্তদের কাছে ইয়াবা, ফেনসিডিল ও গাঁজা বিক্রি করে।

সম্প্রতি চান্দ্রার বাখরপুর এলাকার মাদক ব্যবসায়ী জামালকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ইয়াবাসহ আটক করার পর ওই এলাকার মাদকের ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীদের নাম একে একে প্রকাশ পেতে থাকে। মাদক ব্যবসায়ী কালাচান গাজী ও রুবেল মাদক ব্যবসার মাধ্যমে বিপুল অর্থবিত্তের মালিকও বনে গেছে বলে নানা সূত্রে জানা গেছে।

এছাড়া হানারচর ইউনিয়নের হরিণা ফেরিঘাট এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের মাধ্যমে স্থানীয় একটি চক্র দেশের নানা স্থানে ইয়াবা পাচার করে আসছে। কিছু দিন আগে মাদক ব্যবসার অভিযোগে সেন্টুসহ চারজনকে গভীর রাতে জব্বর ঢালীর দোকান এলাকা থেকে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ গ্রেফতার করে।

মাদক ব্যবসা নিয়ে চান্দ্রা ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি খানজাহান আলী কালু পাটোয়ারী মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নিজের অসহায়ত্ত প্রকাশ করে কিছু বলতে অপারগতা জানান।

জানা যায়, মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে গিয়ে এ ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে একবার মাদকাসক্তরা অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটিয়েছে। জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক একেএম দিদারুল ইসলাম বলেন, ‘চাঁদপুরের ওই অঞ্চলে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

শনিবার ভোরেও আমি চান্দ্রা ইউনিয়নে অভিযান চালিয়েছি। এর আগে ওইসব এলাকা থেকে বেশ কিছু মাদক ব্যবসায়ীকে আমরা আটক করেছি। এ পর্যন্ত ৪২টি মামলাও করা হয়েছে।’

করেসপন্ডেট,২৮ সেপেটম্বর ২০২০