চাঁদপুর

চাঁদপুরে জরাজীর্ণ টিনশেট ভবনে ট্রাফিক আবাসন

চাঁদপুরে জরাজীর্ণ টিনশেট ভবনে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ট্রাফিক ব্র্যাক হিসেবে আবাসন চলে আসছে। যারা প্রতিনিয়ত সড়কেও  কষ্ট করেন  এবং আবাসনে মানবেতর জীবন যাপন করে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। 
চাঁদপুরের অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের থাকার স্থান অনেকটা উন্নত,হলেও ট্রাফিক সদস্যদের আবাসনের তেমন কোন উন্নত ব্যবস্থা নেই। 

সরজমিনে দেখা গেছে চাঁদপুর সদর মডেল থানা প্রাঙ্গনে ২য় তলা একটি ভবনে চাঁদপুর ট্রাফিক বিভাগের অফিসিয়াল কার্যক্রম পরিচালনার পাশা পাশি একই ভবনের ৩/৪ টি কক্ষ আবাসন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

এছাড়া চাঁদপুর ট্রাফিক বিভাগের সদস্যদের থাকার জন্য উন্নত কোন  ব্র্যাক বা আলাদা কোন ভবন নেই। তাদের আবাসনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় দেখা গেছে দীর্ঘ ১০ বছরেররও বেশি সময় ধরে চাঁদপুর সাব রেজিস্ট্রার অফিসের পাশে সাবেক আদালতের একটি টিনশেডের চৌচালা ঘরকে চাঁদপুর ট্রাফিক ব্র্যাক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

যা বর্তমানে একেবারেই জরাজীর্ণ হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বহু বছরের পুরাতন যে টিনশেড ঘর টি একেবারেই থাকার অনপুযোগী সেটিতেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রাফিক সদস্যরা রাত দিন পার করছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে ওই চৌচালা  টিনসেট ঘর টির আধাপাকা দেয়ালের অস্তর উঠে গিয়ে  ইট, বালু খসে পড়ছে। উপরের টিনগুলো মরিচা ধরে পড়ে আছে।  এছাড়া দরজা, জানালাসহ  বাহিরের ভেড়াগুলো ভাঙ্গা চুরা অবস্থায় রয়েছে। যার ভেতরে একজন মানুষ থাকার মতো তেমন কোনো পরিবেশ পরিস্থিতি নেই।

শুধু তাই নয় আবাসনের বাহিরেও ট্রাফিক বিভাগে কোন স্যানিটেশনের কোন ব্যবস্থা নেই। টয়লেট এবং ডাইনিং রুমও নেই।  সবকিছু মিলিয়ে ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে জীবন যাপন করছেন চাঁদপুর ট্রাফিক বিভাগের পুলিশ সদস্যরা। 

জানা যায়, চাঁদপুর সদর ট্রাফিক বিভাগে সর্বমোট ৩৩ জন ট্রাফিক সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে টি আই ২ জন টিএসআই ৩ জন এবং এটিএসআই ৮ জন। আর বাকি ২২ জন কনস্টেবল হিসেবে রয়েছেন।

চাঁদপুর মডেল থানা প্রাঙ্গণে ট্রাফিক বিভাগের দ্বিতীয় তলার যে ভবনটি রয়েছে। ওই ভবনের নিচ তলার দুটি কক্ষ অফিস কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যবহার করা হচ্ছে। আর বাকি একটি রুম এবং দ্বিতীয় তলার দুটি রুম কে ট্রাফিক ব্রাক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। অফিস ভবনের কক্ষগুলোতে যে কজন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা থাকছেন তারাও জড়োসড়ো হয়ে কোনরকম দিন পার করে যাচ্ছেন।

খবর নিয়ে জানা যায় সাবেক আদালতের যে টিনশেড ঘর রয়েছে ওই ঘরটিতে পূর্বে থেকে ৬/৭ জন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য থাকতেন। অনেকের বদলির কারণে বর্তমানে সেখানে ৩ জন পুলিশ সদস্য থাকছেন বলে জানা গেছে। 
চাঁদপুর ট্রাফিক বিভাগের আবাসনের জন্য ব্র্যাকের কোন ব্যবস্থা না থাকায় এবং উন্নত কোন ভবন না থাকায় চাকরি জীবনে কেউ, কেউ আলাদাভাবে বাসা ভাড়া করে থাকছেন। আবার কেউ, কেউ এ মানবেতর জীবন কে মেনে নিয়েই মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে ওই ঝুঁকিপূর্ণ টিনশেড ঘরেই কোনরকম দিন পার করছেন। 

ট্রাফিক পুলিশদের থাকার জন্য অস্থায়ীভাবে চৌচালা যে টিনশেড ঘর টি ব্রাক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেটি যেকোনো মুহূর্তেই ধসে পড়ে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। একই সাথে এই দুর্ঘটনার শিকার হয়ে কোন না কোন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য অকালে প্রাণও হারাতে পারেন বলে সচেতন মহলের ধারনা। তাই চাঁদপুর ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত সদস্যদের আবাসনের উন্নত ব্যবস্থা এবং অফিস কার্যক্রম পরিচালনার জন্য  জরুরি ভিত্তিতে একটি নতুন ভবন নির্মাণের প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল। 

এই বিষয়ে চাঁদপুর সদর ট্রাফিক বিভাগের টিআই সাইফুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, সরকারিভাবে অফিস এবং আমাদের ট্রাফিক সদস্যরা আবাসনের  ব্র্যাকের  জন্য আমরা ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নেওয়ার চেষ্টা করছি  এবং তা নেওয়ার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) স্নিগ্ধা সরকারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এই বিষয়টি তো আমার জানা নেই। আমি  বিস্তারিত জানাবো।  

প্রতিবেদকঃকবির হোসেন মিজি,১৫ নভেম্বর ২০২০

Share