চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নে বিয়ে বাড়ি থেকে ফেরার পথে কিশোর গ্যাংদের ছুরিকাঘাতে ২০ দিন ধরে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে রাব্বি তালুকদার (১৪) নামের এক যুবক। আহত যুবক চাঁদপুর সদর উপজেলার ৫ নং রামপুর ইউনিয়নের বাবলু তালুকদারের ছেলে। কিশোর গ্যাংরা এতটাই নির্দয়ভাবে তাকে ছুরিকাঘাত করেছেন, সে প্রায় মৃত্যু পথযাত্রী হয়ে বিগত ২০ দিন ধরে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ঈদুল আজহার পরের দিন রাত পোনে ১২ টায় দেবপুর বেপারী বাড়ির সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত রাব্বি জানায়, দীর্ঘদিন ধরে সে ঢাকায় একটি কনট্রাকশন কোম্পানির দায়িত্বে থেকে রাজ মিস্ত্রির কাজ করতো। কয়েক মাস আগে একই এলাকার হুমায়ন ফরিদের ছেলে
জাহিদ নয়ন ও বাবুল শেখের ছেলে ইয়াসিন নামের দুই কিশোর সেখানে কাজে যান। কাজের ফাঁকে একদিন তাদের দুজনকে ঝগড়া করতে দেখে আহত রাব্বি তাদেরকে ডাক দোহাই দিয়ে বলেন, তোরা কাজে এসে বেয়াদবি করিস কেনো। আর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাহিদ ও ইয়াসিন উল্টো তার সাথে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে গ্রামে এসে তাদের বড় ভাইকে দিয়ে দেখিয়ে দেবে বলে হুমকি দেন। রাব্বি ও তার পরিবার জানায়, পবিত্র ঈদুল আজহায় রাব্বি বাড়িতে বেড়াতে আসলে উল্লেখিত ইয়াসিন ও জাহিদসহ অজ্ঞাত বেশ কয়েকজন কিশোর সংবদ্ধ হয়ে তাকে একা পেয়ে অনেক মারধর করেন।
এমন মারধরের ঘটনার খবর পেয়ে রাব্বির মাতা তাদের স্বজনদের কাছে বিচার দিতে গেলে মিমাংসার কথা না বলে তারাও উল্টো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
পরবর্তীতে পবিত্র ঈদুল আজহার পরের দিন রাব্বি ওই এলাকার একটি বিয়ে বাড়ির গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে রাত পৌনে বারোটার সময় দেবপুর বেপারী বাড়ির সামনে পাঁচবাড়িয়া এলাকার শাহজাহান মিজির ছেলে মোঃ মুকাদ্দেস, দেলোয়ার হোসেন দেলুর ছেলে রাকিব, হুমায়ন ফরিদের ছেলে জাহিদ নয়ন, রফিকুল ইসলাম মিজির ছেলে রিয়াদ হোসেন, মোখলেসুর রহমান মিজির ছেলে মুন্না, সেফায়েত উল্লাহর ছেলে আবু আনছার, বাবুল শেখের ছেলে ইয়াসিন হোসেন, হোসেন শেখের ছেলে রবিউল হোসেন, নজরুল ইসলামের ছেলে নাঈম হোসেন সহ অজ্ঞাত আরো বেশ কয়েকজন কিশোর সংঘবদ্ধ হয়ে রাতের আঁধারে তাকে মারধর করে তার পেটে ছুরিকাঘাত করেন।
এতে সে রক্তাক্ত জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয় এলাকার লোকজন তার পরিচয় জানতে পেরে স্বজনদেরকে বিষয়টি অবগত করেন এবং তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
এ ঘটনায় আহতদের পিতা বাবলু তালুকদার বাদী হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন মামলা নং ২৬/৪৪৭। আর মামলা হওয়ার পর থেকেই মামলায় উল্লেখিত আসামিগণ পলাতক রয়েছেন বলে জানা গেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই শাহরিনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এই ঘটনায় আহত রাব্বির পিতা বাদী হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। আমি বেশ কয়েকবার তদন্তে গিয়েছি। কিন্তু আসামীরা পলাতক থাকার কারণে তাদেরকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি, ৩০ জুলাই ২০২২