দৈনিক প্রভাতী কাগজের আয়োজনে এবং বদলাও ইয়ুথ ফাউন্ডেশনের সার্বিক সহযোগিতায় চাঁদপুরে করোনাকালীন সম্মুখ যোদ্ধাদের নিয়ে প্রীতি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৪ ডিসেম্বর শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যান্ত চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়নে এই প্রীতি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলার সকল উপজেলার প্রায় অর্ধশতাধিক সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অংশগ্রহণ করে।
অনু্ষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান জুয়েল, সদর উপজেলা স্বাস্থ্যকর্মকতা ডা. সাজেদা পলিন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারি, চাঁদপুর বেলবিউ হাসপাতালের চেযারম্যান ডা. হারুনুর রশীদ সাগর,জেলা বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুন্নবী মাসুম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, যে কোন ক্রান্তিকালীন সময়ে সবচেয়ে বড় দরকার সঠিক নেতৃত্ব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করোনাকালিন সময়ে সঠিক নেতৃত্ব দিয়েছেন। করোনার দূর্যোগের মধ্যেই আমি চাঁদপুর দায়িত্বে পেয়েছি। প্রথমেই আমি এ জেলার সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে সভা করেছি। সবাইকে নিয়ে সমন্বয় করে কাজ করতে হয়েছে। আমি ও পুলিশ সুপার মিলে পরিকল্পনা করি কিভাবে কি করতে হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, শুধু আইন প্রয়োগ করে সবকিছু করা সম্ভব নয়। মানুষকে বোঝাতে হবে এবং সচেতন করতে হবে। করোনাকালে প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ ভান্ডার খুলে দেয়া হয়েছে। তাই চাঁদপুরে সকল শ্রেণীর পেশার মানুষদের খাবার পৌঁছে দেয়া হয়েছে। চাঁদপুরে কেউ খাদ্য না পেয়ে মারা গেছে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। সমাজের বিত্তশালীদেরও কিছু দায়িত্ব রয়েছে। তাদের আশপাশের কষ্টে থাকা মানুষদের সাহায্য করা উচিত।
জেলা প্রশাসক উপস্থিত করোনাযোদ্ধাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, যারা ভালো কাজ করে তারাই সমালোচিত হয়। যারা বাসায় বসে থাকে তারা সমালোচনাই করতে পারবে অন্য কিছু পারবে না। আপনারা ভালো কাজ করবেন তাঁর প্রতিদান এবং সম্মান আল্লাহ্ আপনাদের দিবেন। করোনাভাইরাস এখনো শেষ হয়নি। তাই আমাদের সচেতন থাকতে হবে এবং মাস্ক পরিধান করতে হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) সুদীপ্ত রায় বলেন, ৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিলো, তখন আমাদের শত্রুরা ছিলো চিহ্নিত। কাদের সাথে যুদ্ধ করতে হবে আমরা জানতাম। কিন্তু এসময় আমাদের যে যুদ্ধ করছি, তা হচ্ছে অদৃশ্য শত্রু। অনেক স্মৃতি রয়েছে যা বললে চোখের পানি ধরে রাখা যায় না। বাংলাদেশ পুলিশ করোনাকালীনন সময়ে করোনার বিস্তাররোধে সর্ব ধরনের কাজ করেছে। পাশাপাশি খাবার নিয়েও মানুষের পাশে ছিলো। করোনা আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছে। যে কোন দুর্যোগে আমরা প্রত্যেকে মিলে কাজ করবো।
পৌরসভার মেয়র অ্যাড. জিল্লুর রহমান জুয়েল বক্তব্যে বলেন, বিগত দু’টি বছর আমরা করোনা ভাইরাসের কারনে একটি ভয়াবহ দূর্যোগের মধ্যে ছিলাম। সকলের সম্মিলিত অপচেষ্ঠায় আমরা সেই ক্লান্তিকাল পার করতে পেরেছি। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি অপেচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই বিজয়ের মাসে তারা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তারা ইস্যুবিহীন আন্দোলন করছে। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোও আমাদের মানবিক দায়িত্ব।
দৈনিক প্রভাতি কাগজ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক আব্দুল আউয়াল রুবেলের সঞ্চালনায়
করোনাকালীন সম্মুখযোদ্ধাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল, দৈনিক চাঁদপুর খবরের সম্পাদক ও প্রকাশক সোহেল রুশদী, বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন চাঁদপুর জেলা সভাপতি মাওলানা জয়নাল আবেদিন, জেলা প্রশাসন স্বেচ্ছাসেবক টিমের ওমর ফারুক, কমিউনিটি ক্নিনিকের মেডিকেল অফিসার পাপিয়া শেলি, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির পক্ষে খান আতাউর রহমান, কিউআরসি’র টিম লিডার নাজমুল হাসান বাঁধন, স্যোশাল এইডার ডেপলাপমেন্টের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, আফসানা পাটোয়ারী।
অনুষ্ঠান শেষে চাঁদপুরের করোনাকালীন সম্মুখ যোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান করা হয়।
প্রতিবেদকঃ আশিক বিন রহিম, ৪ ডিসেম্বর ২০২১