Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আবদুল করিম পাটওয়ারীর মৃত্যুবার্ষিকী
Abdul Karim
মরহুম আবদুল করিম পাটওয়ারী (ফাইল ছবি)

চাঁদপুরের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আবদুল করিম পাটওয়ারীর মৃত্যুবার্ষিকী

২১ জানুয়ারি চাঁদপুরের সর্বজনশ্রদ্ধেয় প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক গণপরিষদ সদস্য ও চাঁদপুর পৌরসভার দু’বারের সফল চেয়ারম্যান মরহুম আবদুল করিম পাটওয়ারীর ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী।

২০০০ সালের এ দিনে ভোর ৬টা ৩৫ মিনিটে চাঁদপুর শহরের তালতলাস্থ নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এই দিনেই বিকেল ৫টায় চাঁদপুরে স্মরণাতীতকালের বিশাল জানাজা শেষে পাটওয়ারী বাড়ি জামে মসজিদের দক্ষিণ পাশে পারিবারিক কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁকে দাফন করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মরহুম আবদুল করিম পাটওয়ারী সকল রাজনৈতিক নেতা-কর্মী এবং চাঁদপুরবাসীর কাছে ছিলেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ও সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি। তাঁর মৃত্যুর সংবাদ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার মানুষ এই মহান নেতাকে শ্রদ্ধা জানাতে বাড়িতে এসে ভীড় জমায়। সর্বত্র নেমে আসে শোকের ছায়া।

মরহুম আবদুল করিম পাটওয়ারী শুধু রাজনীতিবিদই ছিলেন না, তিনি ছিলেন শান্তিপ্রিয় ব্যক্তিত্বসম্পন্ন একজন সাধারণ মানুষ এবং নির্ভীক সমাজসেবক। স্বাধীনতোত্তর চাঁদপুর পৌরসভাকে আধুনিকায়ন করতে তাঁর চিন্তা-চেতনা ও পরিকল্পনা ছিল অতুলনীয়।

সে জন্যে চাঁদপুরবাসী মৃতু্র আগে ও পরে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে আসছিলো। তিনি মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগেও সুস্পষ্টভাবে তাঁর ছেলেদের বলে গেছেন, ‘কষ্ট হলেও সৎ থাকার চেষ্টা করো।

আজ ২১ জানুয়ারি চাঁদপুরের সর্বজন শ্রদ্ধেয় সাবেক গণপরিষদ সদস্য ও চাঁদপুর পৌরসভার সফল চেয়ারম্যান, প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম আবদুল করিম পাটওয়ারীর ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পারিবারিকভাবে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ঃ তালতলাস্থ পাটওয়ারী বাড়িতে পারিবারিকভাবে সকাল থেকে কুরআন খতম, বাদ আছর পাটওয়ারী বাড়ি মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহ্ফিল। এছাড়া সকালে কবর জিয়ারত ও শ্রদ্ধা নিবেদন।

উক্ত কর্মসূচিতে দলীয় এবং সর্বস্তরের মানুষজনকে উপস্থিত থাকার জন্যে আহ্বান জানিয়েছেন মরহুমের জ্যেষ্ঠ পুত্র ও চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম দুলাল পাটওয়ারী।

জীবন বৃত্তান্ত-

 মরহুম আবদুল করিম পাটওয়ারী, পিতার নাম- মরহুম রৌশন আলী পাটওয়ারী, নিবাস-তালতলা পাটওয়ারী বাড়ি, চাঁদপুর, জন্ম- ১৯২৫ খ্রিঃ, মৃত্যু- ২১ জানুয়ারি ২০০০ খ্রিঃ, মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিলো ৭৫ বছর। পাকিস্তানকালীন দায়িত্ব- বিডি মেম্বার, এমপিএ, স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সংগ্রাম পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। বাংলাদেশ কালীন দায়িত্ব স্বাধীনতা উত্তর চাঁদপুর মহকুমার অস্থায়ী প্রশাসক ও প্রধান বিচারক, এমসিএ, তৎকালীন মহকুমা রিলিফ ও ফুড কমিটির সভাপতি, কৃষি উন্নয়ন কমিটির সভাপতি, চাঁদপুর পৌরসভার দুই-দুই বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান (১৯৭৩-১৯৮২), সামাজিক প্রতিনিধিত্ব-সাবেক চাঁদপুর মহকুমা রেডক্রস সোসাইটির ভাইস প্রেসিডেন্ট, চাঁদপুর জেলা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির আজীবন সদস্য ও কার্যকরী কমিটির সদস্য, ডায়াবেটিক সমিতির উপদেষ্টা কমিটির সদস্য, মাজহারুল হক বিএনবিএস চক্ষু হাসপাতালের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য, চাঁদপুর ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য, ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের চীফ ওয়ার্ডেন, চাঁদপুর জেলা কারাগারের অস্থায়ী পরিদর্শক, চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সদস্য, কচি-কাঁচার মেলা চাঁদপুর-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।

শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিনিধিত্ব-

বিষ্ণুদী আজিমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি, পাটওয়ারী বাড়ি জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি, বাসস্ট্যান্ড মসজিদে গোর-এ গরীবা-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি, আঞ্জুমানে খাদেমুল ইনসান, চাঁদপুর-এর প্রতিষ্ঠাতা (১৯৬৮ খ্রিঃ)।

রাজনৈতিক-

১৯৪৬ সালে মুসলিম লীগের একজন কর্মী হিসেবে রাজনীতিতে যোগদান। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হলে আওয়ামী লীগে যোগদান এবং দীর্ঘদিন চাঁদপুর মহকুমা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ভাষা আন্দোলনে চাঁদপুরে সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন ৫ ছেলে ও ২ মেয়ের জনক।

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।আপডেট : ৮:৪০ এএম, ২১জানুয়ারি ২০১৬, বুধবার
ডিএইচ