চাঁদপুর

চাঁদপুরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ডাস্টবিন : হুমকিতে জনস্বাস্থ্য

চাঁদপুরের ইতিহাস ঐতিহ্য বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে শতবছরের ঐতিহ্যবাহী চাঁদপুর পৌরসভা। একদিকে পৌরসভার উদ্যোগে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা যেমন পৌরবাসীসহ জেলাবাসীকে আকৃষ্ট করে; অপর দিকে এই জনপ্রিয় পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ময়লা আবর্জনা ফেলায় নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। এতে করে অনেক স্থানেই তৈরি হয়ে গেছে মিনি ডাস্টবিন।

শহরবাসীসহ গ্রাম থেকে আসা লোকজন পড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকরি পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানান চাঁদপুর পৌরবাসী।

সরেজমিনে দেখা যায়, চাঁদপুর শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়গুলো এখন ময়লা রাখার স্তূপে পরিণত হয়েছে মনে হয় দেখার কেউ নেই। চাঁদপুর শহরের হাজী মহসীন বা মাতৃপীঠ স্কুল সংলগ্ন, গুয়াখোলার প্রবেশ মুখ, মডেল থানা বা লেডী প্রতিমা মিত্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় গেইট, পৌরপার্ক বা ব্রীজ সংলগ্ন, জোড় পুকুরপাড়, নতুনবাজার মোড়, পালপাড়া, ট্রাক রোড়, ব্যাংক কলোনী, মুখার্জী ঘাটসহ শহরের অন্তত ২০ টি স্পটে শহরবাসী পৌরসভার নিয়মনীতিকে উপেক্ষা করে খোলা জায়গায় ময়লা আবর্জনা ফেলছে।

চাঁদপুরের শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ছায়াবানী মোড়। এই মোড়ে চারদিক থেকে ৪টি রাস্তা মিলিত হয়ে স্থানটি যানজটেরও সৃষ্টি করে। একে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ওষুধের ফার্মেসী, চশমার দোকানসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

এছাড়া শহরের এই অংশ দিয়ে সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু সড়কটি সোজা কালীবাড়ী এসে মিলিত হওয়ায় এটি বর্তমানে চাঁদপুর শহরের নাভীতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এ মোড়টিতে দীর্ঘদিন থেকে ডাস্টবিন হিসেবে স্থানীয়রা ব্যবহার করতে শুরু করে। পরবর্তীতে পৌর কর্তৃপক্ষ একে স্থায়ী ডাস্টবিন বানিয়ে ফেলে। রাস্তার পাশে একটি দেয়াল উঠিয়ে ডাস্টবিনটিকে রাস্তা থেকে আলাদা করলেও বাসা-বাড়ি থেকে ময়লা আবর্জনা সংগ্রহকারীরা ময়লা এনে দেয়ালের ওই পাশে না ফেলে সরাসরি রাস্তার পাশে ফেলে দেয়। এতেই ঘটে বিপত্তি।

ভুক্তভোগীদের একজন মেসার্স কলেজ অপটিকসের মালিক আবদুল মজিদ জানান, এখানে পেটের দায়ে বসে আছি দোকনে মানুষ আসতে চায় না বেচা-কেনা নেই কারণ ডাস্টবিনের ময়লা গন্ধ। বিশেষ করে সকাল ১২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ময়লার গাড়ী এখানকার আশেপাশের এলাকার ময়লাগুলো বাস স্ট্র্যান্ড স্বর্নখোলা রোড না জমিয়ে এখানে জমায়। এখানে ময়লা নেয়ার জন্য গাড়ীগুলো দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, তাই যানজটের সৃষ্টি হয়।’

পথচারী বাবুল আক্ষেপ করে বলেন, আর কিছুদিন এভাবে থাকলে চাঁদপুরের মানুষ যক্ষ্মা হাসপাতালে লাইন দেবে তখন কুলকিনারা পাইবো না। এই ডাস্টবিন সরানো খুবই দরকার।’

গাজী ফার্মেসী কর্র্তৃপক্ষ জানায়, আমাদের দোকানে যেসব কাস্টমার ওষুধের জন্য আসেন, তাদের বেশিরভাগ লোকেই নাকে হাত দিয়ে অনেক কষ্টে এসে ওষুধ নিয়ে আসে। শহরের নাভিতে আমাদের এখানে অনেকগুলো ওষুধের ফার্মেসী রয়েছে কিন্তু যে পরিমাে

দুলাল সুইটসের দিপংকর জানান, ‘সকালবেলা আমাদের নাস্তার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু এই ডাস্টবিনের ময়লার গন্ধে অনেকেই আমাদের এখানে নাস্তা করতে আসেন না। দু’একজন আসেন হয়তো দোকান পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করি সে হিসেবে।’

তবে এখানকার ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সম্মিলিত উদ্যোগে পৌর মেয়র বরারব এই ডাস্টবিনকে সরিয়ে ফেলার জন্য আবেদন করা হয়েছে, তাতে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

সচেতন মহলের অভিমত, এটিকে কোন অবস্থায়ই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই; বিষয়টি অবশ্যই সচেতনতার সাথেই গুরুত্ব দিয়ে সকলকে দেখতে হবে। বিশেষ করে যারা ময়লা পেলে এবং যারা ময়লা পরিস্কার করে উভয়ই কাজটিকে একটি জনগুরুত্বপূর্ণ কাজ ভেবেই করতে হবে।

পৌরসভার পক্ষ থেকে জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো থেকে ডাস্টবিন সরিয়ে অন্যত্র নেয়া জরুরি।

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।। আপডেট : ০৩:০০ এএম, ২০ ডিসেম্বর ২০১৫, রোববার

ডিএইচ/এমআরআর

Share