Home / সারাদেশ / গান শুনিয়ে ২৮৬ নারীকে বিয়ে, অতঃপর…
jakir

গান শুনিয়ে ২৮৬ নারীকে বিয়ে, অতঃপর…

গান শুনিয়ে ও ছবি দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকার ২৮৬ জন নারীকে বিয়ে করেছে লালমনিরহাটের জাকির। সম্প্রতি রাজধানীতে একটি ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর একে একে বের হয়ে আসছে এই যুবকের অপকর্মের আরো নানা কাহিনী।

বর্তমানে সে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় ধর্ষণ মামলায় রিমান্ডে রয়েছে। তেজগাঁও থানা সুত্র জানায়, ইউটিউবে গান শুনিয়ে নারীদের আকৃষ্ট করতো এই যুবক। কোনো কোনো সময় মোবাইল ফোনের ম্যাসেঞ্জারে ছবি কিংবা ভিডিও ক্লিপ পাঠিয়ে নারীদের ঘনিষ্ট হওয়ার চেষ্টা করতো সে। নারী পুরুষের আন্তরঙ্গ মুহুর্তের ছবি টার্গেটকৃত সুন্দরী নারীদের মোবাইল ফোনে পাঠিয়ে দিতো। গভীর রাতে ফোনে দীর্ঘ সময় কথা বলে নানা কৌশলে নারীদের ফুসলানোর চেষ্টাও করতো এই জাকির।

অনেক সময় বিবাহিত নারীদের স্বামীর সাথে বনিবনা না হলে মধ্যস্ততার কথা বলে ঐ নারীকেই বিয়ের প্রস্তাব দিতো সে। আবার আর্থিকভাবে দরিদ্র নারীদের সহায়তার কথা বলেও দুর্বলতার সুযোগ নিতো।

শনিবার সকাল সাড়ে দশটায় তেজগাঁও থানায় গিয়ে দেখা গেল পুলিশ হেফাজতে জাকিরকে একটি কক্ষে রাখা হয়েছে। লাল রংয়ের একটি চাদর মেঝেতে বিছিয়ে শুয়ে আছে। অনুমতি না থাকায় কক্ষের ভেতরে প্রবেশ করা গেল না। তবে বাইরে থেকে জাকির বলে ডাক দিলে সে প্রথমে মাথা উঁচিয়ে দেখার চেষ্টা করে; কিন্তু পরিচিত মুখ কাউকে না দেখে পুনরায় মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে আবারো শুয়ে থাকে সে। জাকিরের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক তৌফিক আহমেদ নয়া দিগন্তকে জানান, প্রতারণার মাধ্যমে ২৮৬টি বিয়ের অভিযোগে জাকির হোসেন ব্যাপারী নামে এই যুবককে দু’দিন আগে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে এখন ধর্ষণ মামলায় এ থানাতেই রিমান্ডে রয়েছে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরো জানান, ৩৮ বছর বয়সী এই যুবক এক যুগ ধরে বিভিন্ন সময়ে কখনও কাবিন করে কিংবা কখনো কাবিন ছাড়াই দেশের নানা অঞ্চলে ২৮৬ জন নারীকে প্রতারণা করে বিয়ে করেছেন। শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত জাকিরের বিবাহিত স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ১৪ জন নারী থানায় এসে এবং অনেকে মোবাইল ফোনেই জাকিরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন।

পুলিশের খাতায় দেখা গেল জাকিরের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন এমন নারীদের এদের মধ্যে রয়েছেন শাপলা বেগম, খাদিজা আক্তার, জাকিয়া আক্তার, রেবেকা সুলতানা, শর্মিলী আক্তার, সৈয়দা সাবিনা, নাদিরা আক্তার, রুমা বেগম, মৌ আক্তার, নুপুর, হাওয়া বেগম, শিলা বেগম প্রমূখ। তবে দুপুর পর্যন্ত এই প্রতিবেদক থানায় অবস্থান করলেও এই সময়ের মধ্যে অন্য কোনো নারী থানায় আসেননি। মামলার নথিতে জাকিরের গ্রামের বাড়ির ঠিকানা দেখানো হয়েছে থানা আদিতমারি, জেলা লালমনিরহাট। আর বর্তমান ঠিকানা দেখানো হয়েছে এ/পি সেবা ৩৭, আহসান মোল্লা রোড, হোসেন মার্কেট, গাজীপুর সিটি। সূত্র: নয়া দিগন্ত।