Home / জাতীয় / খুনিদের শাস্তি দেবই দেব : প্রধানমন্ত্রী
Hasina Press Conference
ফাইল ছবি

খুনিদের শাস্তি দেবই দেব : প্রধানমন্ত্রী

সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডগুলোর জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য তা করা হচ্ছে।

বিদেশিসহ সব হত্যাকাণ্ডের বিচারের অঙ্গীকার করে সে জন্য দেশের মানুষের সহযোগিতাও চেয়েছেন তিনি।

জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে সোমবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জনসভায় বক্তব্য রাখেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে খালেদা জিয়া দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।

“এখন তিনি বিদেশে বসে গুপ্তহত্যা শুরু করেছেন। যাকেই ধরা হয়, তারা শিবিরের অথবা বিএনপির লোক। যখনই দেশের মানুষ স্বস্তিতে তখনই এই হত্যাকাণ্ড, দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এই হত্যাকাণ্ড।”

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচার বানচাল করার উদ্দেশ্যে বিদেশিসহ অন্যদের হত্যা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসনে বিএনপিকে দায়ী করে তিনি বলেন, “আমার লাখো শহীদের রক্তে রাঙা পতাকা তাদের (যুদ্ধাপরাধী) হাতে দিয়েছিল জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রী। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে আজ যারা সাজাপ্রাপ্ত তারা তাদের কেবিনেটে বসিয়েছিল।”

বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে গুপ্তহত্যা চালানো হচ্ছে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, “গুপ্তহত্যা যারা করছে, তাদের কিছুকে খুঁজে বের করা হয়েছে।

“খুনিদের শাস্তি দেবই দেব, আমি শুধু বাংলাদেশের মানুষের সহযোগিতা চাই।”

“গুপ্তহত্যা, খুন যাই করুক না কেন, বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে পারবে না, বাংলাদেশের মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবে না,” বলেন তিনি।

বক্তব্যের শুরুতেই ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যার ঘটনাবলি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, মোশতাক আহমেদের পর জিয়াউর রহমান খুনিদের পুনর্বাসিত করেছিলেন।

“খুনিদের বিচার করা হয়নি, বরং বিভিন্নভাবে খুনিদের পুরস্কৃত করা হয়েছিল। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ দিয়ে বিচারের পথ বন্ধ করা হয়েছিল।”

“জিয়াউর রহমান খুনিদের রাজত্ব কায়েম করেছিল,” মন্তব্য করে শেখ হাসিনা ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলের কথা তুলে ধরেন।

“খুনের রাজত্ব কায়েম করে দেশকে ভিন্ন পথে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। খালেদা জিয়া একটা সন্ত্রাসী রাষ্ট্র তৈরি করেছিল। জিয়াউর রহমানের পথ ধরে তার স্ত্রী খুনের রাজত্ব কায়েম করেছিল।”

দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্যের বক্তৃতা দিতে ওঠেন সভায় সভাপতি শেখ হাসিনা।

মঞ্চে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম রয়েছেন।

জনসভায় যোগ দিতে সকাল থেকেই ঢাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং আশপাশের জেলাগুলো থেকে নেতাকর্মীরা বাস-ট্রাকে করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসতে থাকে।

ক্ষমতাসীন দলের জনসভা ঘিরে উদ্যান ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে হত্যার পর গ্রেপ্তার করা হয় মুক্তিযুদ্ধের শীর্ষ চার সংগঠক তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামানকে।

একই বছরের ৩ নভেম্বর কারাগারে হত্যা করা হয় জাতীয় এই চার নেতাকে। এরপর থেকে জাতীয় কলঙ্কময় এই দিনটি ‘জেল হত্যা দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।