নিজের সিএনজি স্কুটার ও স্বয়সম্ভল হারিয়ে খালাতো ভাইয়ের প্রতারনার ফাঁদে পড়ে মালদ্বীপ যাওয়ার স্বপ্ন ভঙ্গ হলো স্কুটার চালক ফয়সালের। আপন খালাতো ভাইয়ের প্রতারণার শিকার ফয়সাল হাওলাদার চাঁদপুর সদর উপজেলার ঘোষের হাটস্থ সেনগাঁও গ্রামের নানু হাওলাদারের ছেলে।
বিবাহিত জীবনে নিজের কেনা সিএনজি স্কুটার চালিয়ে মোটামুটি ভালোই চলছিলো তার সংসার জীবন। হঠাৎ তার চোখে বিদেশে নেয়ার স্বপ্ন এঁকে দেন আপন খালাতো ভাই একই গ্রামের রফিক পাটওয়ারীর ছেলে মালদ্বীপ প্রবাসী ফারুক পাটওয়ারী।
ফয়সাল জানায়, তারই আপন খালাতো ভাই ফারুক পাটওয়ারী ও তার বড় ভাই জাহাঙ্গীর পাটওয়ারী এবং তার স্ত্রী লিজা বেগম তাকে বিদেশে নিয়ে অধিক অর্থাউপার্জন করিয়ে দিবে বলে তার চালিত সিএনজি স্কুটার বিক্রি করার পরামর্শ দিয়ে তার কাছ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা নেন। টাকা নিয়ে খুব দ্রুত ৩ দিনের মধ্য পার্সপোট করতে বলেন।
খালাতো ভাই ফারুক পাটওয়ারীর কথামতো ৩ দিনে পার্সপোট বের করে দিবে বলে ফারকের লোক ১২ হাজার টাকা নেন। কিন্তু সেখানেও তারা ফয়সালের সাথে প্রতারনা করেন। ৩ দিনে পার্সপোট করে দিবে বলে সে পার্সপোর্ট করে দেন একমাস পর।
সে জানায় এভাবে তারা ফয়সালকে মালদ্বীপ নিবে বলে একের পর এক তাকে ঢাকায় যাতায়াত করাতে থাকেন। ফারুক পাটওয়ারী একের পর এক তাকে ফ্লাইটের তারিখ দিতে থাকেন। এভাবে প্রায় ১০/১৫ বার তাকে মালদ্বীপ নেয়ার তারিখ দিয়ে দিনের পর দিন হয়রানি করতে থাকেন।
সর্বশেষ ২ মার্চ তাকে মালদ্বীপ নেয়ার ফ্লাইটের ডেট দেন। এতবার প্রততারণার শিকার হয়েও তাদের কথামতো একবুক আশা নিয়ে ঢাকা বিমান বন্দরে যান ফয়সাল । সেখানে ইমেগেশন পুলিশ তাকে আটক করে এবং তার কাগজপত্র যাচাই করে দেখেন ২৮ দিন আগেই ওই বিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।
এদিকে ফয়সাল তার কেনা সিএনজি স্কটার ও স্বয়সম্ভল হারিয়ে বেকার হয়ে খুবই কষ্টে দিনযাপন করছেন। বিদেশে যাওয়ার আশায় এবং ভালো উপর্জন করবে বলে খালাতো ভাইয়ের আশ্বাসের পথ চেযে আছেন। অথচ ফারুক পাটওয়ারীর শশুর এবং ছোট ভাইকে বিদেশ নেয়ার জন্য ফয়সালের পরে টাকা জমা দেয়া হয়। গত কয়েকমাস আগে ফারুক পাটওয়ারী তার শশুর ও ছোট ভাইকে ঠিকই সময়মতো মালদ্বীপ নিয়ে গেছেন। কিন্তু ফয়সালকে মালদ্বীপ নেয়ার সে রাস্তা যেনো প্রতারণার ফাঁদে বন্ধ হয়ে গেছে।
কিন্তু বার বার এমন প্রতারনা ও হয়রানির শিকার হয়ে মালদ্বীপ যাওয়ার স্বপ্ন ভঙ্গ করে ফারুক পাটওয়ারীর কাছে তার বিদেশ যাওয়ার সাড়ে ৩ লাখ টাকা ফেরত চাইলে ফারুক পাটওয়ারী তা দিতে রাজি হননি । তাই ফয়সাল কোন উপায় খুঁজে না পেয়ে গত ৪ এপ্রিল চাঁদপুর পুলিশ সুপার বরাবর একটি অভিযোগ প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে মালদ্বীপ প্রবাসী ফারুক পাটওয়ারীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, বিদেশের ব্যাপারে তো একটু সমস্যা হতেই পারে। আমিতো তার টাকাটা অন্য লোকের কাছে দিয়েছি। তাতো ফেরত আনতে পারবো না। তাকে বলেছি কিছুদিন অপেক্ষা করতে তারপর সবকিছু গুছিয়ে তাকে মালদ্বীপ নিয়ে আসবো।
ফারুক পাটওয়ারী বার বার এমন আশ্বাস দিলেও তা কখনো বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেননি বলে অভিযোগ। তিনি শুধু একের পর এক আশ্বাস দিতে থাকেন কিন্তু ফয়সালকে মালদ্বীপ নেয়ার কোন গুরুত্ব দিচ্ছেন না।
তাই প্রতারণার সিকার ফয়সাল এমন প্রতারনার ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসতে এবং তার সিএনজি স্কুটার খোয়ানো টাকা ফেরত পেতে পুলিশ প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি