১৯২৫ সালের ১৮ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন নাচোলের কৃষক বিদ্রোহের নেত্রী ইলা মিত্র। তার বাবা নগেন্দ্ররনাথ সেন ছিলেন অবিভক্ত বাংলার ডেপুটি অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল। মা মনোরমা সেন। ইলা মিত্র বেথুন স্কুল ও কলেজ থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, আইএ ও অনার্সসহ বিএ পাস করেন।
১৯৪৪ সালে বিএ পাসের প্রায় ১৪ বছর পর ১৯৫৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে এমএ পাস করেন। ছাত্রাবস্থায়ই তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
পর্যায়ক্রমে যুক্ত হন গার্লস স্টোরস কমিটি, ছাত্র ফেডারেশন, মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি ও কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে। বিয়ের পর ১৯৪৫ সালে তিনি চলে আসেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের রামচন্দ্রপুরে। সেখানে তিনি মেয়েদের শিক্ষা ও বিভিন্ন সামাজিক সেবামূলক কাজে যুক্ত হন।
১৯৪৬-৪৭ সালে ফসলের দুই-তৃতীয়াংশের ওপর কৃষকের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে শুরু হয় তেভাগা আন্দোলন। তিনি নাচোলেরকৃষকদের সংগঠিত করার ক্ষেত্রে নিয়ামক ভূমিকা পালন করেন। তিনি হয়ে ওঠেন কৃষকদের ‘রাণী মা’।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গঠনে বলিষ্ঠ ভ‚মিকা রাখেন তিনি। রাজনৈতিক কারণে তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চারবার (১৯৬২ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত) কারাবরণ করেন; যদিও ভারত সরকার ‘স্বাধীনতা সংগ্রামী’ হিসেবে ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার অ্যাথলেটিকসে অবদানের জন্য তাকে সম্মাননা দেয়।
‘হিরোশিমার মেয়ে’ বইয়ের অনুবাদের জন্য তিনি সোভিয়েত ল্যান্ড নেহরু পুরস্কার পান। ইলা মিত্রের সংগ্রামী জীবন বাংলা অঞ্চলের প্রগতিশীল মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস। তিনি ২০০২ সালের ১৩ অক্টোবর কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
বার্তা কক্ষ , ১৮ অক্টোবর ২০১৯