Home / সারাদেশ / কুমিল্লা মুক্তদিবস আজ
মুক্তদিবস

কুমিল্লা মুক্তদিবস আজ

আজ ৮ ডিসেম্বর, কুমিল্লা মুক্তদিবস। একাত্তরের এ দিনে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পাকিস্তানি বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয় কুমিল্লা।

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের তথ্যমতে, ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর সীমান্তবর্তী বিবিরবাজার দিয়ে লেফটেন্যান্ট দিদারুল আলমের নেতৃত্বে একটি দল এবং অপর দুটি দল গোমতী নদী অতিক্রম করে কুমিল্লা শহরের ভাটপাড়া দিয়ে এবং চৌদ্দগ্রামের বাঘেরচর দিয়ে এসে বিমানবন্দরের হানাদার বাহিনীর ঘাঁটিতে আক্রমণ করে।

রাতভর পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পরাজিত পাকিস্তানি সেনারা বিমানবন্দরের ঘাঁটি ত্যাগ করে শেষ রাতে কুমিল্লার বরুড়ার দিকে ও ময়নামতি সেনা ছাউনিতে আত্মগোপন করে এবং কয়েকজন আত্মসমর্পণ করে। এভাবে বিমানবন্দরের প্রধান ঘাঁটি দখল করেন মুক্তিসেনারা।

১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রত্যুষে কুমিল্লা শহর শত্রুমুক্ত হয়। জনগণ আনন্দে উল্লাসে একে অন্যের সঙ্গে আলিঙ্গন ও ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি দিতে থাকেন। সকাল ৮টায় শহরে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত থেকে বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধারা শহরে প্রবেশ করেন। আনন্দিত উল্লাসিত জনগণ তাদের ফুল দিয়ে স্বাধীনতার অভিনন্দন জানায়।

সেদিনই বাংলাদেশ সরকারের পূর্বাঞ্চল প্রশাসনিক পরিষদের চেয়ারম্যান জহুর আহমেদ চৌধুরী, পূর্বাঞ্চলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কাজী রকিব উদ্দিন আহমদ, যুব শিবিরের উপদেষ্টা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহাম্মদ আলী, যুব শিবিরের পরিচালক প্রশিক্ষণ ড. মো. হাবিবুর রহমান, আবদুল আজিজ খান, আবদুর রশিদ ইঞ্জিনিয়ারসহ অন্য নেতারা কুমিল্লা বিমানবন্দরে পৌঁছান।

সেখান থেকে শহরের শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত আইন উদ্দিনকে নিয়ে বিকেলে কুমিল্লা টাউন হলে পৌঁছান তারা। এসময় বিজয়-উলাস, আনন্দ-বিষাদ মিশ্রিত এক অবর্ণনীয় দৃশ্যের অবতারণা হয়। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার মুহূর্তে জহুর আহমেদ চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট আহাম্মদ আলী যথাক্রমে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন। সেসময় অ্যাডভোকেট আহাম্মদ আলীকে কুমিল্লা জেলা বেসামরিক প্রশাসক নিয়োগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়।

কুমিল্লা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সফিউল আলম বাবুল বলেন, একাত্তরের ৮ ডিসেম্বর ভোরে কুমিল্লা হানাদার মুক্ত হয়। আগরতলা-সোনামুড়া থেকে সেদিন অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পায়ে হেঁটে আমি কুমিল্লায় প্রবেশ করি।

অগ্রবর্তী দল হিসেবে ছিল নবম বেঙ্গলের মুক্তিসেনারা। আক্রমণের নেতৃত্বে ছিল ১১ গুর্খা রেজিমেন্ট। কুমিল্লার আপামর জনগণ মুক্তিযোদ্ধাদের ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে মুক্তির উল্লাসে বরণ করে নেয় বলে তিনি জানান।

বার্তা কক্ষ, ৮ ডিসেম্বর ২০২২