কুমিল্লায় হত্যার দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড,আরেকজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

২০১২ সালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম আমানগন্ডায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে দিনমজুর জাহাঙ্গীর হোসেন (৫৫) হত্যা মামলায় একজনকে মৃত্যু দণ্ড আরেকজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন কুমিল্লার আদালত। ১৫ ফেব্রুয়ারী (বৃহস্পতিবার) বেলা সাড়ে ১২টায় কুমিল্লা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক মোছাঃ ফরিদা ইয়াসমিন এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত পলাতক আসামি হলেন সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানাধীন শান্তিনগর (নদরী পূর্ব পাড়) শ্যাম আজিজুর রহমান এর ছেলে মোঃ লিটন (২৬) এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামি হলেন কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার খোলপাশা গ্রামের মৃত হেলাল মিয়া ছেলে আঃ সোবহান প্রঃ তুফান (৫০)

মামলার বিবরণে জানাযায়- পূর্ব শত্রুতার বিরোধের জের ধরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই বাদীর ভগ্নিপতি দিনমজুর জাহাঙ্গীর হোসেন (৫৫) কে আমানগন্ডাস্থ বাদীর মৎস প্রকল্পে নিমিত টিনসেড ঘরে কোদাল ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাইয়া খুন করিয়া আসামিরা পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে ২০১২ সালের ১ আগস্ট নিহতের শ্যালক (স্ত্রীর ভাই) চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আগানগন্ডা গ্রামের মৃত জুলকু মিয়ার ছেলে মোঃ ফুল মিয়া বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ জেলার শান্তগঞ্জ উপজেলার শ্যামনগর গ্রামের আজিজুর রহমান এর ছেলে মোঃ লিটন (২৮) কে আসামি করে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি হত্যা মামলার দায়ের করিলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুলতান উদ্দিন তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইল ট্রেকিং এর মাধ্যমে ৯ আগস্ট আসামি মোঃ লিটন মিয়াকে সিলেট থেকে গ্রেফতার করে এবং বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে স্বীকার করেন যে, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার খোলশালা গ্রামের মৃত হেলাল মিয়ার ছেলে তুফান মিয়া হত্যা কান্ডের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। এরপর ২০১৩ সালের ২৩ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করেন। পরবর্তীতে মামলাটি বিচারে আসিলে রাষ্ট্রপক্ষে আসামিদ্বয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৪ সালের ৩ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে ৩০২/৩৪ ধারার বিধানমতে চার্জ গঠন করেন। তৎপর রাষ্ট্র পক্ষে মানীত ১৭জন সাক্ষীর মধ্যে ৯জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে যুক্তিতর্ক শুনানি অন্তে আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনাক্রমে আসামিদ্বয়ের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় পলাতক আসামি মোঃ লিটন মিয়াকে মৃত্যু দণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তাকে গলায় ফাঁসি দিয়ে ঝুলিয়ে মৃত্যু কার্যকর করার নির্দেশ প্রদান করেন এবং অপর আসামি আব্দুস সোবহান প্রঃ তুফান মিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত।
রায় ঘোষণাকালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামি মোঃ আঃ সোবহান প্রঃ তুফান মিয়া আদালত কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন এবং মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি মোঃ লিটন মিয়া অনুপস্থিত ছিলেন।

এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্র পক্ষের বিজ্ঞ কৌশলী অতিরিক্ত পিপি এডভোকেট মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন আমি আশাবাদী শীঘ্রই এ রায় কার্যকর হবে। এ মামলায় আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এডভোকেট মোঃ জসিম উদ্দিন।

প্রতিবেদক: জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

Share