Home / চাঁদপুর / কালের সাক্ষী হয়ে চাঁদপুরে মেঘনার পাড়ে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে শত বছর বয়সী বকুল গাছ
কালের

কালের সাক্ষী হয়ে চাঁদপুরে মেঘনার পাড়ে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে শত বছর বয়সী বকুল গাছ

চাঁদপুর শহরের যমুনা রোড এলাকায় মেঘনার তীর ঘেষে ফুল, ফল এবং ছায়া বিলিয়ে, সৌন্দর্য ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় শতবছর বয়সী বিশাল একটি বকুল গাছ।

একদিকে মেঘনার বুকে জুড়ে অথৈই পানির ঢেউয়ের কল কল শব্দে ছন্দ তোলা নাচন। অন্যদিকে বিশাল এই বকুল গাছটি চারদিকে তার ডাল পাল ছড়িয়ে ছাঁয়া দিয়ে ঘিরে রেখেছে মেঘনার তীর। বিশাল এই বকুল গাছটি দেখে যে কেউই মুগ্ধতা খুঁজে পান। আর এই বকুল বৃক্ষের সেই ছায়াতলেই প্রতিদিন স্থানীয় বাসিন্দারা সারাদিনের ক্লান্তি ভুলে প্রয়োজনীয় কাজ করে বেড়ান আপন মনে। তারা বকুল তলে বসে কখনো জাল বুনেন, কখনো লাকড়ি কাটেন, কখনো রিক্সা মেরামত, কখনো বা মেঘনার বুক চিরে ভেসে আসা সু-শীতল বিশুদ্ধ বাতাস গায়ে মাখেন এই বকুল গাছের ছাঁয়াতলে বসেই।

কালের

মেঘনার পাড়ে মৃদু মৃদু বাতাস বয়ে যাওয়া এবং সবুজের চাদরে দাঁড়িয়ে থাকা এই বকুল গাছটি বিকেলের সোনারোদে যেনো এক অন্যরকম পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তাইতো স্থানীয়দের পাশি পাশি শহরের প্রকৃতি প্রেমীরাও ছুটে যান বিশাল এই বকুল গাছের ছায়া এবং সৌন্দর্য অনুভব করতে। তারা বকুলের সুভাস না পেলেও তার সবুজের সৌন্দর্য আর ছাঁয়াতেই যেনো প্রকৃতির মন ভুলানো প্রেম খুঁজে পান।

স্থানীয়রা এলাকার একাধিক বৃদ্ধ এবং মধ্যবয়সীরা জানান, চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন যমুনা রোডে মেঘনার পাড়ে সাজানো প্রতিমার মতো দাঁড়িয়ে থাকা এই বকুল গাছটির বয়স ৬৫ থেকে ৭০ বছরের উর্ধ্বে। প্রতি সৃজনে গাছটিতে বকুল ফুল ধরে এবং ফলও হয়। আর সে বকুল ফল অনেকেই গাছ থেকে পেরে এবং কুঁড়িয়ে বেশ মজা করে  খেয়ে থাকেন।

প্রকৃতি এবং বিনোদন প্রেমীদের কাছে এটি একটি নতুন স্থান হিসেবে ইতিমধ্যে পরিচিতি লাভ করেছে।

স্থানীয় আক্তার হোসেন জানান,এই বকুল গাছটির বয়স অনুমান ৮০ থেকে ৯০ বছর। যমুনা কোম্পানির তেলের ডিপু যখন এই স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয় তখন এই কোম্পানি থেকে  বকুল গাছটি রোপন করা হয়। যমুনা কোম্পানির তেলের ডিপু যমুনা রোডে ৩০/৩৫ বছর কাজ করছিল। তারপর তারা এ স্থান ত্যাগ করে।

এ গাছটি অনেক অলৌকিক ঘটনার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আক্তার হোসেন আরো জানান,বকুল গাছটি অনেক পুরনো হওয়ায় গভীর রাতে এখানে অনেকেই নাকি নানান কিছু অনুভব করেছে। কখনো কান্নার শব্দ শুনেছে। আবার হাসির শব্দ শুনতে পান স্থানীয়রা।

ইসমাইল পাটোয়ারী জানান, আমাদের জম্মের পর থেকে এ বকুল গাছটি দেখে আসছি। ছোট বেলায় এ গাছের নিচে বসে অনেক খেলাধুলা করেছি।নদী অনেক ভেঙ্গেছে কিন্তু বকুল গাছটি তার জায়গায় এখনো দাঁড়িয়ে আছে।

গৃহবধূ মরিয়ম জানায়, গাছটির বয়স কত তা আমার জানা নেই। বিয়ের পর এ এলাকায় এসে আমি বকুল গাছটি এরকমই দেখে আসছি।

চাঁদপুর শহরের যমুনা রোড এলাকা মেঘনা নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে শতবয়সী এই বকুল গাছটি।

এক কথায় বলা চলে এটি কালের সাক্ষী  হয়ে আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে। এই বকুল গাছটির আশ পাশ যদি সংরক্ষণ করা হয় তাহলে নান্দনিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে দাঁড়াতে পারে এমনটাই মনে করছেন বিনোদন প্রেমীরা।

প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি, ১১ জুন ২০২৩