কারাবন্দি আলোচিত আসামি কচুয়ার ব্রজলাল পাটিকর মৃত্যু

প্রথমে স্ত্রীকে হত্যা মামলার সাক্ষী, পরবর্তীতে ধর্ষণের পর হত্যা মামলার আলোচিত আসামি ব্রজলাল পাটিকর (৬২) নামের এক কারাবান্দির মৃত্যু হয়েছে। তিনি শনিবার রাতে চাঁদপুরে জেলহাজতে অসুস্থ হয়ে পড়লে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে রবিবার কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ওমর ফারুক সবুজ তাকে মৃত ঘোষনা করেন। তিনি কচুয়া পৌরসভাধীন কড়ইয়া গ্রামের রাখাল চন্দ্র পাটিকরের পুত্র।

জানা গেছে, ২০০১ সালের তৎকালীন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কচুয়া পৌরসভাধীন কড়ইয়া গ্রামের ব্রজলাল পাটিকরের স্ত্রী রাখী রানি শীল নৌকা মার্কার এজেন্ট থাকার অপরাধে বিএনপি-জামাত ও শিবিরের কতিপয় নেতারা, শীর্ষ এক বিএনপি নেতার নির্দেশে তার বাড়িতে হামলা ভাঙচুর লুটপাট করে বাড়ি থেকে রাখী রানিকে জোর পূর্বক তুলে নিয়ে গনধর্ষন শেষে হত্যা করে। পরে তার লাশ ২০০১ সালে ৩১ অক্টোবর কচুয়া দক্ষিন বাজারস্থ পুরাতন ঈগল বাস স্টেশনে ফেলে রাখে।

পরবর্তীতে প্রভাবশালী বিএনপির এক শীর্ষ নেতার চাপে পুলিশ রাখি রানীর পরিবার কে মামলার বাদী না করে ঘটনার দু’বছর পর প্রভাব খাটিয়ে তৎকালীন কচুয়া থানার এসআই শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে রাখী রানির স্বামী ব্রজলাল পাটিকরকে আসামি করে কচুয়া থানার একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং- ০৯, তারিখ: ০৩.৯. ২০০৩ ইং। এ ঘটনার প্রকৃত সত্যতা উদঘাটনের ২০১৯ সালের ১১ মার্চ চাঁদপুরের বিজ্ঞ আদালতে কচুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাড. মো: হেলাল উদ্দিন কার্যবিধি আইনের ৫২৮ ধারার বিধান মোতাবেক ওই মামলাটি পূন:তদন্তের জন্য একটি আবেদন করেন।

পরবর্তীতে ব্রজলাল পাটিকর ও রাখী রানির ছেলে দীলিপ চন্দ্র বাদী হয়ে কচুয়া থানায় সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আনম এহসানুল হক মিলনসহ ১৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়। যার নং ২৯ তারিখ ২৮.১২.২০১০ খ্রি:।

নিহত ব্রজলাল চন্দ্রের আইনজীবি এ্যাড. হেলাল উদ্দিন বলেন, প্রথম মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ব্রজলাল চন্দ্রের বিরুদ্ধে এত তরফা পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আইনের বিধান অুনযায়ী তাকে পরবর্তী মামলা থেকে বাদ দিতে পারেননি। ফলে গত ২৮ ডিসেম্বর ব্রজলাল পাটিকর গ্রেফতারি পরোয়ানার ভিত্তিতে গ্রেফতার করেছিলো পুলিশ।

এদিকে নিহত ব্রজলাল পাটিকরের প্রথম স্ত্রী ঝর্ণা রাণী দে ও ভাগিনা কৃষ্ণ পাটিকর বলেন, তৎকালীন সময়ে বিএনপি-জামায়াতের লোকজনের নির্মম নির্যাতনের কারনে ব্রজলালের দ্বিতীয় স্ত্রী রাখি রাণী’র মৃত্যু হয়েছিলো। একই মামলায় স্থানীয় পৌর আওয়ামীলীগের সদস্য ব্রজলাল পাটিকরকে আসামী করায় অসুস্থ হয়ে জেলা কারাগারে বন্দী অবস্থায় মারা যান তিনি। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন তারা।

প্রতিবেদক: জিসান আহমেদ নান্নু, ১৪ জানুয়ারি ২০২৪

Share