কাঠগড়া থেকে বিচারকের দিকে জুতা ছুড়ে মেরেছে আসামী

অপহরণ মামলায় পাঁচ বছর ধরে কারাগারে থাকা এক আসামি আদালতের কাঠগড়া থেকে বিচারকের দিকে জুতা ছুড়ে মেরেছে। পরে বিচারকের প্রশ্নে জবাবে, মো. শামীম খন্দকার নামের আসামি জানান, জামিন না পাওয়ায় এ কাজ করেছেন তিনি।

রবিবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার ১ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, ঢাকার ১ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এজলাসে বসে বিচারকার্য পরিচালনা করছিলেন বিচারক জেসমিন আরা বেগম। এ সময় কাঠগড়ায় থাকা মো. শামীম খন্দকার (২৪) নামের এক আসামি নিজের পায়ের জুতা খুলে বিচারকের দিকে ছুড়ে মারেন। জুতাটি বিচারকের এজলাসে গিয়ে লাগে। এ ঘটনায় আদালতে উপস্থিত বিচারক, আদালতের কর্মচারী, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা হতবাক হয়ে যান।

পরে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা ওই আসামিকে ধমক দিতে থাকলে বিচারক তাদের নিবৃত্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আপনারা থামেন, শুনি কেন সে এমন কাজ করল।’

কেন জুতা ছুড়ে মারলেন জানতে চাইলে ওই আসামি জানায়, ‘আপনি ৫ বছর ধরে আমাকে জামিন দেন না। অনেক আগে আমি জামিনের জন্য ৮ হাজার টাকা দিয়েছি। এরপরও আমার জামিন হয় নাই।’

কাকে টাকা দিয়েছেন, বিচারকের এমন প্রশ্নের জবাবে শামীম খন্দকার বলেন, ‘যিনি নথি ওঠায় তাকে।’

এরপর বিচারক নথি পর্যালোচনা করে বলেন, ‘আপনি তো মামলায় দোষ স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। আর আপনি তো অন্য মামলায়ও কারাগারে আছেন। এই আদালতে আপনাকে অনেক দিন পর আনা হয়েছে। আপনার কোনো আইনজীবীও নেই।’

এরপর বিচারক রাষ্ট্রপক্ষকে এই মামলার সাক্ষীদের দ্রুত হাজির করার তাগিদ দেন এবং আগামী ধার্য তারিখ থেকে আসামি শামীমকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে আনার নির্দেশ দেন।

এ সম্পর্কে ওই ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল বারী জানান, কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে এই ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, ‘স্যার, (বিচারক) খুব ভালো মানুষ। তাই এমন ঘটনার পরও আসামিকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।’

পাবলিক প্রসিকিউটর জানান, ওই আসামির বিরুদ্ধে মাদারীপুর জেলায় একটি হত্যা মামলা বিচারাধীন আছে। ওই মামলায় মাদারীপুর কারাগারে থাকায় দীর্ঘদিন তাকে এই ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়নি। ফলে কোনো সাক্ষ্য গ্রহণ করতে পারিননি।

ওই মামলার বিষয়ে পাবলিক প্রসিকিউটর বলেন, মাদারীপুর জেলার সদর থানাধীন কালিকাপুর গ্রামের মনির হোসেন নামের এক ব্যক্তি ২০১২ সালের ৩১ আগস্ট তার ছেলে আকাশকে (৫) অপহরণ ও হত্যার অভিযোগে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন। এরপর আসামির স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে আকাশকে জীবিত উদ্ধার হয়।

ওই থানার এসআই মান্নান মুন্সি ২০১২ সালের ১১ ডিসেম্বর অপহরণের অভিযোগে আসামি শামীমের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলাটিতে ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। (ঢাকা টাইমস)

নিউজ ডেস্ক
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৯: ২৩ পিএম, ১৬ এপ্রিল ২০১৭, রোববার
ডিএইচ

Share