৬ বছর আগে বাবা চলে গেছেন না ফেরার দেশে। টিউশনি ও পুঁথির কাজ করে মেধাবী দুই সন্তানকে উচ্চ শিক্ষিত করার স্বপ্ন দেখছেন মা। উচ্চ শিক্ষা শেষে সন্তানরা চাকুরি করে মায়ের দুঃখ গোছাবে। সেই স্বপ্ন এখন অর্থের কাছে হেরে যাবার পথে।
ছোট ছেলে মুরাদ মাহমুদ তপু (১৬)। কচুয়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী তেগুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সদ্য প্রকাশিত এসএসসি ফলাফলে
গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এসএসসিতে তার রোল নং ১৭২৩৮৭। প্রাপ্ত নম্বর: ১১৯০।
তপু জেএসসি পরীক্ষায় জিপিত্র-৫ সহ সাধারণ গ্রেডে ও পিইসি পরীক্ষায় জিপিত্র-৫ ও ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পায়। এবার সে ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হতে চায়।
মুরাদ মাহমুদ তপু কচুয়া উপজেলার উত্তর পালাখাল মোড়ের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী প্রয়াত ইলিয়াস মোল্লার ছেলে। মা মাকসুদা আক্তার একজন গৃহিণী ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। কচুয়া উপজেলার ৩নং বিতারা ইউনিয়নের জুগীচাপড় গ্রাম মোল্লা বাড়ী বাসিন্দা।
তপু’র বড় ভাই সায়্যিদ মাহমুদ তুহিন (১৮)। সে ঢাকা কলেজে অধ্যয়নরত। তুহিন ঢাকা ২০১৯ সালে নটরডেম কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় উর্ত্তীণ হয়। কিন্তু আর্থিক দৈন্যতা ও বাবা না থাকায় কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি নেয়নি। এবার তপুর পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর সেই সংশয়ে ভুগছেন দুখীনী মা মাকসুদা আক্তার।
মা মাকসুদা আক্তার তার সংগ্রামী জীবনের কথা বলতে গিয়ে চিন্তায় বিমূঢ় হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, বড় ছেলে ঢাকা কলেজে পড়ে। সেই সুবাধে মৌচাক এলাকার নিমাই কাশারিতে একটি এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়েছি। সেখানে বড় ছেলে টিউশনি এবং আমি কিছু পুঁথির কাজ ও শপিং ব্যাগ তৈরি করে অর্থযোগান দিয়ে আসছি।
এখন তপু’র লেখাপড়ার খরচা মেটাতে হিমশিম খেতে হবে। তার চেয়ে বড় সংশয় তপুকে কি ভালো কলেজে ভর্তি করাতে পারবো?
মেধাবী ছাত্র মুরাদ মাহমুদ তপু বলেন, প্রথম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত আমার রোল নম্বর এক ছিল। অনুরূপ তুহিনেরও ১ম থেকে দশম শ্রের্নী পর্যন্ত রোল নম্বর ১ ছিলো। ভবিষ্যতে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি একজন চিকিৎসক হতে চাই। দেশের মানুষের সেবা করতে সবার দোয়া চাই।
তুহিন ও তপুর মায়ের স্বপ্ন পূরণে কোন হৃদয়বান শিক্ষানুরাগী সাহায্যার্থে এগিয়ে আসতে পারেন। প্রয়োজনে ০১৮৮২-৪৬৮১২১ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা গেল।
প্রতিবেদক:জিসান আহমেদ নান্নু,৭ জুন ২০২০