চাঁদপুর কচুয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হাজীগঞ্জ উপজেলার ধড্ডা গ্রামের অধিবাসী বঙ্গবন্ধু’র বাল্য শিক্ষক এম.এ গনি বিটি’র নাতী আমেরিকা প্রবাসী আবুল কালাম সাইফুল ইসলাম (লিটন) এর ভুমি জবর দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। একই এলাকার আব্দুর রব মিয়াজীর ছেলে হাবিব উল্লাহ মিয়াজীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, আবুল কালাম সাইফুল ইসলাম (লিটন) আমেরিকা বসবাস করলেও বর্তমানে আর্থিক সংকটে ভুগছেন। তার দু’টি কিডনিই বিকল হওয়ায় সেখানে দীর্ঘ মেয়াদী চিকিৎসা নিতে হচ্ছে তাকে। বেকার ভাতা আর স্বজনদের সাহায্য নিয়ে চিকিৎসার ব্যয়ভার ও নিজের বরন পোষন চালাচ্ছেন তিনি। যে কারনে তিনি তার নিজ বাড়ি-ঘরে আসা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি মুঠো ফোনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের এসব তথ্য দিয়ে আরো বলেন, আমার শারীরিক অসুস্থ্যতার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে একই এলাকার হাবিব উল্লাহ মিয়াজী আমার ভূমি বিভিন্ন সময়ে (তিন দফায়) সাড়ে ৬৬ শতাংশ ভূমি ক্রয় করে নেন।
ভূক্তভোগী আরো বলেন, ধড্ডা মৌজার সাবেক দাগ ১৩৫১ বর্তমান ৩৩২০ দাগের ৭২ শতাংশ ভূমি আমার দাদা এম.এ গনি বিটি আমার নামে হেভা করে দেয়।
এ দাগ থেকে হাবিব উল্লাহ মিয়াজী প্রথম দফায় সাড়ে ৩৬ শতাংশ, ২য় দফায় ১২ শতাংশ, ও ৩য় দফায় ১৮ শতাংশসহ, মোট সাড়ে ৬৬ শতাংশ ভুমি ক্রয় করেন।
অবশিষ্ট থাকে সাড়ে ৫ শতাংশ ভুমি প্রবাসী আবুল কালাম সাইফুল ইসলাম লিটনের। এ ভূমিটি দাদার স্মৃতি হিসেবে আকড়ে ধরে বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে চান আবুল কালাম সাইফুল ইসলাম লিটন। এ সাড়ে ৫ শতাংশ ভূমি হাবিব উল্লাহ মিয়াজী নিজের নামে নেয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করছেন।
বিষয়টি স্থানীয় ভাবে সালিশ এর মাধ্যমে মাপ-ঝোপ দিয়ে হাবিব উল্লাহ মিয়াজী’র সাড়ে ৬৬ ও আবুল কালাম সাইফুল ইসলাম লিটনের সাড়ে ৫ শতাংশ বুঝিয়ে দিয়ে সীমানা চুড়ান্ত ভাবে নির্ধারন করে দেয়া হয়। আবুল কালাম সাইফুল ইসলাম তার অংশ বুঝে পেয়ে বিভিন্ন জাতের গাছের চারা রোপন করে। গাছের চারা গুলো একটু বেড়ে উঠলেই হাবিব উল্লাহ মিয়াজী তা কেটে দেয় বলে তিনি দাবী করেন।
তিনি আরো জানান, তার দাদা এম.এ গনি বিটি টুঙ্গিপাড়া হাই স্কুল এন্ড মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। সেই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একটি অনুষ্ঠানে তার দাদা এম.এ গনির লেখা মানপত্র পাঠ করেছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মানপত্রের লেখা সুন্দর ও সাবলিল ভাষায় হওয়ায় এম.এ গনি বিটিও মানপত্রের পাঠকের পাঠ অতি সু-মধুর হওয়ায় বঙ্গবন্ধু’র প্রশাংসা করেছিলেন তখনকার অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক।
বঙ্গবন্ধু ৮ম শ্রের্নীতে অধ্যায়নরত অবস্থায় এম.এ গনি বিটি সংসার জীবন গোছাতে ১৯৩৭ সনে উক্ত প্রতিষ্ঠান ছেড়ে নিজ জেলা চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের চান্দ্রা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। যাহা অবগত ছিলেন, এ আসনের সংসদ সদস্য, সাংবাদিক মো. সফিকুর রহমান। পরে এম.এ গনি বিটি চান্দ্রা স্কুল ছেড়ে নিজ এলাকার কচুয়ার দরবেশগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং এখান থেকে শিক্ষকতা জীবন অবসর গ্রহন করেন।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রবিউল হোসেন মিয়াজী জানান, উভয় পক্ষের ভূমি মাপ ঝোক করে তার সীমানা নির্ধারন করে দিয়েছি। শুনেছি বিষয়টি নিয়ে পুনরায় আলোচনা হচ্ছে।
অভিযুক্ত মো. হাবিব উল্লাহ মিয়াজী প্রবাসী সাইফুল ইসলামের ভূমি জোরপূর্বক দখল চেষ্টা অস্বীকার করে বলেন, উভয় পাশে আমার জমি রয়েছে, মাঝ খানের জমিটি হলে আমার সুবিধা হয়। তাই আমি ও এলাকাবাসী সাইফুল ইসলামকে ওই সম্পত্তি বিক্রির করার জন্য অনুরোধ করেছি।
স্টাফ করেসপন্ডেট