চাঁদপুরের কচুয়ায় আকানিয়া গ্রামের প্রধানীয়া বাড়িতে শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ১৫টি পরিবারের ছোট-বড় ২৫টি বসত ঘর পুড়ে ছাঁই হয়ে গেছে। এতে গৃহের নগদ টাকা,স্বর্ণ গহনা,মালামালসহ প্রায় ১ কোটি টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো দাবি করছে।
এ সময় আগুন নিভাতে গিয়ে মহিন (২০),হেলাল উদ্দিন (২৫) ও ফাহিমা বেগম নামের (২৬) ৩ জন আহত হয়েছে। আহতদের কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লে্েক্স প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
খবর পেয়ে কচুয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ৩টি ইউনিট ও এলাকাবাসী দু’ ঘন্টাব্যাপি চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে আগুনে পুড়ে ওই বাড়ির ছোট বড় ২৫ টি ঘর পুড়ে যায় ।
কচুয়া উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মো.ইয়াছিন প্রধানীয়া বলেন,‘অগ্নিকান্ডের খবরে ৩টি গাড়ি নিয়ে তাৎক্ষণিক রওয়ানা দেই। ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও এলাকাবাসীর সহায়তায় অনেক চেষ্টার পর ্আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি।’
এলাকাবাসী মতে,দক্ষিণ আকানিয়া ব্রীজে মাটি না থাকায় ও রাস্তা ভাঙ্গা থাকায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা তাড়াতাড়ি পৌঁছতে কষ্ট হয়েছে এবং ক’টি ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার থাকায় আগুনের তীব্রতা বেড়ে যায় ও ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মী ও আগুন নেভাতে আশা লোকজন ঠিক মতো তাড়াতাড়ি কাজ করতে পারে নি।
বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্থরা তাদের মাথা গুজার ঠাঁই হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তারা একদিকে বাসস্থান অন্যদিকে মালামালসহ সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আকানিয়া গ্রামের ফারুক হোসেনের রান্না ঘরের বৈদ্যুতিক তার থেকে এ অগ্নিকান্ডের স্ত্রূপাত ঘটে বলে ধারণা করছেন।
অগ্নিকান্ডে পুড়ে যাওয়া পরিবার গুলো হলো মো.শাহজাহানের ২টি ঘরসহ ক্ষতির পরিমাণ ১০ লাখ টাকা। আলমগীর হোসেনের ১টি ঘরসহ ক্ষতি ২ লাখ টাকা। গিয়াস উদ্দিনের ৩টি ঘরসহ ক্ষতি ১০ লাখ টাকা। হাফেজ জাহাঙ্গগীর আলমের ২টি ঘরসহ ক্ষতি ৫ লাখ টাকা। জাকারিয়া হোসেনের ২টি ঘর,মালামালসহ ৬ লাখ টাকা।
ফারুক হোসেনের ২টি ঘর, মালামালসহ ক্ষতি ৮ লাখ টাকা। মাজহারুল ইসলামের দুটি ঘর ও মালামালসহ ক্ষতি ১০ লাখ টাকা। জিয়াউল হকের দু’টি ঘর,নগদ ২০ হাজার টাকা ও মালমালসহ ক্ষতি ৮ ল্াখ টাকা ও মজিবুল হকের দু’টি ঘর,নগদ দেড়ল্াখ টাকা ও মালামালসহ ক্ষতি ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিসাধন হয়েছে।
এছাড়া আগুনে আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলো হচ্ছে-কাউছার আহমেদের ২ লাখ,আব্দুস সালামের দেড় লাখ টাকা,হযরত আলীর দেড় লাখ, মোস্তফা মিয়ার ৫০ হাজার, বাবুল মিয়া ও দুলাল মিয়ার ১ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন হয় বলে দাবি করেন।
এদিকে এ ঘটনায় খবর পেয়ে ওইদিন রাতে তাৎক্ষণিক কচুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির,নির্বাহী অফিসার নীলিমা আফরোজ,পৌর মেয়র ও যুবলীগের সভাপতি মো.নাজমুল আলম স্বপন, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো.শাহজালাল প্রধান জালাল, সদর ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন লিটন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা ও সান্তনা প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে কচুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মো.শাহজাহান শিশির সাংবাদিকদের বলেন,‘অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে ছুটে এসেছি এবং আমাদের প্রিয়নেতা ড.মহীউদ্দীন খান আলমগীর এমপি মহোদয়ের পক্ষ থেকে এবং উপজেলা পরিষদের বরাদ্দ থেকে রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রতি পরিবারকে দু’বান ডেউটিন, নগদ ৬ হাজার টাকা করে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রতিবেদক : জিসান আহমেদ নান্নু
আপডেট,বাংলাদেশ সময় ৭:০০ পিএম,১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮,রেববার
এজি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur