Home / উপজেলা সংবাদ / কচুয়া / কচুয়ার গরীব ও অসহায়দের চিকিৎসাকেন্দ্র বেসিক এইড হসপিটাল
Basic Aid & Hospital

কচুয়ার গরীব ও অসহায়দের চিকিৎসাকেন্দ্র বেসিক এইড হসপিটাল

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার অজোপাড়া গাঁয়ে আইনগীরি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ডা. মো. আব্দুল কাদের। তাঁর প্রয়াত বাবা মোঃ আমিনুল ইসলাম মাস্টার ছিলেন, একজন স্কুল শিক্ষক।

জীবদ্মশায় আমিনুল ইসলাম মাস্টার নিজ এলাকায় সরকারি হাসপাতাল ও আইনগীরি উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপনে উদ্যোগ নেয়। বিশেষ করে তৎকালিন ১৯৮৭ সালে আইনগীরি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত উত্তীর্ণ হওয়ার পিছনে সমাজ সেবক আমিনুল ইসলাম মাস্টারের প্রচেষ্টা ছিল বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।

মরহুম আমিনুল ইসলাম মাষ্টারের কনিষ্ঠ সুযোগ্য পুত্র মোঃ আব্দুল কাদের ছোট বেলা থেকে বাবার ইচ্ছা ও আদর্শ বাস্তবায়নে স্বপ্ন দেখে যাচ্ছেন।

এরই ধারাবাহিকতায় কুমিল্লা জেনারেল হসপিটাল থেকে মোঃ আব্দুল কাদের ডি.এম.এ.বি.এইচ.ই (স্বাস্থ্য), মেটিক, জেনালের ফিজিশিয়ান এক্স.পি.টি উচ্চ ডিগ্রি অর্জন শেষে উন্নত চিকিৎসায় মানব সেবার অঙ্গীকার নিয়ে কচুয়া উপজেলার ব্যস্ততম ব্যবসায়ীক প্রাণ কেন্দ্র রহিমানগর উত্তর বাজারে পোস্ট অফিস সংলগ্ন এলাকায় ২০০৭ সালের ১৫ ফেব্রæয়ারি বেসিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে একটি হাসপাতালের যাত্রা শুরু করেন। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ৩০ মে উত্তর বাজারে নতুন নামে নতুন আঙ্গিকে ‘বেসিক এইড এন্ড হসপিটাল’ নামে কার্যক্রম চালু করেন।

ওই হাসপাতালের বর্তমানে তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন। তাকে সার্বিক ভাবে সহধর্মীনি ডাঃ নাজনীন সুলতানা ও ভাই হেলাল উদ্দিন সার্বক্ষনিক সহযোগিতা করছেন। স্থানীয়রা আরো জানিয়েছে, এ হাসপাতালে এলাকার গরীব ও অসহায় রোগীদের স্বল্প ভিজিটে সেবা দেয়ায় প্রতিনিয়ত গরীব অসহায় রোগীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

উন্নত ও অত্যাধুনিক মেশিন সু-সজ্জিত এ হসপিটালে ৮টি কেবিন, সাধারণ বেড, পুরুষ/মহিল ২টি। এতে মাসের বিভিন্ন সময় প্রায় ১৮জন ডাক্তার মেডিসিন, সিজারিং, চর্ম, যৌন, এনার্জি, কার্ডিওলজী, অর্থপেডিক্স, মা ও শিশু, স্ত্রীরোগ, প্রসূতী বিদ্যা, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, বাথব্যথা, বিশেষজ্ঞ রোগী দেখে থাকেন। তন্মধ্যে প্রতিদিন ৩জন এমবিবিএস ডাক্তার রোগী দেখে থাকেন।

ডাক্তারদের মধ্যে মেডিসিন ও শিশু রোগে অভিজ্ঞ ডাঃ মোঃ হাসান আহাম্মদ, মেডিসিন, শিশু ও চর্মরোগে অভিজ্ঞ ডাঃ মোঃ কবির হোসেন এবং ডাঃ শরীফ আহমেদ প্রতিদিন রোগী দেখে থাকেন। হাসপাতালে রোগীদের সেবাদানে প্রায় ২৫-৩০জন নার্স ও কর্মকর্তা, কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছেন। রহিমানগর থেকে কুমিল্লা থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার, জেলা শহর চাঁদপুরের দূরত্ব প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ কিলোমিটার হওয়ায় এবং রাস্তা-ঘাটে যানজট ও অন্যান্য সমস্যা থাকায় রহিমানগর বেসিক এইড এন্ড হসপিটালে সিজারিং রোগী ও অন্যান্য মুমূর্ষ রোগীরা সহজে এ হাসাতালে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল কাদের জানান, অর্থ অর্জন বড় বিষয় নয়, এলাকার মানুষকে সেবা দেওয়াই আমার মূল লক্ষ্য। এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ৮-১০ বছর পূর্বে কচুয়া যাওয়ার পথে রহিমানগর এলাকায় এক পথিক একটি মোটর সাইকেল দুর্ঘটনা করে। কিছু ছোট ছোট ছেলে আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার কালে বলে তাকে রহিমানগর বাজারে কাদের ডাক্তারের চেম্বারের নিয়ে যাই। কিছুক্ষণ পর হাসপাতালে ফিরে এসে দেখি ওই ছোট বাচ্চাগুলো আহত ব্যক্তিকে আমার হাসপাতালে নিয়ে আসে। এতে আমি গর্ববোধ করি।

এ কারণে যে ছোট ছোট বাচ্চারাও আমাকে ডাক্তার কাদের হিসেবে চিনে। সে থেকে এ পেশা পরিচালনায় অনেক কষ্ট হলেও এ পেশাকে আনন্দ হিসাবে মনে করে মাননুষের সেবা করে যাচ্ছি। যতদিন বাঁচবো এলাকার মানুষকে সেবা দিয়ে যাবো।

রহিমানগরের গোহট গ্রামের অধিবাসী মোঃ ফরহাদ চৌধুরী জানান, হাতের নাগালে বেসিক এইড এন্ড হসপিটালে উন্নত সেবা পাওয়ায় এ হসপিটালে আল্লাহর রহমতে আমার প্রথম পুত্র সন্তান জন্ম হয়েছে। হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার ও নার্সদের আন্তরিক সেবায় আমার স্ত্রী ও সন্তান বর্তমানে এখন সুস্থ্য রয়েছে।

চিকিৎসা নিতে আসা ও স্থানীয় অধিবাসী প্রিন্স মাহমুদ মানিক জানান, আমার জানামতে এমন উন্নত হাসপাতাল চাঁদপুরের কোথাও নেই। হাসপাতালের পরিবেশ তথা কর্তৃপক্ষের সার্বিক সহযোগিতায় ও আন্তরিকতা দিন দিন এ হাসপাতালের রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে।

প্রতিবেদক- জিসান আহমেদ নান্নু
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৭:১০ পিএম,২৮ নভেম্বর ২০১৭, সোমবার
ডিএইচ

Leave a Reply