Home / বিশেষ সংবাদ / ঐশীর ডেথ রেফারেন্স কপি হাইকোর্টে
ঐশীর ডেথ রেফারেন্স কপি হাইকোর্টে

ঐশীর ডেথ রেফারেন্স কপি হাইকোর্টে

পুলিশের বিশেষ শাখার কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত তাদের মেয়ে ঐশী রহমানের ডেথ রেফারেন্স কপি (বিচারিক আদালতের রায় কার্যকর করতে অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র) হাইকোর্টে এসেছে। ডেথ রেফারেন্সের কপি উচ্চ আদালতে আসায় এখন মামলার যেকোনো পক্ষ যদি আপিল করেন, সে ক্ষেত্রে আপিলের শুনানি শেষে উচ্চ আদালত চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করবেন।

হাইকোর্টের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার সাব্বির ফয়েজ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঐশীর ডেথ রেফারেন্সের প্রয়োজনীয় নথিপত্র নিম্ন আদালত থেকে হাইকোর্টে এসেছে। তবে এই নথিপত্র আমি এখনো খুলে দেখিনি। জেনেছি হাইকোর্টে এসেছে।’

প্রসঙ্গত, ১৩ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) ঢাকার একটি আদালত চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। এ মামলার রায় ঘোষণার প্রায় এক সপ্তাহ পরে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হল।

এদিকে, সিলেটের রাজন ও খুলনার শিশু রাকিব হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স উচ্চ আদালতে এসে পৌঁছেছে। নিম্ন আদালতের রায়ের ঘোষণার দুদিন পরেই চাঞ্চল্যকর এ দুই শিশু হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স উচ্চ আদালতে চলে আসে। গত ৮ নভেম্বর রাজন ও রাকিব হত্যা মামলায় রায় ঘোষণা করা হয়।

প্রসঙ্গত, মামলার প্রধান আসামি ঐশী রহমানকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় ঐশীর বন্ধু আসামি মিজানুর রহমান রনিকে দু’বছরের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও একমাস কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। ঐশীর আরেক বন্ধু আসাদুজ্জামান জনি মুক্তি পেয়েছেন।

গত ১৩ নভেম্বর মামলাটির রায় ঘোষণা করেন ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ। বাবা ও মাকে পৃথকভাবে খুনের জন্য পৃথক দুটি অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। দুটি অপরাধের গুরুত্ব বোঝাতে ঐশীকে দুইবার ফাঁসি ও দুইবারে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তবে হাইকোর্টের অনুমোদন ছাড়া এ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যাবে না। এজন্য এ মামলার ডেথ রেফারেন্স উচ্চ আদালতে আসা প্রয়োজন।

আসামি ইচ্ছে করলে বিচারিক ট্রাইব্যুনালের রায় চ্যালেঞ্জ করে ৩০ দিনের মধ্যে হাইকোর্টে আপিল দায়ের করতে পারবেন বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ মামলার অপর আসামি আসাদুজ্জামান জনিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। জামিনে থাকা মিজানুর রহমান রনিও আদালতে হাজির ছিলেন। পরে সাজা দিয়ে ঐশী ও রনিকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

এ মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে ট্রাইব্যুনাল বলেন, সারাদেশ যেখানে শিশু নির্যাতনের বিপক্ষে সোচ্চার সেখানে স্রোতের বিপরীতে গিয়ে একজন শিশুর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেয়া খুবই কঠিন ছিল।

তবে আদালতে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত যে, ঐশীর বয়স ১৮ বছরের বেশি। ঘটনার সময় তিনি শিশু ছিলেন না। আর হত্যাকাণ্ডটি নিছক দুর্ঘটনা ছিল না। এটি ছিল একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। সময় নিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় খুন করেন ঐশী। বিচারক তার রায়ের পর্যবেক্ষণে আরও বলেন, ঐশীর খুন করার ইচ্ছা ছিল মূলত তার মাকে। কিন্তু শুধু মাকে খুন করে বাঁচতে পারবেন না মনে করে তার বাবাকেও খুন করেন তিনি। এটি ছিল একটি পরিকল্পিত ও নৃশংস হত্যাকাণ্ড।

২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল শাখা) ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরদিন ঐশী গৃহকর্মী সুমীকে নিয়ে রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করেন। পরে গ্রেপ্তার করা হয় অন্য দুই আসামি রনি ও জনিকে।

নিউজ ডেস্ক ||আপডেট: ০৪:৪০ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০১৫, বৃহস্পতিবার

এমআরআর