ডেস্ক :
ভারতের মুম্বাই শহরের ৩৬ বছর বয়সী মেথর সুনীল যাদব। পড়াশুনায় গত নয় বছরে চার চারটি ডিগ্রি অর্জন করেছেন তিনি। তবুও তাকে কাজ করতে হচ্ছে মুম্বাইয়ের বৃহনমুম্বাই মিউনিসিপাল কর্পোরেশন (বিএমসি) এর আবর্জনা সংগ্রহকারী হিসেবে। মেথর পরিবারে জন্মগ্রহণ করায় তাকে সমাজে এভাবে হেয় প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে যাদব বলেন, ‘‘আমরা মেথর হয়ে জন্মেছি। জন্ম থেকেই আমরা কৃতদাস। আমাদের কখনই কোনো অধিকার ছিল না। আমরা এটা থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। আর এজন্য একটাই পথ খোলা আছে। বাবা সাহেব আমাদেরকে বলেছিলেন, ‘যদি তোমরা শিক্ষা গ্রহন করো তবে তোমরা উন্নত হবে’। কিন্তু শিক্ষিত হওয়ার পরেও মানুষ আমাদেরকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে না।”
২০০৫ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত যাদব বি.কম ডিগ্রি, সাংবাদিকতায় বি.এ, বিশ্বায়ন এবং শ্রমে এম.এ এবং সমাজকর্মে এম.এ ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বর্তমানে তিনি টাটা ইন্সটিটিউট অব সোস্যাল সাইন্স নামের একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে এম ফিল করছেন বলে জানিয়েছেন।
তিনি আরো জানান, ‘‘দিনের শুরুতে আমাকে একটি নর্দমায় নেমে পড়তে হয়। দিনের শেষেও আমার মন থেকে সেই দুর্গন্ধ যায় না। আমি নোংরা পানির মধ্যে মরা জীব জন্তুর মধ্যে হেঁটে বেড়াই। সেসময় আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, আমাকে এই জীবন থেকে বেরিয়ে আসতে হবে”।
তিনি জানিয়েছেন, তাদের চার প্রজন্ম মেথরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেছে। তাকে এই ধারায় নাম লেখাতে হয়েছিল। বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিএমসিতে তার জায়গায় সুনীল যাদবকে কাজ নিতে হয়েছিল। সেখানে তিনি রাত নয়টা থেকে দুইটা পর্যন্ত কাজ করেন আর দিনের বেলায় পড়াশুনা করেন।
তার স্ত্রী সানজানাও বিয়ের পর স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। স্বামী যাদবের অনুপ্রেরণাতেই তিনি এতদূর আসতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন। সানজানা বলেন,‘‘ তিনি সব সময় খুব সহায়তা করেছেন আর আমাকে স্নাতক শেষ করতে বলেছেন। আমাকে তিনি সব সময় বুঝিয়েছেন যে, আমি শিক্ষিত হলে সমাজের লোকেরা আমাকে সম্মান করবে।”
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur