করোনাযোদ্ধা এবং মাঠপর্যায়ে প্রশাসনের সাহসী নারী, চাঁদপুরে মতলব দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা হকসহ তার পরিবারের তিন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তরা সবাই উপজেলা কমপ্লেক্সে সরকারি বাসভবনে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ফাহমিদা হকের সঙ্গে আরো যে দুজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তারা হচ্ছে- তার সাত বছরের শিশু সন্তান ফারহিন মাসুম তৈয়াবা এবং গৃহকর্মী রাবেয়া আক্তার (১৭) তবে ফাহমিদা হকের দুই বছরের আরেক শিশু আশাহাব মাসুম মুনিফ সুস্থ আছে। তাকে আক্রান্তদের থেকে আলাদা রাখা হয়েছে।
মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গোলাম কাউসার হিমেল জানান, আক্রান্তরা এখন সুস্থতার পথে। আগামী ১৯ জুন দ্বিতীয় দফায় তাদের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হবে। এর আগে গত ৫ জুন প্রথমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা হকের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। এসময় তার বাসায় অবস্থান করা পরিবারের অন্য সদস্যদের করোনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে আরো দুজনের শরীরেও করোনা ধরা পড়ে। তারপর থেকে তাদের সরকারি বাসভবনে আইসোলেশন রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
করোনায় আক্রান্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা হক মঙ্গলবার দুপুরে জানান, তিনি করোনা প্রতিষেধক প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন। তারপরও কীভাবে যে আক্রান্ত হলেন। তা ভেবেই কুলকিনারা পাচ্ছেন না। তবে মনোবল না হারিয়ে বাসায় আক্রান্ত অন্যদের নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি এবং নিয়মনীতি মেনে চলছি। এখন কিছুটা সুস্থবোধ করছেন। একই সঙ্গে সরকারি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছেন বলেও জানান তিনি। করোনা থেকে পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার জন্য মহান আল্লাহ্’র দরবারে সবার কাছে দোয়া চান, করোনায় আক্রান্ত উপজেলা প্রশাসনের শীর্ষ এই কর্মকর্তা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত ২০১৯ সালে ৬ নভেম্বর মতলব দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদে যোগ দেন, ফাহমিদা হক। তার ৫ মাস পর থেকে সারা দেশে করোনার বিস্তার শুরু হলে জনসচেতনতা বাড়াতে মতলব দক্ষিণের বিভিন্ন বাজার ও জনপদে বেরিয়ে পড়েন তিনি।
এসময় করোনায় আক্রান্তদের বাড়িতে স্বাস্থ্য বিভাগ, পুলিশ ও জনপ্রতিনিধি নিয়ে ছুটে যান ফাহমিদা হক। শুধু তাই নয়, করোনার কারণে কর্ম হারানো মানুষের পাশে খাদ্য সহায়তা নিয়েও ছুটে যান তিনি।
পরবর্তীতে করোনাযোদ্ধা হিসেবে কাজের স্বীকৃতি লাভ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা হক।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত বছরের মাঝামাঝিতে চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা এবং হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়ুয়া করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। বর্তমানে এই দুজন পদোন্নতি নিয়ে অন্যত্র দায়িত্ব পালন করছেন।
স্টাফ করেসপন্ডেট,১৬ জুন ২০২১