উদ্বোধনের অপেক্ষায় দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর

দীর্ঘ অপেক্ষার পর আজ কক্সবাজারে খুলবে ট্রেনের দুয়ার। নবনির্মিত ‘নান্দনিক’ কক্সবাজার রেলস্টেশনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এছাড়া আরও ১৪টি প্রকল্পেরও দ্বার উন্মোচন এবং চারটি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন তিনি।

এরমধ্যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন আরও এক মেগাপ্রকল্পের।

মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর চ্যানেলের উদ্বোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতি পৌঁছে যাচ্ছে নতুন মাত্রায়। এর ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যুক্ত হবে বছরে ১০ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার।

 

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, মাতারবাড়ি বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য গেম চেঞ্জারের ভূমিকা পালন করবে। এই বন্দরে জোয়ার-ভাটায় যেকোনো সময়ে আট হাজার টিইইউএস’র জাহাজ ভিড়তে পারবে।

শিপিং লাইনগুলো বাংলাদেশে জাহাজ নিয়োজিত করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সুবিধা ভোগ করবে। ফলে পণ্য পরিবহন খরচ উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে।

বন্দরকে ঘিরে মাতারবাড়ি মহেশখালী এলাকায় ব্যাপক শিল্পায়নসহ গড়ে উঠবে অর্থনৈতিক অঞ্চল। ফলে সৃষ্টি হবে ব্যাপক কর্মসংস্থানের। দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকসহ পেশাজীবীদের জীবিকার সুযোগ সৃষ্টি হবে। দেশের বেকার সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে এই বন্দর ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করবে।

বন্দরকে ঘিরে যে লজিস্টিকস ও সাপ্লাইচেইন ম্যানেজমেন্টের অবকাঠামো গড়ে উঠবে ও ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টি হবে তা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বন্দরকে কেন্দ্র করে মাতারবাড়ি মহেশখালী এলাকায় যে নগরায়ন হবে তা ওই এলাকাকে দক্ষিণ এশিয়ার সিঙ্গাপুরে পরিণত করবে। ফলে এলাকার আপামর জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে দেখার মতো।

এই প্রকল্পের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত মাতারবাড়ির আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বাঁকখালী নদীর ওপর নির্মিত খুরুশকুল সেতু, সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে কুতুবদিয়া দ্বীপকে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্তকরণ প্রকল্প উদ্বোধন করা হচ্ছে।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসার দুইদিন আগে থেকে কক্সবাজার এলাকায় অবস্থান করছেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর, আওয়ামী লীগের সমাবেশস্থসহ আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করেছেন।  

জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর, তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র, কক্সবাজার রেলস্টেশনসহ এখানকার মহাকর্মযজ্ঞ শেখ হাসিনার অভূতপূর্ব আবিষ্কার।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ফেনীর সোনাগাজী- চট্টগ্রামের মিরসরাই-সীতাকুণ্ডে নির্মিত বঙ্গবন্ধু অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে পতেঙ্গা বে-টার্মিনালের উন্নয়ন, চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো, কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ, কোরিয়ান ইপিজেড, চায়নিজ ইকোনোমিক জোন, বৃহৎ বৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্র হয়ে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর, কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, রেল যোগাযোগ, সাবরাং ট্যুরিজম সিটি- সব মিলিয়ে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে শেখ হাসিনা এক নতুন অর্থনৈতিক বলয় সৃষ্টি করছেন, যা আগামীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশের ভিত্তি রচনা করছে। এই প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন বাংলাদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক অর্জন।

টাইমস ডেস্ক/১১ নভেম্বর ২০২৩

Share