ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ :২৪ ঘণ্টার উল্লেখযোগ্য খবর
শুক্রবার সাত দিনের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ইসরায়েল ও হামাস আবারও লড়াই শুরু করেছে। গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এদিন শতাধিক মানুষের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন।
গাজা থেকে হামাস যোদ্ধারা ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে একটি নজিরবিহীন হামলা চালায়। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, সেই হামলায় প্রায় এক হাজার ২০০ নিহত হয়, যার অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।
পাশাপাশি প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি করা হয়। জবাবে ইসরায়েল হামাসকে ধ্বংস করার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং গাজায় আকাশ, সমুদ্র ও স্থল আক্রমণ শুরু করে। গাজা শাসনকারী হামাস সরকারের মতে,ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, যার মধ্যে বেশির ভাগই বেসামরিক লোক। সপ্তাহব্যাপি যুদ্ধবিরতির সময় হামাস ২৪০ ফিলিস্তিনি বন্দির বিনিময়ে ৮০ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে।
যুদ্ধের ৫৬তম দিনে গত ২৪ ঘণ্টার পাঁচটি উল্লেখযোগ্য খবর :ফের লড়াই শুরু
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে লড়াইয়ের একটি সাময়িক বিরতির মেয়াদ স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল ৭টায় শেষ হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা থেকে ছোড়া একটি রকেট বাধা দেওয়ার পর পরই যুদ্ধ পুনরায় শুরু হয়।
সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘হামাস কার্যকরী বিরতি লঙ্ঘন করেছে এবং ইসরায়েলি ভূখণ্ডের দিকে গুলি চালিয়েছে।’
হামাসের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র এএফপিকে জানিয়েছেন,গোষ্ঠীটির সশস্ত্র শাখা ‘যুদ্ধ পুনরায় শুরু করার’ এবং ‘গাজা উপত্যকা রক্ষার আদেশ’ পেয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা শুক্রবার গাজায় দুই শতাধিক ‘সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে’ আঘাত করেছে।
বাড়ছে মৃত্যু
গাজা উপত্যকায় হামাস চালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, শুক্রবার পুনরায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ১০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা এক বিবৃতিতে বলেছেন, মন্ত্রণালয়ের কাছে ‘ইসরায়েলি আগ্রাসনে শত শত আহতের’ সংখ্যাও বাড়ছে।
বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে শত্রুতা পুনরায় শুরু করার জন্য গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক নতুন লড়াইকে ‘বিপর্যয়কর’ বলেছেন। পাশাপাশি যুদ্ধরত পক্ষগুলোর ওপর ‘প্রভাবশালী সব পক্ষ এবং রাষ্ট্র’কে যুদ্ধবিরতির জন্য প্রচেষ্টাকে দ্বিগুণ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। হোয়াইট হাউস বলেছে, তারা একটি বর্ধিত মানবিক বিরতির জন্য চাপ অব্যাহত রাখবে।
ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাথরিন কোলোনা যুদ্ধবিরতির সমাপ্তিটিকে ‘খুব খারাপ খবর’ বলে অভিহিত করেছেন এবং গাজায় আরো জিম্মি মুক্তি ও সহায়তা বিতরণে বিরতি পুনরায় চালু করার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধান মধ্যস্থতাকারী কাতার গাজায় সহিংসতা বন্ধে দ্রুত আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে। ক্রেমলিন বলেছে, তারা বিরতির একটি সম্প্রসারণ চায়।
মধ্যস্থতার প্রচেষ্টা
যুদ্ধ পুনরায় শুরু হওয়া সত্ত্বেও মধ্যস্থতাকারী কাতার ও মিসরের অংশগ্রহণে যুদ্ধবিরতি পুনর্নবীকরণের লক্ষ্যে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। এ আলোচনার সঙ্গে সম্পর্কিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র এএফপিকে জানিয়েছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার মার্কিন শীর্ষ কূটনীতিক অ্যান্টনি ব্লিনকেন ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি সতর্ক করেছিলেন, ফিলিস্তিনি বেসামরিকদের রক্ষা করতে হবে।
জিম্মি-বন্দি বিনিময়
বৃহস্পতিবার আরো আটজন ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি পেয়েছে, যাদের কয়েকজনের দ্বৈত নাগরিকত্বও রয়েছে। তারা ইসরায়েলে পৌঁছনোর পর দেশটির কারাগার পরিষেবা জানিয়েছে, আরো ৩০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্ত করা হয়েছে। সূত্র : এএফপি
২ ডিসেম্বর ২০২৩
এজি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur