সাবেক জনপ্রিয় ছাত্রনেতা ও চাঁদপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী ইব্রাহিম জুয়েলকে স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব পদ থেকে ২৫ নভেম্বর শনিবার সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কাজী ইব্রাহিম জুয়েল নিজ ফেসবুক পেইজ থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে ইব্রাহীম জুয়েল বলেন: আসামীরা মুক্তি পাইলো….স্বাক্ষীর সাজা হইল
ফেসবুক পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন….
অবরোধ হরতাল পালনের সময় পুলিশের হামলায় আহত হয়ে কিছু দিন হাসপাতালে চিকিৎসায় ছিলাম, এর মধ্যেই স্বেচ্ছাসেবক দল সহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দের খোঁজখবর সহ আর্থিক সহযোগিতা করছি প্রতিনিয়ত এবং পাশাপাশি কারাভোগীদেরসহ আহতদের পারিবারিক দেখা সাক্ষাৎ অব্যাহত আছে কিন্তু কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ আমার কোন খোঁজ খবর না নিয়ে, এমনকি কোন কথা না বলে শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত হয়ে সাংগঠনিক শিষ্টাচার বহির্ভূত এ সিন্ধান্ত চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক,সদস্য সচিব ও ১১ জন যুগ্ম আহবায়ক সহ মোট ৬১ জনের মধ্যে শুধুমাত্র সদস্য সচিব হিসাবে আমার উপর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া একেবারেই অস্বাভাবিক ও অবিচার। যাহারা দলের ক্লান্তিলগ্ন সময় এ হীন কুরুচিপূর্ণ ঘৃন্যতম কার্যক্রেম সহযোগিতা করেছেন ন্যায় বিচারক আল্লাহ তাদের অবশ্যই দেখবেন – আমিন।
মহান দয়াময় আল্লাহ সিন্ধান্তই মঙ্গল – আলহামদুলিল্লাহ।
এদিকে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব ইব্রাহিম কাজী জুয়েলের এই স্টাটাসের নীচে দলের শত শত নেতাকর্মীদের মন্তব্যে চরম দুঃসময়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানান।
এক ছাতনেতা ফেসবুকে পোস্ট করেন ‘নিজের দলকে সামলাবো না আওয়ামী লীগকে সামলাবো?’
আরও পড়ুন… স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব ইব্রাহীম জুয়েলকে কারাগার থেকে হাসপাতালে প্রেরণ
মোঃ মোবারক হোসেন মিয়াজী বলেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের এমন সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয় তাদের নিজেদের অবস্থান কতটুকু ছিলো রাজপথে তৃণমূল কর্মীরা যানতে চায় কাজি ইব্রাহিম জুয়েল ভাই একজন দল প্রিয় কর্মী বান্ধব নেতা রাজপথে যার অবস্থান ছিলো সক্রিয় আমি হাজীগঞ্জ উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের পক্ষ থেকে এমন নোংরা সিদ্ধান্তের তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
শফিকুল ইসলাম বলেন, এই নোংরা রাজনীতির শেষ কোথায় যোগ্য নেতাদের সরিয়ে অযোগ্য দের কে দিয়ে সরকার হটানো সম্ভব না জুয়েল ভাই ছাড়া চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল কখনোই শক্তিশালী সংগঠনে রুপান্তরিত হবে না।
আরও পড়ুন… ইব্রাহীম জুয়েলসহ চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ৮ জন কারামুক্ত
চলতি বছরের ১০ মে চাঁদপুর জেলা দায়রা জজ আদালতে স্বেচ্ছায় স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব ইব্রাহিম কাজী জুয়েলসহ ৯ জন আসামি হাজির হন। জেলা ও দায়রা জজ এস এম জিয়াউর রহমান তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরনের নিদেশ দেন। দীর্ঘ ৩৪ দিন পর কারামুক্ত হন তিনি।
প্রসঙ্গত, পারিবারিকভাবে ইব্রাহিম কাজী জুয়েলের পরিবারের সকল সদস্য পদ পদবিসহ এ দলের রাজনীতিতে সাথে জড়িত।
তিনি স্কুল জীবনেই ছাত্রদলের তৃণমূল থেকে রাজনীতি শুরু করেন। তিনি চাঁদপুর সরকারি কলেজের শহীদ জিয়া হল শাখা ছাত্র দলের নেতৃত্ব থেকে শুরু করে পর্যায় ছাত্রদলের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। চাঁদপুর সরকারি বিশ্বদ্যিালয় কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি, চাঁদপুর জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক থেকে চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিবের দায়িত্বে সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
তিনি ঢাকাসহ চাঁদপুরে সর্বোচ্চ রাজনৈতিক মামলার আসামী হয়েছেন এবং , বেশীর ভাগ মামলায় ১(এক) নম্বর আসামী হয়ে একাধিকবার কারাভোগ করেন। শুধু তাই নয়, পুলিশ ও র্যাবের ক্রসফায়ার থেকে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় কোন রকমে বেচেঁ দীর্ঘদিন পঙ্গুত্বভোগ করে মৃত্যুপথযাত্রী ছিলেন।
১/১১ সময়ে সর্বপ্রথম ইব্রাহিম কাজী জুয়েলের নেতৃত্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে নিজস্ব অফিস থেকে তৎকালিন মাঠে অবস্থানরত সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ওপেন টেলিকনফারেন্স করেন। যা দেশের সকল টিভি চ্যানেল ও প্রিন্ট মিডিয়ায় লিড নিউজ আকারে প্রচারিত হয়।
তিনি ১/১১ এর প্রেক্ষাপটে যখন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দরা দলের পরিচয় দিতে দ্বিধাবোধ করতো, ঠিক তখন তিনি গুটিকয়েক নেতাকর্মী ও চাঁদপুরের মিডিয়ার সহযোগিতায় জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হয়েও বিএনপিসহ সকল অঙ্গসংগঠনের কর্মসূচি পালন সহ তৃণমূল নেতাকর্মীর পাশে ছিলেন।
তিনি চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব হিসাবে সাংগঠনিক কাজ করার সুবাধে চাঁদপুর জেলার স্বেচ্ছাসেবক দল এর ইতিহাসে এই প্রথম ৮টি উপজেলা, ৭টি পৌর, ৯০ টি ইউনিয়ন, ৭৫ টি ওয়ার্ড কমিটি গঠনকল্পে সক্রিয় সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেন, যার ফলে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মতামতে ও সার্বিক জরিপ মূল্যায়নে যুবদল ও ছাত্রদলের চাইতে চাঁদপুর জেলা ও উপজেলা এবং পৌর স্বেচ্ছাসেবক দল অনেক বেশী সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হওয়ায় মামলা-হামলাসহ প্রতিটি আন্দোলন-কর্মসূচিতে পুলিশ-আওয়ামী বাহিনীকে প্রতিরোধ করে বেগমান হয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে বলে জানান, দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
তাই সকল নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধারণ করে একটু সাহস নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এবং একটু ঘুরে দাড়ালেই জিতবে বাংলাদেশ,ফিরে আসবে গণতন্ত্র, অর্জন হবে ভোটের অধিকার ইনশাআল্লাহ।
স্টাফ করেসপন্ডেট, ২৮ নভেম্বর ২০২৩