দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর ইন্টারনেট গ্রাহক বেড়েছে। জানুয়ারি মাস শেষে দেশে মুঠোফোন, ব্রডব্যান্ড ও অন্যান্য মাধ্যমভিত্তিক ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল ৯ কোটি ৯২ লাখ ৪৬ হাজার। এই সংখ্যা মার্চের শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ৩২ লাখ ৫৩ হাজারে। অর্থাৎ ৩ মাসে ইন্টারনেট গ্রাহক বেড়েছে ৩৯ কোটি ৫৪ লাখ।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) হিসাবে, ইন্টারনেট গ্রাহক বেশি বেড়েছে মার্চ মাসে। ফেব্রুয়ারি শেষে ইন্টারনেট গ্রাহক ছিল ১০ কোটির কিছু কম। মার্চে তা ৩২ লাখ বেড়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, করোনাভাইরাস ঠেকাতে দেওয়া সাধারণ ছুটির মধ্যে মানুষ ইন্টারনেট বেশি ব্যবহার করছে। আবার এই সময়ে অনেক নতুন গ্রাহকও তৈরি হয়েছে। মানুষ ফোনে কল করে কথা বলা কমিয়ে বিভিন্ন ধরনের ওভার দ্য টপ (ওটিটি) ভিত্তিক মাধ্যম ব্যবহার করে কথা বলছে। এর মধ্যে রয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, ইমো ইত্যাদি।
জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, এখন ইন্টারনেট মানুষের নিত্যদিনের প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এই বৃদ্ধি অস্বাভাবিক নয়। তিনি বলেন, এখন জীবনযাপনের লাইফলাইন ইন্টারনেট। অফিস করতে হচ্ছে ইন্টারনেটে। ব্যবসা ইন্টারনেটে। বিচারকাজও ইন্টারনেটে শুরু হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা ইন্টারনেটের প্রয়োজনীয়তার মধ্যেই বসবাস করছিলাম। এখন করোনার কারণে ঘাড়ের ওপর এসে পড়েছে। করোনা শেষেও ইন্টারনেট ব্যবহার বাড়বে।’
আলোচ্য সময়ে মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৭ লাখ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ৫২ লাখে। অন্যদিকে ব্রডব্যান্ড ও অন্যান্য মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বেড়েছে ২৩ লাখ। এসব মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে ৮০ লাখ ছাড়িয়েছে।
মোবাইল অপারেটরগুলো মানুষের বাড়তি ইন্টারনেট ব্যবহার করার প্রবণতার কথা জানিয়েছে। দেশে কেউ ৯০ দিনের মধ্যে একবার ব্যবহার করলেই তাঁকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হিসেবে গণ্য করা হয়।
এদিকে মুঠোফোন গ্রাহকের সংখ্যা সার্বিকভাবে কমেছে। মার্চ শেষে মুঠোফোন ব্যবহারকারী সক্রিয় গ্রাহকের সংখ্যা কমে হয়েছে ১৬ কোটি ৫৩ লাখের কিছু বেশি। যেটা জানুয়ারির তুলনায় ৩ লাখের মতো কম। জানুয়ারি শেষে মুঠোফোন গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৫৬ লাখ।
মার্চ শেষে গ্রামীণফোনের গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৫৩ লাখ, যা জানুয়ারি শেষে ছিল ৭ কোটি ৬৪ লাখ ৬৯ হাজার। এর মানে হলো, গ্রামীণফোনের গ্রাহকসংখ্যা বেশ কমেছে। এর অবশ্য একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে কোম্পানিটি। তারা বলছে, তাদের কাছে বিক্রি করার মতো নম্বর ছিল না। আর নিয়মিত কিছু পুরোনো নম্বর নিষ্ক্রিয় হয়েছে।
মার্চ শেষে রবি আজিয়াটার গ্রাহক দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৯৭ লাখের কিছু বেশি। তিন মাসে রবির গ্রাহক ৪ লাখ বেড়েছে। একই সময়ে বাংলালিংকের গ্রাহক দাঁড়ায় ৩ কোটি ৫৪ লাখের মতো। তাদের গ্রাহকও ৪ লাখের বেশি বেড়েছে। টেলিটকের গ্রাহক দাঁড়িয়েছে ৪৯ লাখের কিছু বেশি, যা জানুয়ারির তুলনায় কিছুটা বাড়তি।