আগস্টের প্রথম রোবাবার (৫ আগস্ট) বিশ্ব বন্ধু দিবস। প্রতি বছর আগস্ট মাসের প্রথম রবিবার সারা বিশ্বে একযোগে বন্ধু দিবস পালন করা হয়। অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও এ দিনেই বন্ধু দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। আমাদের দেশে এ দিবসটির প্রচলন বিগত শতাব্দীর শেষাংশে হলেও এখন তা সারা দেশের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে গেছে।
তবে কীভাবে এ দিন বন্ধু দিবস পালনের জন্য স্বীকৃত তা অনেকের অজানা। যতদূর জানা যায়, ১৯৩৫ সালে মার্কিন কংগ্রেস বন্ধুদের সম্মানে একটি দিন উৎসর্গ করার কথা মাথায় রেখে আনুষ্ঠানিকভাবে আগষ্টের প্রথম রোববারকে জাতীয় বন্ধু দিবস বলে ঘোষণা দেয়। একই সঙ্গে দিনটিকে সরকারি ছুটির দিন হিসেবেও নির্ধারণ করা হয়।
প্রতিবছর দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে বিশেষ করে প্যারাগুয়েতে ঘটা করে বন্ধু দিবস পালিত হতো। ধীরে ধীরে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও অন্যান্য দেশে এ দিনটি ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়। বন্ধু দিবস ঘোষণার উৎপত্তি বা কারণ ঠিক কী তা সঠিকভাবে বলা মুশকিল।
তবে তৎকালীন রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা অর্থাৎ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা,বিশৃঙ্খলা ও হিংস্রতা মানুষের মধ্যে অনেকটাই বন্ধুর অভাব তৈরি করেছিলো বলে অনেকের অভিমত। ফলে রাষ্ট্রীয়ভাবে বন্ধু দিবস নির্ধারিত হয়েছিলো বলে অনেকে মনে করেন।
আবার কথিত রয়েছে, ১৯৩৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এক ব্যক্তি নিহত হন। দিনটি ছিল আগস্টের প্রথম শনিবার। বন্ধু বিয়োগের ঘটনায় আঘাত সহ্য করতে না পেরে সে ব্যক্তির এক বন্ধু আত্মহত্যা করেন। বন্ধুর জন্য বন্ধুর এ আত্মত্যাগের ঘটনায় সে সময় চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক উত্তেজনা। সে বছরই মার্কিন কংগ্রেস বন্ধুত্বের প্রতি সম্মান জানিয়ে আগস্টের প্রথম রোববারকে বন্ধু দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
অপর এক সূত্র অনুযায়ী, বন্ধু দিবসের শুরু হয়েছিলো আরও আগে। ১৯১৯ সালে আগস্টের প্রথম রোববার বন্ধুরা নিজেদের মধ্যে কার্ড, ফুল, উপহার বিনিময় করতো। ১৯১০ সালে জয়েস হলের প্রতিষ্ঠিত হলমার্ক কার্ড বন্ধু দিবস পালনের রীতিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়েছিলো।
সম্প্রতি বন্ধু দিবসের দিন তারিখ বদলানো হয়েছে। ১৯৫৮ সালে আন্তর্জাতিক নাগরিক সংগঠন ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডশিপ ক্রুসেড বিশ্বে শান্তির উদ্দেশ্যে প্যারাগুয়েতে ৩০ জুলাইকে বিশ্ব বন্ধু দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেয়।
১৯৫৮ সালের ২০ জুলাই ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডশিপ ক্রুসেডের প্রতিষ্ঠাতা ড. ৠামন আর্তেমিও ব্রেঞ্চো বন্ধুদের সঙ্গে প্যারাগুয়ের পুয়ের্তো পিনাসকোতে এক নৈশভোজে এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। সে রাতেই ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডসিপ ক্রুসেড প্রতিষ্ঠা পায়।
এ প্রতিষ্ঠানটি ৩০ জুলাই বিশ্বব্যাপি বন্ধু দিবস পালনের জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব পাঠায়। প্রায় ৫ যুগ পর ২০১১ সালের ২৭ জুলাই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ৩০ জুলাইকে বিশ্ব বন্ধু দিবস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।
এখনও বাংলাদেশ-ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আগষ্টের প্রথম রোববারই বন্ধু দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। আবার কোনো কোনো দেশে ৮ এপ্রিল বন্ধু দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
বর্তমানে সারাবিশ্ব বন্ধু দিবস পালন করে। এ দিন বিভিন্নভাবে উৎযাপন করা হয়। এ দিনে বন্ধুরা একে-অপরকে বিভিন্ন ধরণের কার্ড, চকলেট, ফুল ও বিভিন্ন উপহার সামগ্রী দিয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরণের প্রোগ্রাম করা হয়। বিভিন্ন স্থানে কন্সার্ট এর ব্যবস্থা করা হয়। ১৯৯৭ সালে বন্ধু দিবসের অ্যাম্বেসেডর হিসেবে বিখ্যাত কার্টুন চরিত্র ‘পু’-কে বিশ্ববাসীর সামনে উন্মুক্ত করা হয়।
জীবনে ভালো বন্ধু পাওয়া সত্যিই অনেক ভাগ্যের ব্যাপার। এ পৃথিবীতে সব সম্পর্কই যতেœর ওপর টিকে থাকে। ভালো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক পাওয়া যেমন কঠিন, এর চেয়েও বেশি কঠিন এ সম্পর্ককে রক্ষা করা।
strong > বার্তা কক্ষ
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০০:৫০ পিএম, ৯ আগস্ট ২০১৮, রোববার
এজি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur