Home / স্বাস্থ্য / আগাম জানা যাবে ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকি
health

আগাম জানা যাবে ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকি

মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দেশে প্রতিদিন অন্তত ২৭৩ জন মারা যান। বছরে মৃত্যু এক লাখের মতো। নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হন প্রায় দেড় লাখ মানুষ। সব ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশ ক্যান্সার স্টাডি গ্রুপের তথ্য বলছে, ব্যয়বহুল হওয়ায় আক্রান্তদের ৪০ শতাংশই চিকিৎসা নিতে পারেন না।

সম্প্রতি এক গবেষণায় বলা হয়, পরিবেশে মিশে থাকা তেজস্ক্রিয় গ্যাস রেডন এবং থোরন ফুসফুস ক্যান্সারের জন্য দায়ী। এ দু’ তেজস্ক্রিয় পদার্থের উপস্থিতি শনাক্ত এবং সে অনুযায়ী সতর্কতা অবলম্বন করলে ফুসফুস ক্যান্সার অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। কিন্তু রেডন ও থোরন শনাক্তকারী কিট বা ডিটেক্টর ব্যয়বহুল এবং সহজলভ্যও নয়। এমন বাস্তবতায় বড় সুখবর হতে পারে দেশের পরমাণু বিজ্ঞানী ড. সোপান দাসের উদ্ভাবিত ‘রেডন থোরন ডিস্ক্রিমিনেটিভ ডিটেক্টর’।

এ কিট ব্যবহার করে যে কোনো মানুষ ঘর, কর্মস্থল কিংবা শিল্পকারখানায় রেডন থোরন শনাক্ত করতে পারবেন। কিটের পারদ বলে দেবে, পরিবেশ নিরাপদ নাকি ক্যান্সারের জীবাণু রয়েছে। কোথাও রেডন ও থোরনের উপস্থিতি থাকলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী সতর্কতা অবলম্বন করা হলে ফুসফুসের ক্যান্সার থেকে সুরক্ষা পাওয়া যাবে।

জানা গেছে, কোরিয়া অ্যাডভান্স ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে এ বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন ড. সোপান। তাঁর উদ্ভাবিত রেডন থোরন ডিস্ক্রিমিনেটিভ ডিটেক্টর নিয়ে গবেষণাগারে সফল নমুনা পরীক্ষা শেষে হয়েছে, যা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে নিউক্লিয়ার টেকনোলজি জার্নালে। বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য রেডন থোরন ডিস্ক্রিমিনেটিভ ডিটেক্টর এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত।

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সোপান সমকালকে জানান, প্রায় এক যুগ ধরে এ কিট তৈরি নিয়ে গবেষণা করছেন তিনি। তাঁর চাওয়া, ফুসফুস ক্যন্সারের ঝুঁকিতে থাকা লাখো মানুষের জীবন রক্ষায় ব্যবহার হোক এই কিট। স্থানীয়ভাবে অত্যন্ত কম দামে এ কিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন সম্ভব।

দেশের মধ্যে সহজলভ্য করার পাশাপাশি এই কিট বিশ্ববাজারে রপ্তানির মাধ্যমে বড় অঙ্কের আয়ের সম্ভাবনাও রয়েছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানিতে প্রায় একই প্রযুক্তির কিটের কিছু ব্যবহার আছে, যার বাজারমূল্য বাংলাদেশি মুদ্রায় সাত লাখ টাকার মতো। অথচ রেডন থোরন ডিস্ক্রেমিনিটিভ ডিটেক্টর কিটের দাম পড়বে নামমাত্র। বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান এই কিটের বাণিজ্যিক উৎপাদনে আগ্রহ দেখালে সব ধরনের প্রযুক্তি সহায়তা দিতে তিনি প্রস্তুত।

২২ জুন ২০২৩
এজি