অস্ট্রিয়ায় ২০ দিনের লকডাউন

ইউরোপে জুড়ে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। নতুন এসব বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করার পরও ২০ দিনের জাতীয় লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রিয়া। করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এটি অস্ট্রিয়ার চতুর্থ জাতীয় লকডাউন। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ সংবাদ প্রকাশ করা হয়।

গত রোববার রাতে ওআরএফ টিভিতে বক্তৃতা দেওয়ার সময় দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী উলফগ্যাং মুকস্টেইন বলেন, ‘সরকারকে এখন পাল্টা পদক্ষেপ নিতে হবে।’

মধ্যরাত থেকে ঘরে বসে কাজ করা এবং অপ্রয়োজনীয় শপিংমল বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে অস্ট্রিয়া। নতুন নিষেধাজ্ঞায় অনুযায়ী রেস্তোরাঁ, বার, হেয়ারড্রেসার, থিয়েটার এবং অপ্রয়োজনীয় দোকানগুলো অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। এই নিষেধাজ্ঞা ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। যদিও কর্মকর্তারা বলেছেন যে ১০ দিন পর বিধিনিষেধগুলো পুনরায় মূল্যায়ন করা হবে।

ফেব্রুয়ারিতে কার্যকর হওয়া আইন নিয়ে গত সপ্তাহে অস্ট্রিয়া প্রথম ইউরোপীয় দেশ হিসেবে করোনা টিকাকে একটি আইনি প্রয়োজনীয়তা তৈরি করেছে। প্রতিবেশী জার্মানির রাজনীতিবিদেরা অনুরূপ ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করছেন। কারণ সেখানে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটগুলোতে রোগী দিয়ে সম্পূর্ণ হয়েছে এবং আক্রান্তের সংখ্যা নতুন রেকর্ডে গড়েছে।

এদিকে নতুন নিষেধাজ্ঞায় ফুসকে ওঠে ইউরোপ। নেদারল্যান্ডস ও বেলজিয়ামে মানুষ পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

লকডাউনের আগে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। জাতীয় পতাকা এবং ব্যানারে ‘স্বাধীনতা’ লেখা নিয়ে বিক্ষোভকারীরা ‘প্রতিরোধ’ বলে চিৎকার করে এবং পুলিশকে গালিগালাজ করে।

গত শনিবার দেশটির নেদারল্যান্ডসের রোটারডামে বিক্ষোভে পুলিশকে লক্ষ্য করে আতশবাজি ছোড়ে এবং হেগে সাইকেলে আগুন লাগিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। এরপর পুলিশ গুলি চালালে সহিংসতা আরও বেড়ে যায়।

এদিকে অস্ট্রিয়া, ক্রোয়েশিয়া, ইতালিতেও হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে আসে। তারাও নতুন নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে।

অন্যদিকে মহাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধ পাচ্ছে। আর এ নিয়ে ব্যাপক সতর্কবার্তা প্রচার করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়া নিয়ে ‘খুব উদ্বিগ্ন’ সংস্থাটি।

গত শনিবার সংস্থাটির আঞ্চলিক পরিচালক ডা. হান্স ক্লুজ বলেন, যদি ইউরোপজুড়ে কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে আগামী বসন্তের মধ্যে আরও অর্ধ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু রেকর্ড হতে পারে।

হান্স ক্লুজ আরও বলেন, ‘করোনাভাইরাস আমাদের অঞ্চলে আরও একবার মৃত্যুর এক নম্বর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা জানি আমাদের কী করতে হবে। এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হলে আমাদের টিকা নেওয়া, মাস্ক পরা এবং কোভিড পাস ব্যবহার করতে হবে।’

Share