চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নানা অনিয়মে প্রতিদিন দায়িত্ব পালন করছেন হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার নাসরিন পারভিন। তার এ অনিয়মের কারণে রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ।
দীর্ঘদিন ধরেই হাসপাতালের ২য় তলায় তার ২০৭ নম্বর কক্ষের সামনে গিয়ে দেখা যায় ওই কক্ষের সামনে রোগী আছে ঠিকই কিন্তু ডাক্তার নেই।
তার সহকারীকে ডাক্তার কোথায় আছে জিজ্ঞেস করলে বলেন, তিনি ওটিতে কিংবা ওয়ার্ড রাউন্ডে আছে। অথচ অপারেশন রুমে কিংবা বিভিন্ন ওয়ার্ডে খবর নিয়ে জানা যায় ডাক্তার নাসরিন পারভিন সেখানে নেই।
তিনি আছেন আল্ট্রাসনোগ্রাাম করার জন্য হাসপাতালের নিকটতম কোনো প্রাইভেট ডায়াগণস্টিক সেন্টারে বা নিজের কোনো ব্যক্তিগত কাজে।
এছাড়াও তিনি প্রতিদিন সরকারি নিয়ম ভেঙ্গে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই দায়সারা দায়িত্ব পালন করে হাসপাতাল ত্যাগ করেন। সরকারি নিয়মে সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত একজন মেডিকেল অফিসারের দায়িত্ব পালন করার নিয়ম থাকলেও তিনি সে নিয়মের বাইরে।
হাসপাতালে বিভিন্ন জনের কাছে খবর নিয়ে জানা যায়, তিনি প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০ টা কিংবা ১১ টায় তার কর্মস্থলে আসেন। আবার এর ফাঁকে কোনো প্রাইভেট ডায়াগণস্টিক বা ক্লিনিক থেকে আল্ট্রাসোনোগ্রাম করার জন্য কোনো ফোন আসলে হাসপাতালে তার কক্ষের সামনে রোগীদের দাঁড় করিয়ে তিনি সেখানে চলে যান।
তার এমন অনিয়মের কারণে রোববার (১৬ এপ্রিল) বেলা সোয়া ১২ টায় তার ২০৭ নম্বর কক্ষের সামনে তার কাছে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা একধিক রোগীর কাছে থেকে তার বিরুদ্ধে অনেক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়।
হাইমচর উপজেলার চরপোড়া মুন্সি গ্রামের শাহিন আলম কাজী, এমরান কাজী, চান্দ্রা বাজারের ফারহানা বেগমসহ কয়েকজন ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা সকাল ১১ পরীক্ষা করিয়ে এসে দেখি সোয়া ১২টা থেকে তিনি তার রুমে নেই। বেশ কিছু সময় ধরে তার জন্য অপেক্ষা করছি। কিন্তু তিনি ফিরে আসেননি। শারীরিক সমস্যার জন্যে তাকে দেখিয়ে কি লাভ হলো। তিনি আমাদের পরীক্ষা দিয়েছেন অথচ সে কাগজপত্র না দেখে কোনো ঔষধ লিখে না দিয়েই দুপুর ১ টার আগেই চলে গেছেন।
অনেক দুর দুরান্ত থেকে চিকিৎসা সেবার জন্য্যে সরকারি হাসপাতালে আসি। ডাক্তাররা যদি এমন অনিয়ম করে রোগী দেখেন তাহলে আমরা তাদের কাছে কি চিকিৎসা সেবা পাবো।
আমাদের পক্ষে তো’ এত দুর থেকে প্রতিদিন আসা সম্ভব হয়নি। এছাড়াও ২০/২৫ দিন পূর্বেও বেলা সাড়ে ১২ টার সময় তিনি তার কক্ষে না থাকায় রোগীদের কাছে এমন অভিযোগ পাওয়া যায়। হাসপাতালে ডাক্তারের এমন অনিয়মে কতৃপক্ষের কাছে সচেতন মহলের প্রশ্ন এ প্রতিকার আসবে কি? ভোগান্তি থেকে রেহাই পাবে কি সাধারণ মানুষ?
এ ব্যাপারে হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার নাসরিন পারভিন বলেন, ‘রোববার বেলা ১২ আমার বাসায় একটু সমস্যা থাকায় তত্বাবধায়ক স্যারকে বলে আমি চলে গেছি।’
এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. প্রদীপ কুমার দত্তের সাথে কথা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘এটাতো আমার জানা নেই। সোমবার উনি ডিউটিতে আসলে আমি তাকে ডেকে জিজ্ঞসা করবো।’
প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৮: ২৫ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০১৭,সোমবার
এজি