Home / শিক্ষাঙ্গন / ময়মনসিংহ শিক্ষাবোর্ড স্থাপনে প্রক্রিয়া শুরু
ময়মনসিংহ শিক্ষাবোর্ড স্থাপনে প্রক্রিয়া শুরু

ময়মনসিংহ শিক্ষাবোর্ড স্থাপনে প্রক্রিয়া শুরু

‘শিক্ষানগর’ হিসেবে পরিচিতি ময়মনসিংহ শিক্ষাবোর্ড স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। এ উপলক্ষে রোববার (১৪ আগস্ট)শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি সভা ডাকা হয়েছে। এতে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও দেশের সবকটি শিক্ষাবোর্র্ডের চেয়ারম্যানদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। সভায় ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনারগণও উপস্থিত থাকবেন।

দেশে বর্তমানে ৮টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডের পাশাপাশি ১টি কারিগরি ও ১ টি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড রয়েছে। ময়মনসিংহ শিক্ষাবোর্ড স্থাপিত হলে এটি দেশের ৯ম সাধারণ শিক্ষাবোর্ড হবে। সবমিলিয়ে দেশে শিক্ষা বোর্ডের সংখ্যা হবে ১১টি। উল্লেখ্য, ২২৯ বছর আগে ময়মনসিংহ জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল।

গেলো বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহকে বিভাগে রূপান্তর করা হয়। এরপর থেকে সেখানে শিক্ষাবোর্ড স্থাপনের দাবি ক্রমেই জোরালো হয়ে ওঠে। দেশের অন্তত ৪টি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ে বৃহত্তর ময়মনসিংহে শিক্ষার্থী বেশি থাকায় বোর্ড স্থাপনের যৌক্তিকতা রয়েছে বলে মনে করেন এ অঞ্চলের মানুষ।

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি বছর অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল এক লাখ, বরিশাল বোর্ডে ৭১ হাজার, সিলেট বোর্ডে ৭৪ হাজার এবং যশোর বোর্ডে এক লাখ ৩১ হাজার। এর বিপরীতে বৃহত্তর ময়মনসিংহে এ সংখ্যা এক লাখ ৩২ হাজার ৫০০। এ ছাড়া গত বছরের জেএসসি পরীক্ষায় এই ৪টি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ে বেশি পরীক্ষার্থী ছিল এই অঞ্চলে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আধিক্যের কারণে জোরালো হয়ে উঠে ময়মনসিংহে শিক্ষাবোর্ড স্থাপনের দাবি।

বৃহত্তর ময়মনসিংহের শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলায় কলেজ, মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রায় ২ হাজার ৮শ’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর ও নেত্রকোনা জেলা নিয়ে নতুন এ বিভাগটি হলেও বৃহত্তর ময়মনসিংহের দু’ জেলা টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জ ঢাকা বিভাগেই থাকছে। তবে শিক্ষাবোর্ড হলে বৃহত্তর ময়মনসিংহের সঙ্গে এ দু’ জেলা থাকবে কিনা তা’ আপাতত: বোঝা যাচ্ছে না।

ময়মনসিংহ বিভাগ বাংলাদেশের অষ্টম প্রশাসনিক বিভাগ। জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলা নিয়ে ময়মনসিংহ বিভাগ গঠিত। ১৮২৯ সালে ঢাকা বিভাগ প্রতিষ্ঠার সময় থেকে ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চল ঢাকা বিভাগের অংশ ছিল। ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে ঢাকা বিভাগ ভেঙে নতুন ময়মনসিংহ বিভাগ গঠনের ঘোষণা দেন।

ঢাকা বিভাগের উত্তর অংশ থেকে প্রতিবেশি ৮টি জেলা নিয়ে হওয়ার কথা থাকলেও পরে ৬টি জেলা নিয়ে ময়মনসিংহ বিভাগ গঠনের পরিকল্পনা করা হয়। এ সময় টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জবাসী, ময়মনসিংহ বিভাগের অন্তর্ভুক্ত হতে অনীহা ও বিরোধিতা করে এবং ঢাকা বিভাগের অন্তর্ভূক্ত থাকতেই ইচ্ছাপোষণ করে।

২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ৪টি জেলা নিয়ে ময়মনসিংহ বিভাগ গঠিত হয়। বিভাগের এর আয়তন ১০ হাজার ৪শ’৮৫ বর্গকি.মি. ও জনসংখ্যা ১ কোটি ১৩ লাখ ৭০ হাজার জন। নবগঠিত ময়মনসিংহ বিভাগের ৪টি জেলার মধ্যে রয়েছে ২৪টি সংসদীয় আসন, উপজেলা ৩৫টি, থানা ৩৭টি, পৌরসভা ২৬টি, ইউনিয়ন ৩শ’৫২টি, এবং গ্রাম ৭ হাজার ৩০টি।

বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চল (ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল এবং কিশোরগঞ্জ) ১৭৮৭ সালের ১ মে বৃটিশ-ভারত সরকারের আমলে ময়মনসিংহ জেলা হিসেবে গঠিত হয়। পরবর্তীতে ময়মনসিংহ জেলা ৪ টি জেলা নিয়ে ময়মনসিংহ বিভাগ হিসেবে আত্মপ্রকাাশ করে।

ময়মনসিংহ বিভাগ হওয়ার আগ পর্যন্ত ঢাকা বিভাগে জেলা ছিল ১৭টি। নতুন বিভাগ হওয়ায় এখন ১৩ জেলা নিয়ে ঢাকা বিভাগ। ১৯৮৪ সালে সব মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করার সরকারি সিদ্ধান্ত নেয়ার ফলে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও শেরপুর সব মহকুমাই জেলায় উন্নীত হয়।

নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৭:০০ পিএম, ১৪ আগস্ট ২০১৬, রোববার
এজি/ডিএইচ

Leave a Reply