Home / জাতীয় / রাজনীতি / বিএনপির ১৯ সদস্যের দু’টি পদ শূন্যের রহস্য!
bnp

বিএনপির ১৯ সদস্যের দু’টি পদ শূন্যের রহস্য!

সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল। কেবল ঘোষণার অপেক্ষা। অন্যান্য পদের মতো বিএনপির স্থায়ী কমিটির ১৯ সদস্যের নামও ছিল চূড়ান্ত। কিন্তু শেষ মুহূর্তে দেখা দেয় ঘাপলা। চরম নাটকীয়তা। একমত হতে পারেননি শীর্ষ দুই নেতাও। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয় দু’টি পদ খালি রেখেই ঘোষণা করা হবে কমিটি। হয়ও তাই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিতর্কমুক্ত রাখতেই কমিটি গঠনে সময় নেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ছেলে এবং দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা তারেক রহমানের মতামতও নেন তিনি। শলা-পরামর্শ করেন আস্থাভাজন কয়েকজন নেতার সঙ্গেও। এক পর্যায়ে চূড়ান্ত করা হয় কমিটি। চূড়ান্ত কমিটিতে স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে নাম ছিল আবদুল্লাহ আল নোমান এবং সাদেক হোসেন খোকার। তবে এই দুই নেতাকে নিয়ে তীব্র আপত্তি আসে দু’টি মহল থেকে।–মানবজমিন।

সাদেক হোসেন খোকার ব্যাপারে আপত্তি জানান, স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী দুই সদস্য। তাদের একজন অবশ্য পুরো কমিটি গঠনেই প্রভাব রাখেন। এই দুই নেতা একযোগে সাদেক হোসেন খোকার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেন। দলের হাইকমান্ডের প্রতি তারা অনুরোধ জানান, খোকাকে বাদ দিতে। অন্যদিকে, আব্দুল্লাহ আল নোমানের ব্যাপারে আপত্তি জানায়, চট্টগ্রামের প্রভাবশালী একটি পরিবার। ওই পরিবারের প্রধান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলায় যার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। তার ছোট ছেলে, বিএনপির নির্বাহী কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। ওই পরিবারের সদস্যরা বিএনপির হাইকমান্ডের কাছে আব্দুল্লাহ আল নোমানের ব্যাপারে তাদের আপত্তির কথা জানান। সূত্রে জানা গেছে, আব্দুল্লাহ আল নোমান এবং সাদেক হোসেন খোকার ব্যাপারে বিএনপির শীর্ষ দুই নেতার মধ্যেও মতবিরোধ দেখা দেয়। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের নাম বাদ যায় স্থায়ী কমিটি থেকে। এ দুটি পদ শূন্য রেখেই গত ৬ই আগস্ট বিএনপির ৫৯১ সদস্যের মেগা কমিটি ঘোষণা করা হয়।

সাদেক হোসেন খোকা ও আব্দুল্লাহ আল নোমান- দুই জনই দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত। দলের ক্রান্তিলগ্নে সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তারা। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে এই দুই নেতার গ্রহণযোগ্যতাও রয়েছে সবমহলেই। সাত বছর ধরে বিএনপিতে ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছেন তারা। এবারও একই পদ দেয়া হয়েছে তাদের। এ নিয়ে বিএনপির রাজনীতির মুক্তিযোদ্ধাদের অংশে তৈরি হয়েছে হতাশা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এ দুই নেতা স্থায়ী কমিটি থেকে শেষ মুহূর্তে বাদ পড়ায় বিএনপির রাজনীতিতে চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স নষ্ট হয়েছে চরমভাবে। কট্টরপন্থিদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে। শুধু এই দুই নেতার ক্ষেত্রেই নয়, কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে অন্য মুক্তিযোদ্ধারাও গুরুত্ব পাননি বলে আলোচনা রয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদও বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে ক্রমাবনতি হয়েছে তার। স্থায়ী কমিটির সম্ভাব্য সদস্য হিসেবে আলোচনায় থাকা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শাহ মোয়াজ্জেমও কাঙ্ক্ষিত পদ পাননি। জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘনের শিকার হয়েছেন উদারপন্থি হিসেবে পরিচিত ড. ওসমান ফারুক, ইনাম আহমেদ চৌধুরীর মতো নেতারা।

বিএনপির ঢাউস এ কমিটি নিয়ে আলোচনা অবশ্য এখনও থেমে নেই। মুক্তিযোদ্ধা জাফরুল্লাহ চৌধুরী হয়তো মজা করেই বলেছেন, স্থায়ী কমিটির দু’টি পদ জিয়া পরিবারের দুই পুত্রবধূর জন্য খালি রাখা হয়েছে। এর কোনো সত্যতা অবশ্য পাওয়া যায়নি। তবে বিএনপির রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের জয়-জয়কারের দিকেই হয়তো ইঙ্গিত করেছেন তিনি।

নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৮:৩২ পি,এম ২১ আগস্ট ২০১৬,রবিবার
ইব্রাহীম জুয়েল

Leave a Reply