Home / বিনোদন / ক্যামেরার সামনে শাকিব, অপু আর আব্রাম -ভিডিওসহ
ক্যামেরার সামনে শাকিব, অপু আর আব্রাম -ভিডিওসহ
ফাইল ছবি

ক্যামেরার সামনে শাকিব, অপু আর আব্রাম -ভিডিওসহ

নববর্ষের প্রথম বিকেল। চলচ্চিত্র নায়ক শাকিব খানের সাদা পাঞ্জাবিতে বৈশাখী কারুকাজ। নায়িকা অপু বিশ্বাসের সালোয়ার-কামিজে উৎসবের জৌলুশ। তাঁদের ছেলে আব্রাম খান জয় একবার পরছে সুতির টি-শার্ট, একবার উৎসবের পাঞ্জাবি।

পাঁচতারা হোটেলের ভবনের চূড়ায় আর সামনের দেবদারুগাছে বিকেলের হলুদ আলো। শাকিব খান আর অপু বিশ্বাসের মুখে হাসি। তাঁদের সামনে চায়ের কাপে গ্রিন টি। বৈশাখের বিকেলটা তাঁরা একসঙ্গে কাটাচ্ছেন।

ঝড় বয়ে যাওয়া কয়েকটা দিনের পর আজ বৃষ্টিধোয়া আকাশের মতো উজ্জ্বল দেখাচ্ছে তাঁদের দুজনকে। তাঁদের মহাতারকা বনে যাওয়া ছেলে আব্রাম বুঝি ক্যামেরার সামনে পোজ দিতেও শিখে গেছে। কোনো রকমের কান্নার তো তার প্রশ্নই আসে না।

তিন তারকার এই সুখী চা-চক্রে ক্যামেরার ক্লিক ক্লিক, ভিডিও ক্যামেরার জুম ইন-জুম আউট। অপু হাসছেন। এক হাতে ব্যান্ডেজ নিয়ে শাকিব খানের মুখেও সলাজ হাসি। শাকিব ছেলেকে কোলে নিচ্ছেন, দাঁড়িয়ে আবার তুলছেন মাথার ওপরে। এর মধ্যে প্রশ্নও আসছে, তাঁরা দুজন—শাকিব খান আর অপু বিশ্বাস উত্তরও দিচ্ছেন।

শুভ নববর্ষ…
শাকিব খান: দেশে ও দেশের বাইরের সব ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষী ও প্রথম আলোর সব পাঠককে বাংলা নতুন বছরের শুভেচ্ছা। এবারের বৈশাখ অন্য রকম যাচ্ছে। এবার যোগ হয়েছে আমার সন্তান। আব্রাম এরই মধ্যে মহাতারকা।

অপু বিশ্বাস: শুভ নববর্ষ। গত বছর তো অনুভূতি ছিল অন্য রকম। এখন তো মা হয়ে গেছি। সন্তানকে নিয়ে ঘুরছি। বেশ হালকা লাগছে।
কোনো উপহার দিয়েছেন?

শাকিব: হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে গেলাম। তাই কোনো উপহার দিতে পারিনি। তবে আব্রামের চেয়ে বড় উপহার আর কিছু হতে পারে না।
অপু: মানুষ চাইলেই অনেক ধরনের উপহার দিতে পারে। কিন্তু সন্তান যে আমাদের সঙ্গে আছে, এটাই বৈশাখের সবচেয়ে বড় উপহার।
এখান থেকে বের হয়ে শাকিব খান নতুন সিনেমার মহরতে যাবেন।

অপু: আমার শতভাগ সহযোগিতা থাকবে। সে যেন ভালো কাজ করে, এটা আমি সব সময় চাই। সামনে ভালো মানের সিনেমায় কাজ করে যেন সে আরও সুনাম অর্জন করে, সেদিকটায় খেয়াল করব।

কিন্তু আপনি নাকি প্রায়ই শাকিব খানের সহশিল্পীদের নিয়ে আপত্তি করতেন?

অপু: এটা একদমই ভুল কথা। শাকিব তো এই প্রথম নতুন কোনো নায়িকার সঙ্গে কাজ করছে না। আমি আড়ালে ছিলাম, তখনো সে কাজ করেছে। সহশিল্পীদের নিয়ে কোনো মতবিরোধ ছিল না। বিগত দিনে আমি অনেক সহযোগিতা করেছি, তা না হলে সে এতটা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারত না।

শাকিব: এখন আর পেছনের দিকে না যাই। সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।

সবার চাওয়া, অপু বিশ্বাসও ফিরে আসুক। নায়িকা হিসেবে অপুর প্রত্যাবর্তন কবে হচ্ছে?

শাকিব: আমি এত ব্যস্ত থাকি, অপুও যদি ব্যস্ত থাকে, তাহলে আমার সংসার-সন্তান সবকিছুই ভেস্তে যাবে। আমি নিশ্চয়ই চাইব না, নায়িকা হিসেবে সে ফিরে আসুক। তা ছাড়া স্বামী-স্ত্রীর সিনেমা জুটি হিসেবে দর্শকেরা গ্রহণ করতে চান না।

স্বাধীনভাবেও তো অপু কাজ করতে পারেন?

শাকিব: আমি চাইব না, স্বাধীনভাবেও সে কাজ করুক। টাকার জন্য তার সিনেমা করার দরকার আছে বলে মনে হয় না। আমি ভরণ-পোষণ করাতে পারছি।

অপু কী বলেন?
অপু: আমার কিছুই বলার নেই। শাকিব যা চেয়েছে, আমি সব সময় তা-ই করেছি। সংসারে মতবিরোধ করে তো ভালো থাকা যাবে না। তবে যেসব ছবি আটকে আছে, সেসবের কাজ শেষ করে দিলে ঠিক আছে। আমার বাচ্চা যেহেতু অনেক ছোট, আমিও বাচ্চার ভালোটাই চাই।
শাকিব: একজন না একজনকে তো সংসারের দায়িত্ব নিতে হয়। ভারতেরও অনেক নায়িকা সন্তানের কথা ভেবে সিনেমা থেকে দূরে সরে যান। অক্ষয় কুমার খুব ভালো কাজ করেন। তাঁর স্ত্রী টুইঙ্কেল খান্নাও হিরোইন। কিন্তু যখন বাচ্চা হয়ে গেছে, তখন টুইঙ্কেল তাঁর মতো জীবন যাপন করছেন। এ রকম অনেক নজির আছে।

বিয়ের পর এত দিন তাহলে কাজ করতে দিলেন কেন?
শাকিব: অপু সিনেমায় এসেছে, তার কিছু প্রাপ্তির দরকার ছিল। সেসবের জন্য সময়েরও দরকার ছিল। বিয়ের পর সবকিছু গোপন রেখে তাই আমরা কাজ করেছি। বাচ্চার বিষয়টাও গোপন করেছি। আমাদের দেশের সমাজব্যবস্থা যে রকম, তাতে অনেকেই হয়তো মনে করবেন, শাকিব খান এত বড় সুপারস্টার, তাঁর স্ত্রীকে কেন অভিনয় করতে হবে?
আপনাদের বিয়ে-সন্তানের বিষয়টি এভাবে গণমাধ্যমে আসাটাকে অনেকে নাটক মনে করছেন। কী বলবেন?

শাকিব: এখন যেহেতু বেশি সিনেমা হচ্ছে না, তাই বেকার লোকের সংখ্যাও একটু বেশি। পরিচালক সমিতির তালিকা দেখবেন, অনেক পরিচালক। তাঁরা এফডিসিতে আড্ডাও মারছেন। কিন্তু কাজ করছেন কতজন? প্রযোজকের ক্ষেত্রেও দেখবেন একই অবস্থা। শিল্পীদের ক্ষেত্রেও তা-ই। অনেক শিল্পী তো নিবন্ধিত আছেন, কাজ করছেন কতজন? শত শত লোকের দিকে না তাকিয়ে দেখতে হবে, এই শিল্পের ভালো লোকেরা কী বলছেন। সফল মানুষেরা কী বলছেন। আজকে ৬০০ শিল্পী কী বললেন, তাতে আমার কিছু যায়-আসে না। কিন্তু রাজ্জাক, আলমগীর, ফারুক, সোহেল রানা, ববিতা, কবরী, শাবানা যখন কথা বলবেন, তখন তাঁদের বিষয়টা গ্রহণযোগ্য। আমার কাছে মনে হয়, এই দেশে এক নম্বর হওয়াটা একটা যন্ত্রণার ব্যাপার। এক দিন বা দুই দিনের জন্য হলে ঠিক আছে, কিন্তু দীর্ঘদিন প্রথম স্থান ধরে রাখলে তখন শত্রুর অভাব হয় না। ব্যাপার না, আমাদের নাম–বদনাম দুই-ই নিয়ে চলতে হবে।

আপনি নাকি নববর্ষে অপুকে আপনার বাসায় নিয়ে যাবেন?
শাকিব: আমার বাড়িতে তো অপু নয় বছর ছিল। সবকিছুই করেছি। অভিনয়জীবনের স্বার্থে গোপন রাখার কারণে বিষয়টি কেউ জানতে পারেনি। একটা বিষয় হচ্ছে, অপুর কিছু প্রাপ্তির দরকার ছিল, সে কারণে কাজও বন্ধ করাইনি।

আপনি কি চান না, আপনার মতো অপুও জাতীয় পর্যায়ের স্বীকৃতি অর্জন করুন?
শাকিব: (হাসি) এখন পর্যন্ত ভারতের শাহরুখ খান জাতীয় পুরস্কার পাননি। কিন্তু মাদাম তুসো মিউজিয়ামে তাঁর মোমের মূর্তি আছে। ভারতের নায়ক হিসেবে সবাই তাঁকে চেনেন। এখন অপু বিশ্বাসকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেতে কতগুলো সিনেমায় অভিনয় করতে হবে, তার কোনো হিসাব নেই। আজকে দেশে ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’ শাকিব, অপু আর আব্রাম। একজন সুপারস্টারের এর চেয়ে আর কী চাওয়ার আছে? তবে ভবিষ্যৎ তো আর কেউ জানে না। (প্রথম আলো)

নিউজ ডেস্ক
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১২: ২৩ পিএম, ১৬ এপ্রিল ২০১৭, রোববার
ডিএইচ

Leave a Reply